Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গির ফাঁকে ম্যালেরিয়াও

ডেঙ্গি মোকাবিলায় চতুর্দিকে প্রচার, যাবতীয় প্রস্তুতি, সরকারি উদ্যোগ। আর সেই ফাঁকে শহরে ম্যালেরিয়া সাম্রাজ্য বিস্তার করছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে মশা গবেষকদের একাংশের মধ্যে।

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৫৫
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ডেঙ্গি মোকাবিলায় চতুর্দিকে প্রচার, যাবতীয় প্রস্তুতি, সরকারি উদ্যোগ। আর সেই ফাঁকে শহরে ম্যালেরিয়া সাম্রাজ্য বিস্তার করছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে মশা গবেষকদের একাংশের মধ্যে। কারণ, শহরের একাধিক ওয়ার্ডে ইতিমধ্যেই ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের খবর এসেছে। মশা গবেষকদের একাংশ বলছেন, ডেঙ্গির পাশাপাশি ম্যালেরিয়া সংক্রমণে গুরুত্ব দেওয়া না হলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। যদিও কলকাতা পুর প্রশাসনের দাবি, ম্যালেরিয়া সংক্রমণের খবর একেবারেই উদ্বেগজনক নয়। তা ছাড়া প্রতি বছরই ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন অনেকে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়।

মশা গবেষকদের একাংশের বক্তব্য, ডেঙ্গির জীবাণু বহনকারী এডিস ইজিপ্টাই ও ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহনকারী অ্যানোফিলিসের চরিত্র ও বংশবিস্তারের পদ্ধতির মধ্যে ফারাক অনেক। ফলে শুধু ডেঙ্গির উপরে গুরুত্ব দিয়ে কখনওই ম্যালেরিয়ার বিস্তার রোধ করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে দরকার সার্বিক কর্মসূচি। আইসিএমআর-এর অধীনস্থ স্বশাসিত সংস্থা ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ম্যালেরিয়া রিসার্চ’-এর (এনআইএমআর) বেঙ্গালুরু শাখার প্রধান সুশান্তকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ করেছি, ডেঙ্গির উপরে গুরুত্ব দিতে গিয়ে অনেক জায়গাতেই ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ কর্মসূচি ঠিক মতো পালন করা হচ্ছে না। ফলে ম্যালেরিয়া ছড়াচ্ছে দ্রুত। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ডেঙ্গির মশা আর ম্যালেরিয়ার মশার কামড়ের সময় এবং তাদের চরিত্র আলাদা। ফলে শুধু একটির উপরে গুরুত্ব না দিয়ে সার্বিক কর্মসূচি নিতে হবে।’’ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যার শিক্ষক ও মশা গবেষণাগারের বিজ্ঞানী গৌতম চন্দ্র বলেন, ‘‘শুধু ডেঙ্গির উপরে গুরুত্ব দিলে কিন্তু ম্যালেরিয়া ছড়ানোর আশঙ্কা থেকেই যায়। ইতিমধ্যেই অনেক জায়গায় ম্যালেরিয়া সংক্রমণের খবর আসছে।’’

কলকাতা পুরসভার একাধিক ওয়ার্ডেও ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ হয়েছে বলে খবর। ৬০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাইসার জামিল বলেন, ‘‘ওয়ার্ডের কয়েক জনের ম্যালেরিয়া হয়েছে। তবে আমরা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি।’’ ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সানা আহমেদও বলেন, ‘‘কয়েক জনের ম্যালেরিয়া হয়েছে। ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’ তবে কলকাতা পুরসভা জানাচ্ছে, প্রতি বছরই শহরে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন নাগরিকেরা। তাই উদ্বেগের কিছু নেই। তাদের দাবি, শহরে ম্যালেরিয়ায় শেষ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ২০১০ সালে। ওই বছর ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় এক লক্ষ। সেখানে ২০১২ সালের পর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজারের নীচে নেমে আসে। এক পুর স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘ম্যালেরিয়া রোধেও পুরসভা তৎপর। ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা দেখলেই তা বোঝা যাবে।’’

কিন্তু মশা গবেষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ডেঙ্গি নিয়ে যত প্রচার চলে, তার সিকিভাগ প্রচারও ম্যালেরিয়ার বরাতে জোটে না। এক গবেষকের কথায়, ‘‘ডেঙ্গির জীবাণু বহনকারী এডিস ইজিপ্টাই ছোট জায়গায় বংশবিস্তার করে। এমনকি, ছোট পাত্রেও বংশবিস্তার করতে পারে। কিন্তু ম্যালেরিয়ার মশা অ্যানোফিলিস তুলনামূলক বড় জায়গায় বা বড় পাত্রে বংশবিস্তার করে। ফলে শুধু ছোট পাত্রের দিকে নজর দিলেই হবে না।’’ আর এক গবেষক বলেন, ‘‘এডিস কামড়ায় দিনে। আর অ্যানোফিলিস রাতে। কলকাতার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ম্যালেরিয়ার মশা রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টের মধ্যে কামড়ায়। কিন্তু প্রচারে এই বিষয়টা তো উল্লেখ করতে দেখি না।’’

Dengue Malaria Fever
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy