Advertisement
০১ মে ২০২৪

কিনারায় ভরসা সিসিটিভি

ঘটনাস্থল ঘুরে লালবাজারের গোয়েন্দাদের মনে হয়েছে এই খুনের পিছনে কোনও সংগঠিত দলের হাত রয়েছে। বিশেষ করে যারা চুরি করতে এসে বাড়ির লোকজনকে খুন করতে পিছপা হয় না।

কৌতূহল: মলয় মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে উঁকিঝুঁকি। মঙ্গলবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

কৌতূহল: মলয় মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে উঁকিঝুঁকি। মঙ্গলবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৭ ০৮:২০
Share: Save:

নিউ আলিপুরের বৃদ্ধ খুনে রহস্যের কিনারা করতে সিসিটিভি ফুটেজই অন্যতম সূত্র বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। ইতিমধ্যেই বাড়ির কিছু দূরে থাকা সিসি ক্যামেরায় শনিবার রাত তিনটে থেকে সাড়ে তিনটের মধ্যে ধরা পড়েছে দুই ব্যক্তির আনাগোনা। সে জন্য টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের দু’দিকের সব সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন লালবাজারের গোয়েন্দা এবং নিউ আলিপুর থানার পুলিশকর্মীদের একটি দল।

রবিবার সকালে নিউ আলিপুরের ও-ব্লকের বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার মলয় মুখোপাধ্যায়ের দেহ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবার রাত দুটো থেকে রবিবার ভোর পাঁচটার মধ্যে তাঁর গলায় রবার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। তাই গোয়েন্দারা ওই সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন। লালবাজারের এক কর্তার কথায়,‘‘খুনের পুরোপুরি কিনারা না হলে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ এর জন্য সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে কয়েক জন সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করার চেষ্টা চালানো হয়েছে। সূত্রের খবর, কয়েক জনকে থানায় ডেকেও পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল ঘুরে লালবাজারের গোয়েন্দাদের মনে হয়েছে এই খুনের পিছনে কোনও সংগঠিত দলের হাত রয়েছে। বিশেষ করে যারা চুরি করতে এসে বাড়ির লোকজনকে খুন করতে পিছপা হয় না। এর জন্য তদন্তকারীরা দুষ্কৃতীদের একটি তালিকাও তৈরি করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে হাত ও পায়ের ছাপ উদ্ধার করে তা লালবাজারের তথ্যভাণ্ডারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে পুলিশ। দুষ্কৃতীরা বাড়ির আনাচকানাচ সম্পর্কে অবহিত ছিল। তারা পিছনের লোহার সিঁড়ি দিয়ে উঠে তারের জাল কেটে দরজা খুলতে না পেরে নীচের ঘরের দরজার ‘লক’ ভেঙে ভিতরে ঢোকে। সেখান থেকে সোজা মলয়বাবুর ঘরেই ঢোকে। কিন্তু গোটা ঘর লন্ডভন্ড করে গেলেও শুধু কম দামি দু’টো মোবাইল এবং অ্যাটাচি নিয়ে দুষ্কৃতীরা পালাল কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অন্য কিছু খোয়া গিয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। প্রশ্ন উঠেছে চোরেরা শুধু মলয়বাবুকেই কেন ‘টার্গেট’ করল? তিন তলায় ছেলে-বৌমার ঘরে যায়নি কেন? বাড়ির বাকি সদস্যেরা কিছু টের পেলেন না কেন, তা নিয়ে এখনও ধন্দে গোয়েন্দারা। সূত্রের দাবি, তদন্তের আওতার বাইরে রাখা হচ্ছে না কাউকেই।

লালবাজার জানিয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে মলয়বাবুকে। আততায়ীরা প্রথমে চাদর দিয়ে মলয়বাবুর মুখ এবং নাক চাপা দেয়। তখনই তাঁর নাকের হাড় ভেঙে যায়। পরে রবার ব্যান্ড গলায় পেঁচিয়ে খুন করা হয়। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, শ্বাসরোধ করার জন্যই বৃদ্ধের কান ও নাক দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। বৃদ্ধের পায়ে আঘাতের চিহ্ন মেলায় তদন্তকারীদের দাবি, আততায়ীরা তাঁর পা চেপে ধরে ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CCTV Elederly Murder Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE