Advertisement
E-Paper

চিকিৎসায় দেরি, সোয়াইন ফ্লু-তে বিপদে শিশুরা

এ রাজ্যে এ বছর ইতিমধ্যেই সোয়াইন ফ্লু-এ আক্রান্ত হয়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে দু’জন শিশু।

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৮ ০২:২৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দিন কয়েকের জ্বর। সঙ্গে সর্দি-কাশি। ওষুধ খেয়ে শরীরের তাপমাত্রা কমলেও শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমছে না। বরং বাড়ছে। প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতেই কেটে যাচ্ছে আরও কয়েক দিন। ফলে সোয়াইন ফ্লু ধরা পড়ে চিকিৎসা শুরু হতে অনেকটাই দেরি হয়ে যাচ্ছে। যার জেরে বিপদ বাড়ছে রোগীদের। বিশেষত, আক্রান্ত শিশুদের।

এ রাজ্যে এ বছর ইতিমধ্যেই সোয়াইন ফ্লু-এ আক্রান্ত হয়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে দু’জন শিশু। কলকাতার একাধিক বেসরকারি হাসপাতালে সোয়াইন ফ্লু-এ আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। ওই সমস্ত হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের ভর্তি থাকা রোগীদের মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসে সোয়াইন ফ্লু-এ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল শ’খানেক। যার অধিকাংশই শিশু।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সোয়াইন ফ্লু-আক্রান্ত শিশুরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে পৌঁছয়। চিকিৎসা অনেক দেরিতে শুরু হয়। কারণ, সাধারণ ভাইরাল জ্বর ও সর্দি-কাশি ভেবেই প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়। জ্বর কমলেও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা চলতে থাকলে ও শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তখন আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। তাতে সোয়াইন ফ্লু ধরা পড়লে তখন শুরু হয় চিকিৎসা।

শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ জানান, এই মরসুমে ডেঙ্গির পাশাপাশি সোয়াইন ফ্লু-আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। তাই সোয়াইন ফ্লুর উপসর্গ থাকলে শিশুদের ক্ষেত্রে দ্রুত পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত। মুখ ও গলার লালা নিয়ে সোয়াইন ফ্লু-র পরীক্ষা করা হয়। তিন দিন জ্বর থাকলে রক্ত পরীক্ষার সঙ্গে সোয়াইন ফ্লু-র পরীক্ষাও করিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে বড় বিপদ এড়ানো যায়।

আর এক শিশুরোগ চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরি জানান, জ্বর, সর্দি-কাশি, হাতে-পায়ে যন্ত্রণার মতো উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খাওয়ানো দরকার। জ্বর কমলেও শিশুরা যদি স্বাভাবিক কথা বলা কিংবা খেলাধুলো না করে, তা হলে তাদের দিকে বিশেষ ভাবে লক্ষ্য রাখা দরকার। তবে, সব চেয়ে চিন্তার বিষয় শ্বাসকষ্ট। জ্বর কমে যাওয়ার পরেও শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করা দরকার। জ্বর হলে বাইরে না যাওয়া এবং মুখ-চোখ বারবার পরিষ্কার জলে ধুয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, সোয়াইন ফ্লু পরীক্ষা করার পর্যাপ্ত পরিকাঠামো এ রাজ্যে নেই। নাইসেড এবং বি সি রায় শিশু হাসপাতালে সোয়াইন ফ্লু পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু সেই পরীক্ষা শুধুমাত্র হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের জন্যই সীমিত। জ্বরের প্রথম পর্বে রোগীকে ভর্তি করাও হয় না। বহির্বিভাগে দেখাতে আসা রোগীদের সোয়াইন ফ্লু পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই সেখানে। বেসরকারি হাসপাতালে সোয়াইন ফ্লু-র পরীক্ষা করাতে প্রায় ছ’হাজার টাকা খরচ হয়। ব্যয়বহুল এই পরীক্ষায় অনেক সময়েই খরচ বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

স্বাস্থ্যকর্তারা অবশ্য জানাচ্ছেন, বহির্বিভাগের রোগীদের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখেই হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। তাই পরীক্ষার প্রয়োজন হলে রোগীরা সেই সুবিধা পাবেন। জ্বর হলেই সব ধরনের ভাইরাস রোগের পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন নেই।

Swine Flu Treatment Child Baby
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy