Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

আগেও মাকে খুনের চেষ্টা করে মেয়ে ও জামাই

তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় স্নেহা ও জয় জানিয়েছে, সপ্তাহ দু’য়েক আগে এক বার শম্পা ও তাঁর স্বামী ভূপালকে খুন করতে খাবারের সঙ্গে কিছু ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিল তারা।

এই ব্যাগে দেহ পাচার করতে গিয়েই ধরা পড়ে যায় অভিযুক্তরা। —নিজস্ব চিত্র।

এই ব্যাগে দেহ পাচার করতে গিয়েই ধরা পড়ে যায় অভিযুক্তরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৯ ০২:৩২
Share: Save:

শনিবার রাতেই শুধু নয়। আগেও এক বার মাকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল মেয়ে ও জামাই। যদিও সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি। পর্ণশ্রী থানা এলাকার বাসুদেবপুরের বাসিন্দা শম্পা চক্রবর্তীকে (৪৭) খুনের ঘটনায় ধৃত মেয়ে স্নেহা এবং জামাই জয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনটাই জানতে পেরেছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। সোমবার ধৃতদের আলিপুর আদালতে তোলা হলে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়।

তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় স্নেহা ও জয় জানিয়েছে, সপ্তাহ দু’য়েক আগে এক বার শম্পা ও তাঁর স্বামী ভূপালকে খুন করতে খাবারের সঙ্গে কিছু ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিল তারা। সেই ওষুধ খেয়ে শম্পা কিছুটা আচ্ছন্ন হলেও ভূপালের কিছু হয়নি। ফলে মেয়ে-জামাইয়ের সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। শনিবার রাতে ভূপাল কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পরে ফের শম্পাকে খুনের পরিকল্পনা করে স্নেহা ও জয়। সেই মতো রাতে তিনি রাতে ঘুমিয়ে পড়লে প্রথমে তাঁর শ্বাসরোধ করা হয়। এর পরে বাড়ির আনাজ কাটার ছুরি দিয়ে শম্পার গলার নলি কেটে দেয় মেয়ে-জামাই। পুলিশ জানিয়েছে, শম্পার মোবাইলের সিম কার্ড ব্যবহার করছিল জয়। শাশুড়িকে কী ভাবে সরিয়ে দেওয়া যায়, ওই মোবাইল থেকেই সে কথা এসএমএস মারফত স্ত্রী স্নেহাকে জানাত সে।

রাস্তায় যেখানে শম্পার দেহ পড়েছিল, তার পাশেই পড়েছিল একটি ট্রলিব্যাগ। ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছে, তাদের প্রথমে পরিকল্পনা ছিল ওই ট্রলিব্যাগে দেহ ভরে বেহালা ফ্লাইং ক্লাবের কাছাকাছি কোনও নির্জন জায়গায় ফেলে আসার। কিন্তু ব্যাগে দেহটি ভরা যায়নি। তখন স্নেহা ও জয় প্রথমে কাপড় দিয়ে দেহটি পেঁচিয়ে নাইলনের দড়ি দিয়ে বাঁধে। এর পরে সাইকেলের ক্যারিয়ারে কাপড় পেঁচানো দেহটি চাপায়। সঙ্গে রাখে ট্রলিব্যাগটিও। যাতে রাস্তায় কারও চোখে পড়লে সন্দেহ না হয়। যেন মনে হয়, জিনিস বেঁধে তারা কোথাও যাচ্ছে। কিন্তু ক্যারিয়ারে দেহটি তুলে সাইকেল একটু হাঁটিয়ে নিয়ে যেতেই শম্পার দেহ রাস্তায় পড়ে যায়। তখন দেহ ফেলে রেখে পালায় ধৃতেরা।

তদন্তকারীরা আরও জেনেছেন, বাসুদেবপুরের ফ্ল্যাটটি হাতাতেই এই খুনের পরিকল্পনা করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, বেহালায় জয়ের একটি দোকান ছিল। কিন্তু সেই দোকান সে চালাত না। এক রকম বেকারই ছিল। গত এক বছর শম্পার বাড়িতেই থাকত জয় ও স্নেহা। স্নেহার অভিযোগ, জয়কে পছন্দ করতেন না শম্পা। সে কারণে তিনি বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য মেয়ের উপরে চাপ দিচ্ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, খুনের সময়ে শম্পার পোষ্য বেড়ালটি চিৎকার করায় তার গলায় বেল্ট পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে জয়। যদিও বেড়ালটি বেঁচে গিয়েছে। তাকে বেলগাছিয়া পশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Parnasree Murder Behala Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE