কাউন্সিলর সুজিত মণ্ডল
কখনও দুর্ব্যবহার, নিয়মভঙ্গের অভিযোগ, কখনও আবার রাস্তা দখল করে স্ট্যান্ড- অটোচালকদের বিরুদ্ধে এ সব অশান্তির অভিযোগ লেগেই থাকে বছরভর। এ বার সেই চালকদের একাংশের দৌরাত্ম্যের প্রতিবাদ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়লেন শাসক দলেরই এক কাউন্সিলর।
রবিবার সকালে ঘটৈানটি ঘটেছে বাগুইআটি জ্যাংড়ায়। স্থানীয় ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের সুজিত মণ্ডল আহত হয়ে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হাতিয়ারা-জ্যাংড়া এলাকায় বড় রাস্তার উপরেই বাগুইআটিগামী অটোগুলি দাঁড় করিয়ে রেখে যাত্রী তোলেন চালকেরা। এর ফলে ওই রাস্তায় যানজট লেগেই থাকে। এর আগে বাসিন্দারা প্রতিবাদ জানালেও কাজের কাজ হয়নি। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ওই স্ট্যান্ডেরই ইউনিয়নের সভাপতি সুজিতবাবু।
স্থানীয়েরা জানান, এ দিন যানজট দেখে নিজেই যান-চলাচল স্বাভাবিক করতে এগিয়ে যান সুজিতবাবু। অটো রাস্তা থেকে সরিয়ে নিতে চালকদের কাছে আবেদনও জানান তিনি। তাই নিয়ে অটোচালকদের একাংশের সঙ্গে কার্যত বচসা শুরু হয়ে যায় তাঁর। তাতেও কাজ না হওয়ায় কাউন্সিলর নিজেই অটো সরাতে যান। তখনই একটি অটোর কাচ ভেঙে গিয়ে কাউন্সিলরের ডান হাতের শিরা কেটে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা এবং অটোচালকদের একাংশই দ্রুত কাউন্সিলরকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান, পরে তাঁকে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তবে তাঁর হাতে অস্ত্রোপচার করা হতে পারে।
হাসপাতালে বসে সুজিতবাবু বলেন, ‘‘ওই রাস্তার উপরে অটোগুলি দাঁড়িয়ে থাকায় যানজট হচ্ছে। তাই রাস্তা ছেড়ে অটো দাঁড় করানোর আবেদন করেছিলাম চালকদের কাছে। তাঁরা প্রথমে কথা না শুনলেও স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীরা একযোগে প্রতিবাদ করায় পরে অটোগুলি সরিয়ে নেন।’’
ঘটনাচক্রে ওই এলাকার অটো ইউনিয়নের রাশ শাসক দলের হাতেই। উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল সমর্থিত অটো ইউনিয়নের সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের দাবি, ‘‘কোনও গোলমাল হয়নি। চালকদের বারবার শৃঙ্খলাবদ্ধ হওয়ার আবেদন করা হয়েছে। কেউ কেউ শুনছেন না। তাই নিয়ে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’’
তবে চালকদের একাংশের বক্তব্য, ঘিঞ্জি এলাকার মধ্যে সরু রাস্তা। পাশে বেশি জায়গা নেই। ফলে রাস্তার উপরে অটো রাখতে হয়। এই সমস্যা অবশ্য শুধু একটি জায়গাতেই নয়, বাগুইআটি-সহ বিধাননগর পুর নিগমের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ, অটো চলাচল নিয়ে কোনও পরিকল্পনাই করে না প্রশাসন। তার ফল ভুগতে হয় সাধারণ মানুষকে।
বিধাননগর পুর নিগমের মেয়র সব্যসাচী দত্ত সেই অভিযোগ সমর্থন করে জানান, বিগত দিনে ওই এলাকায় রাস্তাগুলিতে যত্রতত্র দখলদারি হয়েছে। তৎকালীন পুরসভাও কোনও পদক্ষেপ করেনি। যার ফল ভুগতে হচ্ছে এখন। তিনি বলেন, ‘‘অটোর বিষয়টি আমাদের এক্রিয়ারভুক্ত না হলেও মানুষের স্বার্থে পদক্ষেপ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে রাজ্য পরিবহণ দফতরের কাছে অটো রুট, স্ট্যান্ড নিয়ে পরিকল্পনা করে গাইডলাইন পাঠানোর আবেদন জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy