অনুব্রতকে হেফাজতে নিতে মরিয়া ইডি। তৃণমূল নেতাকে নিয়ে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের বিচারকের বাড়িতে গেল তারা। —ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডলকে নিজেদের হেফাজতে পেতে মরিয়া এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বুধবার হোলি উপলক্ষে আদালত ছুটি। তাই সময় নষ্ট নয়। মঙ্গলবার গভীর রাতেই রাউস অ্যাভেনিউ কোর্টের বিচারক রাকেশ কুমারের বাড়িতেই কেষ্টকে নিয়ে চলে যান তাঁরা। সেখানে থাকছেন কেষ্টর আইনজীবী। এ বার সশরীরে হাজির অনুব্রত। রাত ১টার পর সওয়াল শুরু করে দু’পক্ষ।
যদিও বিচারকের বাড়ি খুঁজতে গিয়ে বেগ পায় ইডি। একের পর এক বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ায় কেষ্টকে নিয়ে একটি লাল রঙের গাড়ি। কিন্তু তার কোনওটাই বিচারকের বাড়ি নয়। অবশেষে রাত ১টা ৫ মিনিট নাগাদ বিচারকের বাড়ি খুঁজে পাওয়া যায়। গাড়ির কাচ দিয়ে এক ঝলক দেখতে পাওয়া যায় বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতিকে। সবুজ ফতুয়ায় কেষ্টর চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ।
টানা টানাপোড়েনের পর সোমবার আসানসোলের বিশেষ সংশোধনাগার থেকে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হয় অনুব্রতকে। জোকার ইএসআই হাসপাতালে তৃণমূল নেতার স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়। যেমনটা কলকাতা হাই কোর্ট গত শনিবার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পর কেষ্টকে নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে দিল্লি উড়ে যায় বিমান। রাত ৯টা নাগাদ দিল্লি পৌঁছেই অসুস্থ হয়ে পড়েন কেষ্ট। সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির করানো হয় অনুব্রতকে।
রাত ১১টা ২০ মিনিট নাগাদ রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের বিশেষ সিবিআই আদালতে গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রতের শুনানি শুরু হয়। কিন্তু আধঘণ্টা শুনানি চলতে না চলতেই তা স্থগিত হয়ে যায়। সিদ্ধান্ত হয়, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এবং অনুব্রত মণ্ডল— দু’পক্ষই বিচারক রাকেশ কুমারের বাড়িতে যাবে।
বিচারক রাকেশ কুমারের এজলাসে শুনানিতে ইডির আইনজীবী তাঁর সওয়াল শুরু করেন। প্রথমেই অনুব্রতকে ১৪ দিনের জন্য বিচারবিভাগীয় হেফাজতে চায় ইডি। পাল্টা অনুব্রতের আইনজীবী তাঁর মক্কেলের সারা দিনের ধকলের প্রসঙ্গ তোলেন। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, এমন গুরুত্বপূর্ণ মামলা ভার্চুয়ালি শোনা উচিত নয়। দু’পক্ষের সওয়ালে আধঘণ্টার একটু বেশি সময়ের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় শুনানি। অগত্যা অনুব্রতকে নিয়ে যাওয়া হয় বিচারকের বাড়িতে।
গরু পাচার মামলায় গত অগস্ট মাসে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন অনুব্রত। তার আগে সিবিআইয়ের হাতেই গ্রেফতার হয়েছিলেন তাঁর দেহরক্ষী সহগল হোসেন। সহগলকে পরে ইডি নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল। একই ভাবে গত বছরের নভেম্বরে অনুব্রকেও সিবিআইয়ের কাছ থেকে নিজেদের হেফাজতে নেয় ইডি। সহগলও আসানসোল সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাঁকে দিল্লি নিয়েও যাওয়া হয়। এখন তিনি তিহাড় জেলে। ইডির হাতে অনুব্রতের গ্রেফতারির পর অনুব্রতকেও দিল্লি নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি।
দিল্লিযাত্রা এড়াতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূল নেতা। কিন্তু গত শনিবার কলকাতা হাই কোর্ট সেই আর্জি করে জানিয়ে দেয় ইডি চাইলে অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যেতে পারবে। তা ছাড়াও ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয় অনুব্রতকে। ঘটনাক্রমে মঙ্গলবার কেষ্টকে ইডি নিয়ে গিয়েছে দিল্লিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy