বিপজ্জনক: সেতু দিয়ে ঝুঁকির বাসযাত্রা। ছবি: শৌভিক দে
সেতুর রেলিংয়ে মাঝেমধ্যে রং করা হয়। ফুটপাতও মেরামত হয়। কিন্তু সেতু যার উপরে দাঁড়িয়ে, সেই জরাজীর্ণ স্তম্ভগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ কখনও হয় না বলেই অভিযোগ। ফলে প্রায়ই সেই স্তম্ভ থেকে চাঙড় খসে পড়ে। এমনকি সেতুর স্তম্ভে দেখা দিয়েছে ফাটলও। সেতুর উদ্বোধনের পরে কেটে গিয়েছে তিরিশ বছরেরও বেশি। স্থানীয়দের অভিযোগ, গীর্ঘ সময় ধরে সেতুটির স্তম্ভ রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। ভারী গাড়ি গেলে মনে হয় এই না ভেঙে পড়ে সেতু।
ছোটো হলেও স্থানীয়দের কাছে এই সেতুর গুরুত্ব কিন্তু কিছু কম নয়। দমদম পার্কের ভিআইপি রোডের মোড় থেকে যশোর রোড যেতে খালের উপরের এই সেতু পেরিয়েই যেতে হয়। ছোটো গাড়ি, ট্রাক, মালবাহী গাড়ির পাশাপাশি স্কুলবাসও এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করে। বাসিন্দাদের প্রশ্ন, শুধু রেলিং রং করে আর ফুটপাত মেরামতি করে কী হচ্ছে? সেতু ভেঙে না পড়া পর্যন্ত কী টনক নড়বে না? স্থানীয় এক বাসিন্দার বক্তব্য, ‘‘এলাকার পড়ুয়াদের নিতে স্কুলবাসগুলি সকালে ভিআইপি রোড ধরে এই সেতু দিয়েই দমদম পার্কে ঢোকে। আবার অনেক স্কুল বাস যশোর রোড ধরে এসে দমদম পার্কের পড়ুয়াদের তুলে ভিআইপি রোড ধরে চলে যায়। সেতুর উপর দিয়ে ওই গাড়িগুলি যখন যায় সত্যিই খুব ভয় হয়।’’ পিন্টু মণ্ডল নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সেতুর উপরে সব থেকে বেশি চাপ পড়ে পুজোর সময়ে। দমদম পার্কে অনেকগুলো বড় পুজো হয়। সে সব দেখতে এই সেতু পেরিয়ে দর্শনার্থীদের আসতে হয়।’’
গত কয়েক বছরে দক্ষিণ দমদম পুরসভার বেশ কিছু এলাকায় সৌন্দর্যায়ন হয়েছে। শীতকাল হতেই শুরু হয়ে যায় একের পর এক মেলা এবং উৎসব। অথচ পুর এলাকায় নিয়মিত ব্যবহার হওয়া একটি সেতুর রক্ষণাবেক্ষণেই শুধু নজর নেই! — এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের। মাঝেরহাটে সেতু ভাঙার পরবর্তী সময়েও জরাজীর্ণ সেতুটি কেন সারাই করা হল না? প্রশ্ন তাঁদের। এক প্রবীণ বাসিন্দার বক্তব্য, ‘‘মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে সেতু বিশেষজ্ঞেরা শহরের বড় সেতুগুলো ঘুরে দেখলেন। সে সব নিয়ে পরামর্শও দিলেন তাঁরা। অথচ শহরে বহু ছোট ছোট সেতু রয়েছে। যেগুলো স্থানীয় ভাবে যথেষ্ট ব্যবহার করেন মানুষ। সেগুলোর দিকে কেন নজর দিচ্ছে না?’’
বিপজ্জনক: ফাটল ধরা সেই অংশ। ছবি: শৌভিক দে
দমদম পার্কের এই সেতুর দ্রুত মেরামতির প্রয়োজন আছে বলে স্বীকার করে নিচ্ছেন স্থানীয় কাউন্সিলর তৃণমূলের সমীর চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই সেতু। সারা বছর ধরে প্রচুর লোক যাতায়াত করেন এই সেতু দিয়ে। আমরা পুরসভাকে চিঠি লিখে দ্রুত মেরামতির কথা বলেছি।’’ অন্য দিকে, দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘সেতুটি সেচ দফতর দেখভাল করে। ওদের সেতুটি পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy