মর্মান্তিক: ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে আনা হচ্ছে বৃদ্ধের দেহ। শুক্রবার, হাওড়ার শালিমারে এক নম্বর গেটের কাছে। নিজস্ব চিত্র
একটি শুকিয়ে যাওয়া নালা থেকে উদ্ধার হল এক বৃদ্ধের ক্ষতবিক্ষত দেহ। শুক্রবার দুপুরে হাওড়ার শালিমার এক নম্বর গেটের কাছ থেকে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম গুণনিধি সাউ (৭৫)। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী তিনি। আদতে ওড়িশার বাসিন্দা ওই বৃদ্ধ সপরিবার থাকতেন গার্ডেনরিচ এলাকায়। খুনের তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ইট বা ভারী কিছু দিয়ে মাথা এমন ভাবে থেঁতলানো হয়েছে যে সেটি দেহ থেকে প্রায় আলাদা হয়ে গিয়েছে। উদ্ধারের সময়ে শরীরের সঙ্গে সামান্য জুড়েছিল মাথাটি। অজস্র কোপানোর দাগ মিলেছে দেহে। তদন্তকারীদের যা দেখে মনে হয়েছে, এমন নৃশংস ভাবে খুন করার পিছনে প্রবল আক্রোশ থাকতে পারে। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে এক আরপিএফ কর্মীকে আটক করা হয়েছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, বিএনআরে গুণনিধি কর্মরত থাকা অবস্থায় এক আরপিএফ জওয়ান সুকান্তকুমার সাউয়ের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। অবসরের পরেও গুণনিধি সপরিবার বিএনআরে থাকতেন। সুকান্তের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল। কথা প্রসঙ্গে সুকান্ত জেনেছিলেন, অবসরের পরে পাওয়া অনেকটা টাকা গুণনিধি ব্যাঙ্কে রেখেছিলেন। তদন্তকারীরা জেনেছেন, বিপদে পড়েছেন বলে কয়েক বছর আগে তাঁর থেকে আট লক্ষ টাকা ধারও নেন সুকান্ত। কথা দেন শীঘ্রই ফেরত দেবেন। অভিযোগ, সেই টাকা বারবার চেয়েও পাননি ওই বৃদ্ধ। ইতিমধ্যে ওই আরপিএফ জওয়ান প্রথমে শালিমারে এবং গত বছর খড়্গপুরে বদলি হয়ে চলে যান। যদিও শালিমারের রেল কোয়ার্টার্স ছাড়েননি তিনি।
গুণনিধির পরিচিত রঘুনাথ বড়াল এ দিন বলেন, ‘‘সব টাকা দিয়ে দেবে বলে ১ জুন দাদা ও বৌদিকে হাওড়ায় নিয়ে যান ওই আরপিএফ কর্মী। ৪ তারিখ বৌদিকে বিএনআরে ফিরিয়ে দিয়ে যান।’’ রঘুনাথ জানান, কিন্তু গুণনিধি বাড়ি না ফেরায় তাঁরা সুকান্তের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। তাঁকে না পেয়ে পরিবারের লোকজন অবশেষে গার্ডেনরিচ থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। শুক্রবার গুণনিধির পরিজনেরা মিলে শালিমারে যান তাঁর খোঁজে। একটি নালার কাছে ভিড় দেখে তাঁরা দাঁড়িয়ে পড়েন। দেখেন, গুণনিধির দেহ সেখানে পড়ে আছে। তত ক্ষণে দুর্গন্ধ ছড়াতেও শুরু করেছে। এর পরেই হাওড়া সিটি পুলিশকে বিষয়টি জানান তাঁরা। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সুকান্তকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর রেল কোয়ার্টার্স থেকে আটক করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy