Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জঞ্জালের টানে কাকের ভিড় রবীন্দ্র সরোবরে

পক্ষী বিশারদ সুজিত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অনুষ্ঠান বা পুজোর পরে যেখানে বর্জ্য অথবা উচ্ছিষ্ট দেখা যায়, সেখানেই কাকের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ছটের পরে সরোবর এলাকায় জঞ্জাল থাকায় কাকের সংখ্যা বেশি।’’

রবীন্দ্র সরোবরে ছট।—ফাইল চিত্র।

রবীন্দ্র সরোবরে ছট।—ফাইল চিত্র।

কৌশিক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫২
Share: Save:

ছটের পরেই রবীন্দ্র সরোবরে কাকের সংখ্যা হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে। এই ঘটনা ইঙ্গিত বহন করে যে সরোবরের জঞ্জাল থেকে আবর্জনা ছড়িয়েছে।

রবিবার দুপুর থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, রবীন্দ্র সরোবরে পরিযায়ী পাখিরা চলে গিয়েছে। পক্ষীপ্রেমী এবং পরিবেশ কর্মীদের একাংশের দাবি, কাক জঞ্জাল পরিষ্কার করে। ছটের পরে সরোবরে জঞ্জাল থাকার ফলেই তাদের বাড়বাড়ন্ত।

পক্ষী বিশারদ সুজিত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অনুষ্ঠান বা পুজোর পরে যেখানে বর্জ্য অথবা উচ্ছিষ্ট দেখা যায়, সেখানেই কাকের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ছটের পরে সরোবর এলাকায় জঞ্জাল থাকায় কাকের সংখ্যা বেশি।’’ তাঁর মতে, কাকের সংখ্যা বাড়ায় অন্য পাখিদের বসবাসের উপরে প্রভাব পড়বে। তারা অন্যত্র চলে যেতে পারে।

সমীক্ষার রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, ছটের পরে পরিযায়ী পাখি ‘হোয়াইট টেলড রবিন’, ‘আই-ব্রাউড থ্রাস’ দেখা যায়নি। সরোবরে যেখানে প্রায় ৬০ টি ‘অরেঞ্জ হেডেড থ্রাস’ দেখা গিয়েছিল, সেই সংখ্যা নেমে ১০ টিতে দাঁড়িয়েছে। ‘ব্ল্যাক ক্রাউন্ড নাইট হেরন’, ব্লু থ্রোটেড ব্লু ফ্লাই ক্যাচার এবং ব্রাউন ব্রেস্টেড ফ্লাই ক্যাচার সরোবরে দেখা যায়নি। কালীপুজোর পরেই যে সমীক্ষা হয়েছিল সেখানে তাদের দেখা মেলে।

পক্ষীবিদ কুশল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘হোয়াইট টেলড রবিন’ পাঁচ বছর পরে সরোবরে দেখা গিয়েছে। ‘আই ব্রাউড থ্রাস’ কলকাতা এবং তার আশেপাশে প্রায় দেখাই যায় না। ফলে এই ধরনের পরিযায়ী পাখি সরোবর থেকে চলে যাওয়া খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য এবং পক্ষীপ্রেমিক সুদীপ ঘোষ বলেন, ‘‘কালীপুজো এবং দীপাবলির পরে প্রচুর পরিমাণে পরিযায়ী পাখি থাকার কারণ হল সরোবর চত্বরে শব্দবাজি কম ফেটেছিল। ছটপুজোর ক্ষেত্রে সরোবর চত্বরের ভিতরে শব্দবাজি কম ফাটলেও ক্রমাগত বাজনার আওয়াজে পাখিরা চলে গিয়েছে বলেই ধারণা।’’

জলাশয়ের ধারে যজ্ঞ কুন্ডলী থেকে যে ধোঁয়া বেরিয়েছে তার ফলেও পাখিরা চলে যেতে পারে বলেও পক্ষীপ্রেমী এবং পরিবেশকর্মীরা মনে করেন। মঙ্গলবার সকালে সরোবর চত্বরে একটি টিয়া পাখিও মরে পড়ে থাকতে দেখেন কয়েক জন প্রার্তভ্রমণকারী। তবে সেটি যে দূষণ থেকেই হয়েছে তা এখনই বলতে নারাজ কুশলবাবু। কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের দাবি, সরোবর চত্বরে ছটপুজোর কোনও বর্জ্য নেই।

চত্বরের বাইরে থাকলে কিছু মন্তব্য করা সম্ভব নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pollution Chhath Puja Rabindra Sarobar Crows
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE