Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Corona

সংক্রমিত ৩৫ শতাংশ, তবু সেফ হোম নেই সোনারপুরে

এখনও পর্যন্ত সোনারপুর পুর এলাকায় ৮১২৬ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

  শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৩৬
Share: Save:

সোনারপুর শহর এলাকায় সংক্রমিত ১১৯৫ জন। তবুও সেফ হোম চালু হল না রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকায়। ফলে আতঙ্কিত দক্ষিণ ২৪ পরগনার সব থেকে বড় পুর এলাকার বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ।

অভিযোগ, পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে সেফ হোম করতে পারেননি পুর কর্তৃপক্ষ। সেফ হোম নিয়ে উদাসীন সোনারপুর ব্লক প্রশাসনও। তাই গ্রামীণ ও শহুরে এলাকা মিলিয়ে প্রায় ১৩০০ মানুষ আক্রান্ত হলেও সেফ হোম না থাকার জন্য বাসিন্দারা পুর প্রশাসনের উপরে ক্ষুব্ধ। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য বলছে, এই মুহূর্তে কলকাতায় পজ়িটিভের হার প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ। শহর সংলগ্ন এই রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকায় প্রতি একশো জনের কোভিড পরীক্ষায় পঁয়ত্রিশ জন পজ়িটিভ হচ্ছেন বলে জানা যাচ্ছে‌। যা চিন্তায় ফেলছে দফতরের আধিকারিকদের। কারণ এলাকায় সেফ হোম বা কোভিড হাসপাতাল না থাকায় আক্রান্তদের ছুটতে হচ্ছে কলকাতা, ক্যানিং বা বারুইপুরে।

গত বার সোনারপুরের ৩৫টি ওয়ার্ড এবং গ্রামীণের সব ক’টি পঞ্চায়েত এলাকায় অনেকেই করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন। তবে আক্টিভ রোগীর সংখ্যা কখনও পঞ্চাশের গণ্ডী পেরোয়নি। কিন্তু এ বছরের পরিস্থিতি ভয়াবহ। পুরসভা সূত্রের খবর, গত দশ দিনে নতুন করে সংক্রমিত প্রায় ছ’শো। বুধবার পর্যন্ত সোনারপুর শহর এলাকায় সংক্রমিত ১১৯৫ এবং গ্রামীণ এলাকায় ১০২ জন। এখনও পর্যন্ত সোনারপুর পুর এলাকায় ৮১২৬ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৬৮০৮ জন। মারা গিয়েছেন ১২৩ জন।

জয়নগর-মজিলপুর বা বারুইপুর পুর এলাকায় আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা রাজপুর-সোনারপুরের তুলনায় যথেষ্ট কম। যা কারণ হিসেবে এক পুর আধিকারিক বলছেন, “রাজপুর-সোনারপুরে প্রায় সাত লক্ষ মানুষের বাস। ঘিঞ্জি এলাকা। বাস, ট্রেন, মেট্রো সব চলছে, বাজার খোলা। তাই পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে।” গত ১৭ এপ্রিল সোনারপুর উত্তর ও দক্ষিণ বিধানসভা এলাকায় চতুর্থ দফায় নির্বাচন ছিল। তা মিটতেই হু হু করে বেড়েছে সংক্রমিত। পুরসভা জানাচ্ছে, সংক্রমণ এখন প্রতিটি ওয়ার্ডে ছড়িয়ে পড়েছে, তাই মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন করা যাচ্ছে না। দোকান-বাজার খোলা। এই পরিস্থিতিতে বেশির ভাগ আক্রান্তই বাড়িতে আছেন। তবে সেফ হোম তো নেই-ই সংক্রমিতদের ন্যূনতম পরিষেবাও মিলছে না বলে অভিযোগ করছেন সংক্রমিতেরা। সোনারপুরের কামরাবাদের বাসিন্দা অজয় মণ্ডল বলেন, “অনেক দিন আগেই পুর বোর্ড ভেঙে গিয়েছে। তাই কাউন্সিলরদের ক্ষমতা নেই। আর ভোট মিটতেই পাড়ার নেতারা দরজায় খিল দিয়েছেন। আমরা অসহায় অবস্থায় আছি।”

গত বছর পুরসভার মাতৃসদন হাসপাতালে সেফ হোম করা হয়েছিল। এ বার সেখানে কোভিড প্রতিষেধক দেওয়ার কর্মসূচি চলছে। এ দিকে, অন্যত্র সেফ হোম করতে হয় জায়গার অভাব কিংবা পরিকাঠামোর অভাব অথবা এলাকাবাসীর আপত্তিতে পুরসভা করতে পারছে না বলে দাবি।

স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার অভিযোগ, “অন্যান্য পুরসভা সেফ হোম করতে যতটা উদ্যোগী হয়েছে, রাজপুর-সোনারপুর তা হয়নি। এই পুরসভার গা ছাড়া মনোভাবের জন্যই এলাকায় সংক্রমিতেরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর তাঁদের থেকে দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে।”

যদিও এই অভিযোগ নস্যাৎ করছেন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার পুর প্রশাসক পল্লব দাস। তাঁর দাবি, “জায়গার সমস্যা থাকা সত্ত্বেও কামালগাজি স্পোর্টস কমপ্লেক্সের কাছে একটি ব্যাঙ্কোয়েট হল আমরা স্বাস্থ্য দফতরকে দেখিয়েছি। ওখানে ৫০ শয্যার সেফ হোম করা যাবে। সেটাই চালু করুক স্বাস্থ্য দফতর।”

বারুইপুরের মহকুমাশাসক সুমন পোদ্দারের আশ্বাস, “সোনারপুরের কামালগাজিতে একটি পঞ্চাশ শয্যার সেফ হোম করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করছি, আগামী দু’-তিন দিনের মধ্যে সেটি চালু করা যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Covid Death coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE