বিধাননগর পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ফের জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক স্থানীয় বাসিন্দার। পুরসভা সূত্রের খবর, শনিবার সকালে বাগুইআটির ভিআইপি রোডের পাশে এক বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান লিটন বসু (৩০) নামে ওই যুবক। তাঁর বাড়ি জগৎপুরের পূর্ব পাড়ায়। এ নিয়ে পরপর তিন দিন একই এলাকায় তিন জনের মৃত্যু হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রবিবার থেকে ওই এলাকায় মেডিক্যাল ক্যাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুর প্রশাসন।
পুরসভা সূত্রের খবর, শুক্রবার লিটনবাবু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। শনিবার হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, তাঁর রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে এনএস-১ পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। তার পরে বেলার দিকেই মৃত্যু হয় লিটনবাবুর। এ নিয়ে পরপর তিন দিন পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের একই এলাকায় তিন জনের মৃত্যু হওয়ায় উদ্বিগ্ন পুরসভাও।
পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সঙ্গে তাঁদের একাধিক বার বৈঠক হয়েছে। ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো, জমা জল সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত মশা মারার ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে সেখানে। তার পরেও কী ভাবে জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পুর প্রশাসন। তবে তাদের দাবি, ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় নাগরিকদের সচেতনতার অভাবও রয়েছে। সেখানে জলাশয় এলাকাও যেমন বেশি, তেমনই জলের ধারে ঘরবাড়ি বানিয়ে বসবাসও করেন অনেকে।
পুরসভার সূত্রের খবর, একই এলাকায় পরপর মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে তারা। শুক্রবারই পুরসভার একটি বিশেষ দল সেখানে পরিদর্শনে গিয়েছিল। স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরসভার তরফে এলাকায় বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। ওই বরোর অধীনে থাকা মহিষবাথানের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে কিছু দিন আগে মশার দাপট বে়ড়েছিল। জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছিল। সেই পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হয়েছে। আশা করা যায়, জগৎপুরের পরিস্থিতিও দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, গোটা এলাকায় ডেঙ্গি এবং জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা এই মুহূর্তে ২৫০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন ছ’জন। বিশেষ করে একই এলাকায় তিন জনের মৃত্যু হওয়ায় দুশ্চিন্তা বেড়েছে পুরসভার কর্তাদের।
মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘‘পুরসভা থেকে পদক্ষেপ করার পরেও কেন জ্বরে মৃত্যু হল, তা খতিয়ে দেখতে হবে। সে কারণে রবিবার থেকে ক্যাম্প বসানো হচ্ছে।’’