বাজির শব্দে প্যানিক অ্যাটাক হতে পারে। নিজস্ব ছবি
শব্দবাজির কারণে কানের বিভিন্ন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুধুমাত্র শোনার সমস্যাই নয়, শরীরের ভারসাম্যও বিঘ্নিত হয়। ইতিমধ্যেই যাঁদের কানে বা শরীরে ভারসাম্যের সমস্যা রয়েছে, কালীপুজো-দীপাবলির পরে সেই সমস্যা বহু গুণে বেড়ে যায়। যাঁরা হয়তো আগের ধাক্কা সামলে সামান্য সুস্থ হয়েছেন, তাঁদের ফের সমস্যা শুরু হয়। ফের প্রথম থেকে চিকিৎসা শুরু করতে হয়।
কানের তিনটি অংশ। বহিঃকর্ণ, মধ্যকর্ণ ও অন্তঃকর্ণ। কানের যে অংশ চোখে দেখা যায় সেটাই বহিঃকর্ণ। শব্দবাজির জন্যে বহিঃকর্ণের খুব একটা ক্ষতি হয় না। যদি না একেবারে কানের কাছে তা ফাটে। এই ধরনের ক্ষতিকে বলে ‘ব্লাস্ট ইনজুরি’। যুদ্ধ ক্ষেত্রে সেনাদের এ রকম ‘ব্লাস্ট ইনজুরি’ হয়। এর পরেই হল মধ্যকর্ণ। কানের পর্দার ভিতরে তিনটি ছোট ছোট হাড় থাকে। কোনও শব্দতরঙ্গকে ভিতরের কান পর্যন্ত নিয়ে যাওয়াটাই মধ্যকর্ণের কাজ। এই জায়গাটা হাওয়া ভরা থাকে। এখানে কোনও আওয়াজ জোরে এসে পড়লে, সেই পর্দাটা ফেটে যায়। তবু বলা যায় যে, পর্দা ফাটা মন্দের ভাল। কারণ, তাতে অন্তঃকর্ণের কোনও ক্ষতি সে ভাবে হয় না। কিন্তু পর্দা যদি না ফাটে, তা হলে বাতাসের সেই তীব্র চাপ ভিতরে চলে যায়। তখন ককলিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ককলিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হলে কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তখন কানে একটানা ভোঁ ভোঁ আওয়াজ হতে পারে। আবার শ্রবণশক্তি স্থায়ী ভাবেও চলে যেতে পারে। ককলিয়ার পাশেই রয়েছে সেমি সার্কুলার ক্যানাল। এই অংশ শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে। এই জায়গাটায় শব্দ এসে যদি আঘাত করে, তা হলে মাথা ঘুরতে থাকে। শরীরের ভারসাম্যই বিঘ্নিত হয়ে পড়ে।
•বহিঃকর্ণ ‘ব্লাস্ট ইনজুরি’ • মধ্যকর্ণ-পর্দা ফেটে যায়, সংক্রমণ হতে পারে • অন্তঃকর্ণ-স্থায়ী বধিরতা
প্রতি বছর কালীপুজো, দীপাবলির পরে এই ধরনের রোগীরা চেম্বারে আসেন। অনেককে ভর্তি রেখে চিকিৎসা চালাতে হয়। শব্দবাজি বন্ধ না হলে এর হাত থেকে কোনও নিস্তার নেই।
(লেখক ইএনটি চিকিৎসক)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy