Advertisement
০২ মে ২০২৪
Dead Body Found

গঙ্গায় ভেসে এল নিখোঁজ যুবকের দেহ, শরীরে ২৬টি আঘাত

শনিবারই মামলাটি জ়িরো এফআইআর করে বরাহনগর থানায় পাঠিয়েছে কলকাতা পুলিশ। কারণ, মৃতের বাড়ি বরাহনগরে। ওই থানাতেই গত বৃহস্পতিবার নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল যুবকের পরিবার।

An image of the person

রূপকুমার সাহা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৩ ০৭:০৩
Share: Save:

শরীরে আঘাত রয়েছে মোট ২৬টি। পাঁজরের চারটি হাড় ভাঙা। মাথার সামনে ও পিছনের দিকেও গুরুতর আঘাত রয়েছে। আহিরীটোলার কাছে নাথেরবাগান ঘাট থেকে শুক্রবার উদ্ধার হওয়া একটি দেহের ময়না তদন্তের পরে এমনই তথ্য সামনে এসেছে। জলে ভেসে আসা মৃতদেহের পরিচয় জানতে পুলিশ খোঁজাখুঁজি শুরু করলে জানা যায়, তিনি বরাহনগরের বাসিন্দা। নাম রূপকুমার সাহা (৪২)। এর পরে দ্রুত খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে উত্তর বন্দর থানা।

শনিবারই মামলাটি জ়িরো এফআইআর করে বরাহনগর থানায় পাঠিয়েছে কলকাতা পুলিশ। কারণ, মৃতের বাড়ি বরাহনগরে। ওই থানাতেই গত বৃহস্পতিবার নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল যুবকের পরিবার। তবে রাত পর্যন্ত মৃতের পরিবারের তরফে কারও বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পুলিশের কাছে জমা পড়েনি। তাতেই এই মৃত্যু ঘিরে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, রূপকুমারের বাড়ি বরাহনগরের নিয়োগীপাড়া রোডে। সেখানে বছর দশেকের মেয়ে এবং স্ত্রী বর্ণার সঙ্গে থাকতেন তিনি। তাঁরা তিন ভাই। বড় ভাই রাজকুমার সাহা আলাদা থাকেন। ছোট ভাই রনি পরিবার-সহ একই বাড়ির একটি তলায় বসবাস করেন। রাজকুমার এ দিন জানান, ফ্ল্যাট বিক্রির দালালির এক সংস্থায় চাকরি করতেন রূপকুমার। তিন বছর ধরে তিনি ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। আগে এমনই অন্য একটি সংস্থায় কাজ করতেন। গত বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৯টা নাগাদ লেক টাউন এলাকার অফিসে যাচ্ছেন বলে বেরিয়েছিলেন রূপকুমার। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তাঁর সঙ্গে শেষ বার কথা হয় স্ত্রী বর্ণার। তার পরে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ স্বামীকে তিনি ফোন করলেও আর যোগাযোগ করতে পারেননি।

এ দিন বর্ণা বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরে ওঁর স্কুটারটা খারাপ। তাই একটু সকাল সকাল বেরোচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবারও অফিসে চলে যাওয়ার পরে সারা দিন কথা হয়নি। রাত সাড়ে ৮টার পরে ফোনে শেষ যখন কথা হয়, চাল আর মাখন কিনে আনতে বলি। পরে বার বার ফোন করলেও একটি নম্বর বন্ধ ও অপরটিতে ফোন ঢুকছে না বলেছে। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে বরাহনগর থানায় যাওয়া হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দিয়ে পোস্টও করি। পরের দিন বরাহনগর থানা থেকে ফোন করে দেওরকে জানানো হয়, উত্তর বন্দর থানায় যেতে হবে। সেখানে একটি দেহ পাওয়া গিয়েছে। সকলে গিয়ে দেখে, ওরই দেহ!’’

আদতে বাংলাদেশের মেয়ে বর্ণার দাবি, ‘‘কী করে এমন ঘটল, জানি না। তবে কয়েক মাস ধরে চুপচাপ থাকত। রক্তচাপের ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল। মেয়ের স্কুলের মে মাসের বেতন জমা করা বাকি। সেই সব থেকেই কিছু হল কি না, বলতে পারব না।’’ মেয়েকে নিয়ে বর্ণা রয়েছেন বরাহনগরেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে। এক আত্মীয় বললেন, ‘‘মাস দুয়েক ধরে অন্য রকম ব্যবহার করছিল। চুপচাপ থাকত। এক বার বলেছিল, আমি হয়তো আর বাঁচব না!’’

কিন্তু কেন? কাউকে সন্দেহ হয়? সাহা পরিবারের দাবি, এ সম্পর্কে কোনও ধারণাই তাঁদের নেই। এমনকি, কর্মস্থলে তাঁর সহকর্মীদের সকলের সঙ্গেই তাঁর সদ্ভাব ছিল বলেই দাবি বর্ণার। তবে তিনি জানান, পাড়ার দু’টি দোকানে বসে অফিসফেরত গল্প করতেন তাঁর স্বামী। কিন্তু মাস দুয়েক ধরে সেখানে যাচ্ছিলেন না। পুলিশ সূত্রে খবর, সব পক্ষকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বরাহনগর থানা বাকিটা দেখবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dead body found Missing Person Injury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE