Advertisement
E-Paper

পুজোর শহর সামলাতে হাজির ‘ছোট্ট’ ডিসি-রা

পুজোয় এ বার শহরকে উপহার দিচ্ছে পুলিশও! তবে রঙিন খামে মুড়ে নয়, রীতিমতো উর্দি-টুপি পরিয়ে। পুলিশ মহলে এই উপহারের নামও ছড়িয়ে পড়েছে। লালবাজারের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে এই ‘ছোট্ট’ ডিসি-র নাম। কোথাও তিনি কুণ্ডুরূপে অবস্থিত, কোথাও বা দাপুটে গোস্বামী। মণ্ডপ তৈরি হোক বা গেট, পুজো উদ্যোক্তাদের মূল ভরসা সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশের ডেপুটি কমিশনার।

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:০১

পুজোয় এ বার শহরকে উপহার দিচ্ছে পুলিশও! তবে রঙিন খামে মুড়ে নয়, রীতিমতো উর্দি-টুপি পরিয়ে। পুলিশ মহলে এই উপহারের নামও ছড়িয়ে পড়েছে। লালবাজারের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে এই ‘ছোট্ট’ ডিসি-র নাম। কোথাও তিনি কুণ্ডুরূপে অবস্থিত, কোথাও বা দাপুটে গোস্বামী।

মণ্ডপ তৈরি হোক বা গেট, পুজো উদ্যোক্তাদের মূল ভরসা সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশের ডেপুটি কমিশনার। উদ্যোক্তারা বলছেন, বছরে এক বার পুজো কমিটিগুলিকে নিয়ে বৈঠক করেন লালবাজারের শীর্ষকর্তারা। কিন্তু আসল কাজটা সামলাতে হয় ডিসিদেরই। সঙ্গে অফিসে থাকে তাঁদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজও। লালবাজারের খবর, শহরের অপরাধ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা নিয়ে জেরবার ডিসি-রা নতুন করে পুজোর ঝামেলা ঘাড়ে নিতে নারাজ। তাই পুজোর আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত ঝামেলা সামলাতে কলকাতা পুলিশের আটটি ডিভিশনে এক জন ইনস্পেক্টরকে প্রত্যেক ডিসি-র সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, ইনস্পেক্টরেরা পদযোগ্যতায় ডিসিদের বেশ কিছুটা নীচে। কিন্তু তাঁদের কাজের তালিকা অনেকেটা ডিসিদের মতোই। তাই

মজা করেই সহকর্মীরা নাম দিয়েছেন ‘ছোট্ট’ ডিসি।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত সপ্তাহেই লালবাজার থেকে ওই নির্দেশ জারি করা হয়। কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন বিভাগ থেকে আট জন ইনস্পেক্টর চলতি সপ্তাহেই বিভিন্ন ডিভিশনে কাজে যোগদান করেছেন। তার আগে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে তিন দিনের একটি প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে তাঁদের।

পুজোর আগে ঠিক কী করছেন এই ডিসিরা?

লালবাজার সূত্রে খবর, পুজো শুরু হতেই নানা ধরনের বিপত্তি বেধে থাকে শহরে। কখনও তা বাধে পুজো কমিটির মণ্ডপ বা ওভারহেড গেট তৈরি নিয়ে, কখনও বা এক পাড়ার সঙ্গে অন্য পাড়ার গোলমালেও। এই ধরনের গোলমাল শুরু হলে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ তো যায়-ই, কখনও আবার ডিসি অফিসের বাহিনীকেও পাঠাতে হয়। কখনও কখনও সেই বাহিনীর নেতৃত্ব দিতে যান খোদ ডিসি-ই। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, এক জন ডিসি-র উপর অনেক কাজের দায়িত্ব থাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তিনি আটকে গেলে, সে-ই কাজও থমকে যায়।

অনেকেই বলছেন, গত কয়েক বছরে পুজোর আগে থেকেই এমন ঘটনার কথা বারবার জানতে পেরেছেন লালবাজারের শীর্ষকর্তারা। তাই এ বার উৎসবের মরসুম শুরু হতেই নিযুক্ত করা হয়েছে এই ‘ছোট্ট’ ডিসিদের। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, কলকাতার বিভিন্ন বাজার এলাকায় এই সময় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এই বাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত কাজও এ বার কাঁধে তুলে নিয়েছেন ওই ‘ছোট্ট’ ডিসিরা। বিভাগীয় ডিসি ও লালবাজারের কন্ট্রোল রুমের মধ্যে সেতু বন্ধনের কাজটিও করছেন এই অফিসারেরা।

প্রাথমিক ভাবে ঠিক করা হয়েছে, আপাতত উৎসবের দু’মাসই এই অফিসারেরা কাজ করবেন। প্রয়োজন পড়লে তাঁদের পাকাপাকি ভাবে ওই পদে রেখে দেওয়া হতে পারে। এই সূত্রেই আবার অন্য কথা শোনা যাচ্ছে বাহিনীর অন্দরে। কেউ কেউ এ-ও বলছেন, সম্প্রতি সার্জেন্ট থেকে বহু অফিসার পদোন্নতি পেয়ে ইনস্পেক্টর হয়েছেন। কিন্তু তাঁদের নিয়োগ করার মতো পদ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই এই ডিসি-র সহকারি পদ তৈরি করে তাঁদের নিযুক্ত করা হয়েছে। কিছুটা উপহারের ঢঙেই।

উপহার যাঁকেই দেওয়া হোক না কেন, পুলিশের অনেকেই বলছেন, পুজোর আগে অলিগলিতে সাড়া ফেলেছেন এই নতুন অফিসারেরা।

এস এন ব্যানার্জি রোড হোক বা মানিকতলার ডিসি অফিস, সাত সকালেই কড়া বুটের শব্দে চমকে উঠছেন বাহিনীর নীচুতলার কর্মীরা।

বড় সাহেব তো আগেই এসেছেন। এ বার ছোট এলেন বোধহয়!

sibaji dey sarkar pujo akashe batase kolkata kolkata news online kolkata news Deputy Commissioner of Police Durga Puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy