Advertisement
E-Paper

নকশা বদলে রাজ্যের মত শুনতে নারাজ কোর্ট

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের নকশা কী হবে, তাতে রাজ্য সরকার কোনও মত দিতে পারে না বলে মন্তব্য করল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানির সময়ে বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া মন্তব্য করেন, ২০১৩-র ১৬ জুলাই প্রকল্পের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছে রাজ্য। সে ক্ষেত্রে প্রকল্পের নকশার ব্যাপারে রাজ্যের কোনও বক্তব্য থাকতে পারে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৪ ০২:৪৭

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের নকশা কী হবে, তাতে রাজ্য সরকার কোনও মত দিতে পারে না বলে মন্তব্য করল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানির সময়ে বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া মন্তব্য করেন, ২০১৩-র ১৬ জুলাই প্রকল্পের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছে রাজ্য। সে ক্ষেত্রে প্রকল্পের নকশার ব্যাপারে রাজ্যের কোনও বক্তব্য থাকতে পারে না।

হাইকোর্টের নির্দেশে গত বছরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্প নিয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটিও গড়া হয়েছে। সেই কমিটিও কিন্তু বিকল্প নকশার ব্যাপারে মাথা ঘামায়নি। তবে রাজ্য এ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে কেন, বিচারপতি তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, এই প্রকল্পের মালিকানা এখন কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রক এবং কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের। তাই প্রকল্পের নকশার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে ওই দুই মন্ত্রকই।

তা হলে রাজ্য সরকারের কি কোনও কাজ নেই এই প্রকল্পে? বিচারপতি পাথেরিয়া বলেন, প্রকল্প রূপায়ণের জন্য হকার সরানো, যান-নিয়ন্ত্রণ, বিদ্যুতের লাইন সরানোর মতো কাজে সহযোগিতা করবে রাজ্য।

ইস্ট-ওয়েস্ট প্রকল্প কোন পথে যাবে, তা নিয়ে অনেক দিন ধরেই জটিলতা তৈরি হয়েছে। রাজ্য সরকার ও মেট্রো কর্তৃপক্ষের মধ্যে নকশা বদল নিয়ে মতানৈক্যের জেরে দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ হয়ে আছে। এর পরেই গত মে মাসে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন।

এ দিন ওই মামলার শুনানিতে রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর গতিপথের বিকল্প একটি নকশা আদালতে পেশ করেন। কিন্তু তাতে কোনও আধিকারিকের সই ছিল না। সই নেই কেন, তা জানতে চান বিচারপতি। রেল ও কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকও জানায় যে, তারা এই নকশার কথা জানে না। বিচারপতি পাথেরিয়ার নির্দেশ, রাজ্যের পেশ করা বিকল্প নকশা তারা গ্রহণ করবে কি না, রেল ও কেন্দ্রীয় নগোরোন্নায়ন মন্ত্রক আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানাক। পরিবর্তনে খরচ বাড়লে তারা বহন করতে পারবে কি না, তা-ও হলফনামায় জানাতে হবে।

সেন্ট্রাল স্টেশনকে শহরের দুই মেট্রোর জংশন স্টেশন করতে চান মেট্রো কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পের মূল নকশায় বদল এলে খরচ এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যাবে বলে কোর্টে জানিয়েছেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বিকল্প নকশায় রাজ্য জানিয়েছে, কলকাতা মেট্রো ও ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জংশন হবে এসপ্ল্যানেডে। রাজ্যের বক্তব্য, নকশা বদলালে অনেক বেশি মানুষের তাতে সুবিধে হবে। লন্ডনের পিকাডিলি মেট্রো স্টেশনের উদাহরণ পেশ করে গত ২১ অগস্ট বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া আদালতে প্রশ্ন তুলেছিলেন, ওই স্টেশনের মতো সেন্ট্রাল স্টেশনকে জংশন করলে অসুবিধে কোথায়?

এ দিন বিচারপতি পাথেরিয়া ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষ এবং প্রকল্পের ঠিকাদার সংস্থাকেও হলফনামা জমা দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর।

এ দিকে, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর যাত্রাপথ পরিবর্তনের এক্তিয়ার রাজ্য সরকারের নেই বলে হাইকোর্ট যে মন্তব্য করেছে, তাকে স্বাগত জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, “রেলের প্রাক্তন এক মন্ত্রী হিসেবে আমি মনে করি, যে কোনও শহরে মেট্রো নগরোন্নয়ন দফতরের হাতেই থাকা উচিত। আদালত কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলে থাকলে তার চেয়ে ভাল কিছু হয় না।” অধীর বলেন, “রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই পদ্ধতিটা পাল্টে সবটা রেলকে দিয়ে করাতে চাইলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় নোট দিয়ে আলাদা করে পাশ করালেন। তখন রাজ্যে বাম সরকার। পাছে তাদের কৃতিত্ব হয়ে যায়, তাই সরিয়ে নিলেন। রেল দায়িত্ব নিতেই প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হল।” অধীরের অভিযোগ, রাজ্যের হস্তক্ষেপে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ‘রুট অ্যালাইনমেন্ট’ পরিবর্তন করায় জাপানি সংস্থা জাইকা বিনিয়োগে বেঁকে বসেছিল। কারণ, খরচ বাড়ার আশঙ্কা ছিল।

east west metro new route high court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy