Advertisement
E-Paper

স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে বিমাতৃসুলভ মেয়র, দাবি বাম কাউন্সিলরের

টাকার অভাবে নিজের ওয়ার্ডে পুরসভার নিজস্ব জমিতে স্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র করাতে পারলেন না সিপিএম কাউন্সিলর অমল মিত্র। ১৯৮৫ সাল থেকে টানা ৩০ বছর পুরসভার কাউন্সিলর অমলবাবু এ বার ভোটে প্রার্থী নন। কুঁদঘাটে ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডে তিন দশকের কাউন্সিলরের একটাই আক্ষেপ, ‘‘মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় টাকার অনুমোদন দিলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটা করে যেতে পারতাম।’’ প্রস্তুতি থেকেও টাকার অনুমোদন না পেয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র হয়নি, মানছে পুর-স্বাস্থ্য দফতরও। মেয়র যদিও বলেন, বিষয়টি জানা নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৫ ০০:২৩

টাকার অভাবে নিজের ওয়ার্ডে পুরসভার নিজস্ব জমিতে স্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র করাতে পারলেন না সিপিএম কাউন্সিলর অমল মিত্র। ১৯৮৫ সাল থেকে টানা ৩০ বছর পুরসভার কাউন্সিলর অমলবাবু এ বার ভোটে প্রার্থী নন। কুঁদঘাটে ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডে তিন দশকের কাউন্সিলরের একটাই আক্ষেপ, ‘‘মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় টাকার অনুমোদন দিলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটা করে যেতে পারতাম।’’ প্রস্তুতি থেকেও টাকার অনুমোদন না পেয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র হয়নি, মানছে পুর-স্বাস্থ্য দফতরও। মেয়র যদিও বলেন, বিষয়টি জানা নেই।

৩০ বছরের কাউন্সিলর হয়েও নিজেদের জমানায় ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র করেননি কেন? অমলবাবুর জবাব, ‘‘২০০৭-০৮ সালে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির সূচনা করে বাম বোর্ডই। তখন পুরসভার হাতে জায়গা না থাকায় স্থানীয় ক্লাবেই করতে হয়েছিল।’’ তিনি জানান, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য মেয়র থাকাকালীন ওয়ার্ডে ৬৭ কাঠা জায়গা কেনে পুরসভা। ঠিক হয়, কমিউনিটি সেন্টার, পার্ক, স্বাস্থ্যকেন্দ্র হবে। পুর-বোর্ড বদল হওয়ায় করা যায়নি।

পুরভোটের মুখে অমলবাবুর এই অভিযোগ প্রচারে বাড়তি ‘অক্সিজেন’ জোগাচ্ছে সিপিএমকে। স্থানীয় কর্মীদের বক্তব্য, ‘‘শহর জুড়ে উন্নয়নের ফানুস ওড়াচ্ছে তৃণমূল। ক্লাবগুলোকে কোটি কোটি টাকা বিলোচ্ছে। অথচ এখানে স্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র করতে মাত্র ১৫ লক্ষ টাকার ফাইল মঞ্জুর করেননি মেয়র।’’ মেয়র অবশ্য বলেন, ‘‘এমন ফাইলের কথা জানা নেই। কলকাতার প্রতি ওয়ার্ডে যেখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্র সাজানো হচ্ছে, সেখানে একটা ওয়ার্ড বাদ রাখার কোনও প্রবণতা আমাদের নেই।’’

কলকাতার সংযোজিত এলাকার কুঁদঘাটে ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর অমলবাবু বিদায়ী পুরসভায় বিরোধী দলের মুখ্য সচেতকও ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ওয়ার্ডে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। দীর্ঘকাল থেকে সেটি গুরুচরণ নস্কর রোডে একটি ক্লাবে চলে।’’ তিনি জানান, ক্লাবের ঘর ছোট হওয়ায় অসুবিধা হচ্ছিল। তাই ওয়ার্ডেই পুরসভার নিজস্ব জায়গায় স্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র করাতে উদ্যোগী হই। ২০১৩ সালে পুর-প্রশাসনকে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানানো হয়। কিন্তু আর্থিক সহায়তা না পেয়ে আজও ওই ক্লাবেই কোনও রকমে চলছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র। অমলবাবুর অভিযোগ, ‘‘মেয়রের ঘরেই বহুদিন ধরে ফাইলটি পড়ে রয়েছে।’’

বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরও। এক আধিকারিক জানান, জায়গাটি দেখে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে মাটিও পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু প্রস্তুতি থাকলেও আর্থিক অনুমোদন না পেলে তাঁদের কিছু করার নেই।

অমলবাবুর বক্তব্য, ‘‘ওরা বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, কলকাতার ১৪১ ওয়ার্ডেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র করেছে। মেয়র নিজেও সর্বত্র বলে বেড়াচ্ছেন পানীয় জল, স্বাস্থ্য সবেতেই সফল তাঁর বোর্ড। এই তো তার নমুনা!’’ এর আগে কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণেও তৃণমূল বোর্ড বিমাতৃসুলভ আচরণ করেছে, অভিযোগ অমলবাবুর। এর জন্য দুই সিপিএম সাংসদের তহবিলের টাকাও জোগাড় হয়। বাকি টাকার জন্য মেয়রের কাছে দরবারও করেও লাভ হয়নি বলে তাঁর দাবি।

অমলবাবুর বক্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই তৃণমূল বোর্ডের মেয়র আমার ওয়ার্ডে টাকা দেননি।’’ মেয়রের জবাব, ‘‘অমলবাবুর রাজনৈতিক অভিসন্ধির কথা আমরাও জানি। উনি বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক, না ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, সন্দেহ হয়।’’ শোভনবাবুর দাবি, ২০০২-০৩ সালে বাঁশদ্রোণী বুস্টার পাম্পিং স্টেশনের পাইপলাইন বসানোর সময়ে বাধা দেন অমলবাবু। তাঁর দলের তৎকালীন রাজ্য সম্পাদককে বিষয়টি জানিয়ে পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা হয়েছিল। যা উড়িয়ে দিয়ে অমলবাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘ওই পাম্পিং স্টেশনের মাস্টার প্ল্যান তো আমারই।’’

cpm councillor alleges stepmotherly behaviour amal mitra Sovan Chatterjee sovan chattopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy