এই খাল থেকেই উদ্ধার হয় দেহ।
অবসরপ্রাপ্ত এক রেলকর্মীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে।
পরিবারের অভিযোগ, খুন করা হয়েছে তাঁকে। পুলিশ যদিও এখনও নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারছে না। তদন্তকারীদের একাংশের মনে হচ্ছে, এটি দুর্ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাম মহম্মদ নিজামুদ্দিন (৬০)। তাঁর বাড়ি নারকেলডাঙায়।
পরিবারের তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি নিজামুদ্দিন। বাবার কোনও খোঁজ না পেয়ে শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর বড় ছেলে মহম্মদ হাসিব নারকেলডাঙা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে যান। ততক্ষণে নারকেলডাঙা খাল থেকে একটি দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। হাসিব থানায় পৌঁছতেই পুলিশের মোবাইলে তোলা ছবি দেখে বাবাকে শনাক্ত করেন। ওই রাতেই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেন হাসিব।
পুলিশ জানায়, গত ৩১ জানুয়ারি নিজামুদ্দিন চাকরি থেকে অবসর নেন। স্ত্রী, তিন মেয়ে এবং দুই ছেলেকে নিয়ে নারকেলডাঙার বরফকল বস্তির একচিলতে ঘরে থাকতেন। মেয়েরা স্কুলপড়ুয়া, ছোট ছেলে সৌদি আরবে কর্মরত। বড় ছেলে হাসিব কলেজে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
মহম্মদ নিজামুদ্দিন
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার দুপুরেই ক্যানাল ইস্ট রোড এবং ক্যানাল ওয়েস্ট রোডের সংযোগকারী রেল ব্রিজের নীচে খাল থেকে এক ব্যক্তির দেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই প্রথমে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসিব বলেন, ‘‘আমার বাবার কারও সঙ্গে শত্রুতা ছিল না। রেল ব্রিজের নীচে খালের মধ্যে যে ভাবে বাবার দেহ ভাসতে দেখা গিয়েছে তাতে মনে হচ্ছে, তাঁকে কেউ অন্য কোথাও মেরে খালে ফেলে দিয়েছে।’’
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, নিজামুদ্দিনের দেহটি খালের মধ্যে উপুড় হওয়া অবস্থায় পড়েছিল। মৃতদেহের কপালে গভীর ক্ষতচিহ্ন মিলেছে। তাঁর নাক দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজামুদ্দিন প্রায়ই মদ্যপান করতেন। পুলিশের একাংশের অনুমান, মত্ত অবস্থায় রেল ব্রিজের পাশের ফুটপাথ ধরে হেঁটে আসার সময়ে ভারসাম্য হারিয়ে ব্রিজ থেকে খালে পড়ে যান নিজামুদ্দিন। খালের মধ্যে যে জায়গায় তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেখানে বড় একটি পাথর ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। পাথরের উপরে পড়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান পুলিশের।
তবে মদ্যপানের জন্যই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে মেনে নিতে নারাজ নিজামুদ্দিনের পরিবার। তাঁদের দাবি, ‘‘তিনি কখনওই ওই জায়গায় গিয়ে মদ্যপান করতেন না। মত্ত অবস্থায় রেল ব্রিজের উপরে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’’
( নিজস্ব চিত্র)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy