সোমবার রাত সাড়ে ৩টে। সুনসান যশোর রোড। হঠাৎই বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল দত্তপুকুর থানার চালতাবেড়িয়ার বাসিন্দাদের। তাঁরা এসে দেখেন, রাস্তার ধারের নয়ানজুলিতে দাউদাউ জ্বলছে একটি ডিজেল ট্যাঙ্কার। চালকের কেবিনে ছটফট করছেন এক ব্যক্তি। কিন্তু আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল, ট্যাঙ্কারের ধারেকাছে ঘেঁষতে পারেননি কেউ।
শেষে ঘণ্টা পাঁচেকের চেষ্টায় আগুন নিভিয়ে দমকল ওই ব্যক্তির ঝলসানো দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, দেহটি ট্যাঙ্কারের খালাসির। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। উদ্ধার হয়নি ট্যাঙ্কারের মালিকের পরিচয়ও। পুলিশের ধারণা, দুর্ঘটনার সময়ে গাড়ি ফেলে পালিয়ে যান চালক। এই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত যশোর রোডের বনগাঁর দিকে যাওয়ার লেনে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। আটকে পড়ে বাংলাদেশগামী বাস এবং বেশ কিছু লরি।
পুলিশ জানিয়েছে, ডিজেল ভর্তি ট্যাঙ্কারটি বারাসত থেকে বনগাঁর দিকে যাচ্ছিল। চালকের অসাবধানতায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটি নয়ানজুলিতে পড়ে যায়। ঘর্ষণের ফলে অতিরিক্ত তাপে আগুন ধরে যায় ট্যাঙ্কারে। চার দিকে ডিজেল ছড়িয়ে পড়ায় আগুনও অল্প ক্ষণের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলের পাশেই রয়েছে একটি পেট্রোল পাম্প। বিকট শব্দ শুনে সেখানকার কর্মীরা ছুটে আসেন। ভিড় করেন এলাকার বাসিন্দারাও। আগুনের তীব্রতা এতই ছিল যে, কেউই ট্যাঙ্কারটির ধারে যেতে পারেননি।
খবর পেয়ে দমদম, মধ্যমগ্রাম, বারাসত ও হাবড়া থেকে দমকলের চারটি ইঞ্জিন পৌঁছয়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ আগুন কিছুটা আয়ত্তে আসে। এর জেরে যশোর রোডে যান চলাচল পুরোপুরি ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ দিন সকাল সাড়ে ৭টার পরে বারাসতগামী লেনে যান চলাচল ফের শুরু হয়।
এরই মধ্যে রটে যায়, যে কোনও সময়ে ট্যাঙ্কারটি ফেটে যেতে পারে। তার ফলে আরও আতঙ্ক ছড়ায়। বাসিন্দারা ভয়ে ছোটাছুটি শুরু করে দেন। বনগাঁমুখী লেন বন্ধ থাকার জন্য রাস্তার এক দিকে গাড়ির লাইন পড়ে যায়। শেষে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বনগাঁমুখী লেনে গাড়ি চলাচল শুরু হয়।
ট্যাঙ্কারটির নম্বর প্লেট পুড়ে যাওয়ায় পুলিশ সেটির কোনও তথ্যই পায়নি। তারা জানিয়েছে, বিভিন্ন পাম্পের সঙ্গে কথা বলে ট্যাঙ্কারটি কোথায় যাচ্ছিল, তা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।