Advertisement
১৪ জানুয়ারি ২০২৫

সিটিসি-র ঘুরে দাঁড়ানোর রাস্তা কী, জানে না দফতরই

ক্ষমতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যের পাঁচটি পরিবহণ নিগমকে লাভজনক করে তোলা হবে। তার জন্য পরিকল্পনা করতে একাধিক কমিটিও তৈরি হয়েছে। কিন্তু পালাবদলের পরে তিন বছর কেটে গেলেও সিটিসি রয়ে গিয়েছে সেই তিমিরেই। সিটিসি-কে লাভের মুখ দেখাতে সরকারি পরিকল্পনা কী? পরিবহণ কর্তাদের কাছে এর সদুত্তর নেই। এক কর্তা বলেন, “উদ্বৃত্ত জমি বিক্রি করে ও কর্মীদের একাংশকে স্বেচ্ছাবসর দিয়ে সংস্থার হাল ফেরানোর কথা ভাবা হয়েছিল।”

অত্রি মিত্র ও সুপ্রিয় তরফদার
শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৪৩
Share: Save:

ক্ষমতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যের পাঁচটি পরিবহণ নিগমকে লাভজনক করে তোলা হবে। তার জন্য পরিকল্পনা করতে একাধিক কমিটিও তৈরি হয়েছে। কিন্তু পালাবদলের পরে তিন বছর কেটে গেলেও সিটিসি রয়ে গিয়েছে সেই তিমিরেই।

কিন্তু তিনিই জানান, তিনটি ডিপোর জমি লিজ-চুক্তির মাধ্যমে বিক্রির টাকা দিয়ে কী হবে, তা ঠিকই করতে পারেনি সরকার। ওই কর্তা আরও বলেন, “দফতরের একাংশের মতে ওই অর্থে কর্মীদের বকেয়া মেটানো হোক। অন্য অংশ চাইছে সংস্থার ঋণ শোধ হোক। তা নিয়ে চলছে টানাপড়েন।” স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পও এখনও পর্যন্ত সে ভাবে জনপ্রিয় করতে পারেনি সরকার।

আর্থিক ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সিটিসি-র পরিষেবা বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল, গঙ্গাতীর বরাবর, রাজারহাট-সল্টলেক-সহ কিছু এলাকায় নতুন করে পরিষেবা চালু হবে। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালকে কেন্দ্র করে চক্র-ট্রাম চালুর কথাও ভাবা হয়। কিন্তু তা কবে হবে, তার সদুত্তর নেই পরিবহণ কর্তাদের কাছে। সম্প্রতি এসি ট্রামকে জনপ্রিয় করতে পর্যটন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই পরিকল্পনাও মুখ থুবড়ে পড়েছে।

ঠিক হয়েছিল, নতুন বাস কিনে পরিকল্পিত ভাবে চালিয়ে আয় বাড়ানো হবে। কিন্তু সিটিসি কর্তারা জানাচ্ছেন, তিন বছরে মাত্র ১৫টি নতুন বাস এসেছে। রুট বিন্যাসে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এক ধাক্কায় অনেকটাই কমেছে আয়। নদিয়া, হাওড়া-সহ যে সব জেলার পরিবহণের দায়িত্ব সিটিসি-র কাঁধে চাপানো হয়েছে, সেখানে কার্যত সরকারি পরিবহণ পরিষেবাই ভেঙে পড়েছে।

বর্তমান রুটে ট্রাম চালিয়েও যে লাভের মুখ দেখা যাবে না, তা-ও মানছেন সরকারি কর্তারা। একই মত এ শহরের নগর পরিকল্পনার বিশেষজ্ঞদেরও (টাউন প্ল্যানার)। কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন টাউন প্ল্যানার দীপঙ্কর সিংহ বলেন, “শহরে রাস্তা কম। ফুটপাথ হয় হকারদের দখলে, না হয় সরু করা হয়েছে। অগত্যা পথচারীরা রাস্তা দিয়ে হাঁটায় যানবাহনের গতি কমছে। ট্রাম চললে তো কথাই নেই!” তবে নির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব ট্রাম চালালে অসুবিধা নেই বলেই দাবি দীপঙ্করবাবুর। তিনি বলেন, “এখানে ট্রাম চালাতে রাস্তার মাঝখান দিয়ে লাইন করা হল। তাতে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বাড়ে, গাড়ির গতি কমে। রাস্তার দু’পাশে ট্রাম লাইন থাকলে গতি বাড়ানো সম্ভব।”

আপাতত বাস চালিয়েই সিটিসি-র হাল ফেরাতে চাইছেন পরিবহণ কর্তারা। পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের দাবি, “একটা একটা করে নিগমের উন্নয়নে মনযোগী হচ্ছি। সিটিসি-র বেহাল দশা অল্প দিনেই কাটবে। শীঘ্রই বহু নতুন বাস কেনা হবে।” মন্ত্রী আশ্বাস দিলেও তা কবে বাস্তবায়িত হবে, বলতে পারছেন না পরিবহণ কর্তারা।

(শেষ)

অন্য বিষয়গুলি:

atri mitra supriyo tarafdar ctc profit tram kolkata news online kolkata news comeback state government mamata banerjee government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy