Advertisement
E-Paper

‘কর ফাঁকি’ দিয়েই ছুটছে খাবার সংস্থার বাইক

এমনই এক অ্যাপ নির্ভর খাবার সরবরাহ সংস্থার কর্মী মহম্মদ ফিরোজ জানালেন, দুর্গাপুজো কাটলেও তাঁদের বসার ফুরসত নেই। খাবারের উপরে গ্রাহকদের যেমন নানা ছাড় দিচ্ছে সংস্থাগুলি, তেমনই ‘ডেলিভারি’ পিছু কর্মীদেরও বাড়তি টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছে সংস্থা।

নীলোৎপল বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:০৩
সরবরাহকারী: খাবার নিয়ে গন্তব্যের পথে। রবিবার, ধর্মতলায়। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

সরবরাহকারী: খাবার নিয়ে গন্তব্যের পথে। রবিবার, ধর্মতলায়। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

যত সংখ্যক টার্গেট পূরণ, ততই বাড়তি আয়। তার টানেই পরিবহণ দফতরের নিয়ম হেলায় উড়িয়ে উৎসবের মরসুমে শহরজুড়ে অ্যাপ নির্ভর খাবার সরবরাহ সংস্থার কর্মীরা ছুটে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ। এর সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পথের বিপদও। অভিযোগ, তাঁরা নিজেরা নিয়ম মানছেন না। আবার তাঁদের নিয়ম মানতে বাধ্য করার দায়িত্বও নিচ্ছেন না কেউ। পুলিশও দর্শকের ভূমিকায় থাকছে বলেই অভিযোগ।

এমনই এক অ্যাপ নির্ভর খাবার সরবরাহ সংস্থার কর্মী মহম্মদ ফিরোজ জানালেন, দুর্গাপুজো কাটলেও তাঁদের বসার ফুরসত নেই। খাবারের উপরে গ্রাহকদের যেমন নানা ছাড় দিচ্ছে সংস্থাগুলি, তেমনই ‘ডেলিভারি’ পিছু কর্মীদেরও বাড়তি টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছে সংস্থা। ফিরোজ বললেন, ‘‘এমনিতে আমরা ডেলিভারি পিছু ২৫ টাকা করে পাই। এ ছাড়া সাড়ে চার কিলোমিটারের বেশি দূরে গেলেই প্রতি কিলোমিটারে ১০ টাকা করে দেওয়া হয়। তবে সাধারণ দিনে যেমন ১২টি জায়গায় খাবার পৌঁছলে ২২৫ টাকা, ১৫টি জায়গায় গেলে ৩৫০ টাকা পাওয়া যায়, পুজোর সময়ে সেই অঙ্ক বেড়ে ১২টির ৫০০ টাকা কিংবা ১৫টির জন্য ৭০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে।’’

পার্ক সার্কাস মোড়ে ডেলিভারি বয় সুমন দত্ত আবার বললেন, ‘‘সকাল ১০টায় বেরিয়েছি। রাত দু’টো পর্যন্ত কাজ করব। যা টাকা দিচ্ছে, এখন বসে থাকা যায় না।’’ আর এক ডেলিভারি বয় নিজের খাবার নেওয়ার ব্যাগে এতগুলি বাক্স ভরে বাইকে রেখেছেন যে তাঁর নিজেরই ঠিকঠাক বসার জায়গা নেই।

বেলতলা মোটর ভেহিকলসের আধিকারিক তপন মিত্র অবশ্য দাবি করলেন, ‘‘এই ভাবে কাজ করা পুরোপুরি বেআইনি। যে মোটরবাইকে খাবার দেওয়া হয় তার ৯০ শতাংশেরই কনজ়িউমার ভেহিকল হিসেবে রেজিস্ট্রেশন নেই।’’ তিনি জানাচ্ছেন, গাড়ির মতোই ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহৃত মোটরবাইকও নথিভুক্ত করাতে হয়। এ জন্য বাইকের মালিককে প্রতি বছর আট হাজার টাকা করে দিতে হয়। কিন্তু ব্যক্তিগত মালিকানার ক্ষেত্রে বাইকের মালিককে ১৫ বছরের জন্য এক বার ‘এক্স শো-রুম প্রাইসে’-র ৯ শতাংশ দিলেই চলে। তপনবাবু বলেন, ‘‘কোনও বাইকের দাম ন্যূনতম ৬৫ হাজার টাকা হলে, তার ৯ শতাংশ মানে ৫ হাজার ৮৫০ টাকা ১৫ বছরের জন্য এককালীন দিতে হয়। কিন্তু ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহৃত বাইকের মালিকেরা তাঁদের বরাদ্দ প্রতি বছর ৮ হাজার টাকা দিতে চান না।’’

অ্যাপ নির্ভর খাবারের সংস্থাগুলি এ নিয়ে মন্তব্য করতে চায়নি। বাইক নথিভুক্তের বিষয়টি চালকদের দায়িত্ব বলেই দায় সেরেছে তারা। পরিবহণ দফতরের বক্তব্য, ব্যবসায়িক গাড়ির জন্য ‘এক্স শো-রুম প্রাইসে’র ১.২ শতাংশ কিংবা ৮০০০ টাকার মধ্যে যেটা বেশি, সেটা দিলেই চলে। তেমনই ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহৃত বাইকের ক্ষেত্রেও শুধুমাত্র ‘এক্স শো-রুম প্রাইসে’র ১.২ শতাংশ নেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। সেটা না হওয়া অবধি পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলা আছে। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্র্যাফিক) অখিলেশ চতুর্বেদী বললেন, ‘‘ওই ধরনের বাইক দেখলেই কড়া ব্যবস্থা নিতে বলা আছে। তবে বাইকচালকদেরও নিজেদের বিপদের কথা বুঝতে হবে।’’

Food App Delivery Boy Transport Department Traffic Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy