Advertisement
E-Paper

কোথায় পাব তারে, প্রশ্ন নোটে নাকাল শহরের

একটু খুচরো কোথায় পাই বলতে পারেন? এই যেমন ১০০ টাকা, ৫০০ টাকার নোট। মুখে মুখে একই প্রশ্ন। একেই টাকার জোগান কম। যেটুকু বা জুটছে, তা-ও আবার ২০০০-এর নোট। ক্রমেই যেন ব্যাঙ্কে ১০০-র নোটের জোগান কমে বাড়ছে গোলাপি নোটের সংখ্যা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১৫
টাকা না থাক, মিলবে জল। শুক্রবার, গিরিশ পার্ক এলাকায় এক ব্যাঙ্কের লাইনে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

টাকা না থাক, মিলবে জল। শুক্রবার, গিরিশ পার্ক এলাকায় এক ব্যাঙ্কের লাইনে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

একটু খুচরো কোথায় পাই বলতে পারেন? এই যেমন ১০০ টাকা, ৫০০ টাকার নোট। মুখে মুখে একই প্রশ্ন।

একেই টাকার জোগান কম। যেটুকু বা জুটছে, তা-ও আবার ২০০০-এর নোট। ক্রমেই যেন ব্যাঙ্কে ১০০-র নোটের জোগান কমে বাড়ছে গোলাপি নোটের সংখ্যা। আপাতত যার অপর নাম দুশ্চিন্তা। আর ৫০০-র নোট? তার দেখা পাওয়া এবং অতি কৃপণের মানিব্যাগ দেখা যেন একই ব্যাপার।

নোট বাতিলের পরে দিন কুড়ি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের যোধপুর পার্ক শাখায় কারেন্সি চেস্ট থেকে দিনে নগদ ৪০ লক্ষ টাকা ঢুকলে তার ৩০ লক্ষ ছিল ২০০০-এর নোটে, বাকি ১০ লক্ষ ১০০-য়। শুক্রবার দেখা গেল, ৪০ লক্ষের মধ্যে ৩৮ লক্ষই ২০০০-এর নোটে। মোটে ২ লক্ষ এসেছে ১০০-র নোটে। কারেন্সি চেস্ট বা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে সরাসরি আসা ৫০০-র নোটের দেখা এখনও পায়নি ওই ব্যাঙ্ক। সেখানকার প্রধান কোষাধ্যক্ষ রাজু দাস বলেন, ‘‘ভুবনেশ্বর শাখা থেকে গত সপ্তাহে ৪ লক্ষ টাকা এসেছিল নতুন ৫০০-র নোটে। আর কিছু জমা দিয়েছেন কয়েক জন গ্রাহক। ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশে আমাদের বিভিন্ন শাখা জানাচ্ছে, সেখানে দিব্যি ৫০০-র নতুন নোটের জোগান আছে।’’

একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শ্যামবাজার শাখায় নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে টাকার জোগানই কমে গিয়েছে, জানাচ্ছেন এক কর্তা। তাঁর কথায়, ‘‘এখানে রোজ প্রায় ৩০ লক্ষ নগদ দরকার। কিন্তু কারেন্সি চেস্ট অত টাকা পাঠাতে পারছে না। যা আসছে, তার ৭০ শতাংশই ২০০০-এর নোট। বাকি ৩০ শতাংশ ৫০ ও ১০ টাকার নোট। ১০০-র নোট পাচ্ছিই না।’’

অধিকাংশ ব্যাঙ্ক জানাচ্ছে, ৫০০ টাকার নতুন নোটের জোগান খুবই কম। একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের বিধান সরণি শাখার ম্যানেজার এ দিন জানান, ৫০০ টাকার নতুন নোট বাজারে আসার পরে মাত্র এক বার কারেন্সি চেস্ট থেকে তাঁদের ব্যাঙ্কে এসেছে। ১০০ টাকার নোটের জোগানও দিনকে দিন কমছে। কিন্তু নতুন ৫০০ ও ১০০ টাকার নোটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কে ২০০০ টাকার নোট আছে। কিন্তু বহু গ্রাহক সেই টাকা না নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। কেউ কেউ জিজ্ঞেস করছেন, ১০০ বা ৫০০-র নোট কখন আসবে?’’

আর এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের হাতিবাগান শাখা ও একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের টালিগঞ্জ শাখায় চালু হয়েছে টোকেন ব্যবস্থা। টালিগঞ্জে ওই ব্যাঙ্কের এক কর্তা জানান, রোজ প্রায় ৭৫টি টোকেন বিলি করা হচ্ছে। ওই টোকেন নম্বর নিয়ে বিকেল ৩টের মধ্যে ব্যাঙ্কে এলে টাকা পাবেন গ্রাহকেরা। সর্বাধিক ২৪ হাজার টাকাই দেওয়া হবে। কিন্তু যাঁর কাছে টোকেন নেই, তাঁর টাকা পাওয়ার আশা খুব কম।

শুক্রবার দুপুরে ওই ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে যান এক প্রবীণ নাগরিক। বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যেই সেখানে ৭৫টি টোকেন দেওয়া হয়ে গিয়েছে। ব্যাঙ্কের এক মহিলা কর্মীর কাতর অনুরোধ, ‘‘দয়া করে কাল সকাল সকাল এসে টোকেন নিন।’’ প্রবীণের প্রশ্ন, ‘‘আজ কি টাকা পাব না?’’ ওই মহিলা বলেন, ‘‘আশা না করাই ভাল। ৭৫ জনকে দেওয়ার পরে নগদ বোধহয় থাকবে না।’’ হাতিবাগানের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেও একই কায়দায় টাকা দেওয়া হচ্ছে। সেখানকার ম্যানেজার অবশ্য বলছেন, ‘‘টোকেন হাতে থাকলে টাকা মিলবেই। তবে ২৪ হাজার পাওয়া যাবে কি না, তার নিশ্চয়তা নেই।’’

1000 notes 500 notes
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy