E-Paper

উত্তর থেকে দক্ষিণে বাড়ছে পুজোর বাজারের ভিড়

একে আর জি করে চিকিৎসক তরুণীর খুন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে শহর জুড়ে আন্দোলন এবং নিম্নচাপের বৃষ্টি— দুইয়ের প্রভাবে গত কয়েক সপ্তাহ শহরের বাজারগুলিতে পুজো পুজো ভাব নজরে পড়েনি।

চন্দন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:১৩
জনসমাগম: দুর্গাপুজোর আগে কেনাকাটার ভিড়। রবিবার, নিউ মার্কেটে।

জনসমাগম: দুর্গাপুজোর আগে কেনাকাটার ভিড়। রবিবার, নিউ মার্কেটে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

নিউ মার্কেটের সামনের রাস্তায় শুধুই কালো মাথার ভিড়। জওহরলাল নেহরু রোড থেকে নিউ মার্কেট— প্রায় একশো মিটার রাস্তা পেরোতেইঘেমে-নেয়ে নাস্তানাবুদ হওয়ারঅবস্থা। যান চলাচল সচল রাখতে ওই তল্লাটের রাস্তায় ঢোকার মুখে পুলিশের তরফে বুম ব্যারিয়ারের ব্যবস্থা করা হলেও তা ফেলতে কার্যত নাকানি-চোবানি খেতে হচ্ছে পুলিশকর্মীদের। বিকেলে এই কাজে ব্যস্ত এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘তা হলে পুজোর বাজার শুরু হল!’’

একে আর জি করে চিকিৎসক তরুণীর খুন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে শহর জুড়ে আন্দোলন এবং নিম্নচাপের বৃষ্টি— দুইয়ের প্রভাবে গত কয়েক সপ্তাহ শহরের বাজারগুলিতে পুজো পুজো ভাব নজরে পড়েনি। এ বার মহালয়ার দশ দিন আগে ফিরল শহরের পুজোর বাজারের রেশ। দক্ষিণের গড়িয়াহাট আর উত্তরের হাতিবাগানের ভিড় তেমনই জানান দিচ্ছে। যদিও এ দিন দুপুর থেকে এগিয়ে থাকল নিউ মার্কেট।

রবিবার দিনভর চড়া রোদ মাথায় নিয়েই দুপুর থেকে বলতে গেলে পা ফেলার মতো জায়গা ছিল না নিউ মার্কেটে। বিকেল হতেই এই ভিড়ই আরও কয়েক গুণ বেড়ে যায়।নিউ মার্কেট চত্বরের ভিড়ে ক্রেতা সামলাতে ব্যস্ত রাকেশ মণ্ডল চিৎকার করে বললেন, ‘‘গত কয়েক সপ্তাহ পরিস্থিতি দেখে কপালে হাত পড়েছিল। পুজোর আগে পর্যন্ত আজকের মতো ভিড় থাকলে তবুও রক্ষে।’’ কিছুটা দূরে নিউ মার্কেটের ঠিক সামনের রাস্তায় ভিড় সামলাতে পুলিশকেও বেগ পেতে হয় এ দিন। এক পুলিশ বললেন, ‘‘ভিড়ে পকেটমারি যাতে না হয়, সে দিকে নজর দেওয়ার নির্দেশ এসেছে। কিন্তু ক’টা লোকের উপরে নজর রাখব!’’

সকালে কিছুটা ফাঁকা থাকলেও দুপুর গড়াতেই ছবি বদলেছে হাতিবাগানে। সন্ধ্যার পর আরও ভিড় বাড়ে বাজারে। ভিড় ঠেলে ছেলে কোলে বেরিয়ে আসছিলেন এক মহিলা। বললেন, ‘‘বাজারে ঢোকা থেকে ছেলে যে কান্না জুড়েছে, থামছেই না। এই ভিড়ে বার বার এমন ঢোকা-বেরোনো সম্ভব?’’ রাস্তা পেরিয়ে উল্টো ফুটেও ভিড়ের একই ছবি। ব্যবসায়ীদের ‘কম দাম, কম দাম’ চিৎকারে তখন কান ফাটার অবস্থা। এক ব্যবসায়ী বললেন, ‘‘শনিবার বাজারে ক্রেতা দেখে আজ বেশি করে জিনিস এনেছি। রাত পর্যন্ত থাকব। শেষ না হলে ফিরব না।’’

গড়িয়াহাটে দেখা গেল, কেনাকাটার চাপে গাড়ির জট গোটা এলাকায়। দুপুরের পর থেকে সেতুর নীচের পার্কিংয়ের জায়গাও উধাও। রাস্তায় দড়ি ফেলে কোনও মতে যান চলাচল স্বাভাবিক করছেন কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। ফুটপাতেও পা ফেলার উপায় নেই। ফুটপাতে ছোটদের জামা বিক্রি করছিলেন এক ব্যবসায়ী। দীর্ঘক্ষণ ধরে সেখানে দরদাম করছিলেন কয়েক জন। বেশ কিছু ক্ষণ এ ভাবে চলার পরে ওই ব্যবসায়ীকে বলতে শোনা গেল, ‘‘দিদি অনেক দিন পর ক্রেতার দেখা পাচ্ছি। না কিনলে ছেড়ে দিন। এ বার আমাদের বেচাকেনা করতে দিন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja 2024 Puja Shopping Kolkata

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy