মুরারিপুকুর রোডের সেই বাড়িটি। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
শহরে ফের ভেঙে পড়ল একটি বিপজ্জনক বাড়ি। যে ঘটনা বুঝিয়ে দিল, জীর্ণ বাড়ি নিয়ে পুরসভা এখনও কতটা উদাসীন।
এক বছর আগেও বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে পড়লে বাঁধা গতে পুর প্রশাসনের জবাব ছিল, আইন নেই। তাই বাড়িটা ভেঙে দেওয়া দরকার বুঝলেও মানবিক কারণে বাসিন্দাদের হটিয়ে তা করা যেত না। তবে, গত সেপ্টেম্বরে পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটের একটি জীর্ণ বাড়ি ভেঙে দু’জনের মৃত্যুর ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বিপজ্জনক বাড়ির স্থায়ী সমাধানে নতুন আইনও তৈরি করে সরকার। এপ্রিলে তার গেজেট বেরোয়। নতুন আইনে পুরসভা বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে ফেলার পূর্ণ ক্ষমতা পায়। মেয়র জানান, জুলাইয়ের শুরু থেকে তা চালুও হয়ে যাবে। কিন্তু জুলাই প্রায় শেষ। একটি বিপজ্জনক বাড়িতেও হাত পড়েনি।
এর মধ্যেই সোমবার উল্টোডাঙার মুরারিপুকুর রোডে ভেঙে পড়ল আর একটি বিপজ্জনক বাড়ি। তাতে অবশ্য কেউ হতাহত হননি। তবে যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে আরও কিছু বিপজ্জনক বাড়ির হাল নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে পুরকর্তাদের। পুলিশ জানিয়েছে, ৪৪বি মুরারিপুকুর রোডের ওই দোতলা বাড়ির একাংশ এ দিন সকালে ভেঙে পড়ে। দু’টি তল মিলিয়ে ৮০ জন ভাড়াটের বাস। বাড়ি ভেঙে আটকে পড়েন কয়েক জন। আশপাশের লোকজন এসে তাঁদের উদ্ধার করেন। ওই বাড়ির বাসিন্দা অনিতা অধিকারী বলেন, ‘‘বড় বিপদ থেকে বেঁচেছি।’’ স্থানীয়দের অভিযোগ, বাড়িটির সংস্কারের কথা বলা হলেও মালিক কান দেননি। মালিকের অবশ্য এ দিন খোঁজ মেলেনি।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে পুরো বাড়িটি ঘিরে রাখে। পরে পুরসভার বিল্ডিং দফতরের কর্মীরা বাড়ির বিপজ্জনক অংশ ভেঙে দেন। পুরসভার তিন নম্বর বরোর চেয়ারম্যান অনিন্দ্যকিশোর রাউত জানান, ২০১১ সালে ওই বাড়িটিতে বিপজ্জনক নোটিস ঝুলিয়ে দিয়েছিল পুরসভা। মালিককেও সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি কোনও ব্যবস্থা নেননি। আসলে সে সময়ে নোটিস লাগানো ছাড়া পুরসভার আর কিছু করণীয় ছিল না বলে জানান বরোর ইঞ্জিনিয়ারেরাও।
এখন তো নতুন আইন হয়েছে। তা প্রয়োগ হচ্ছে না কেন?
পুরসভার ডিজি (বিল্ডিং) অনিন্দ্য কারফর্মা বলেন, ‘‘প্রথম ধাপে বিপজ্জনক বাড়ি চিহ্নিত করে তা খালি করার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। পরে বাড়ি সংস্কারের জন্য নোটিস পাঠানো হবে মালিককে। তিনি রাজি না হলে পুরসভা টেন্ডার ডেকে কোনও বেসরকারি সংস্থাকে সেই বাড়ি ভাঙার দায়িত্ব দেবে।’’
আর কত দিন? মেয়র বলেন, ‘‘বিপজ্জনক বাড়ির তালিকা তৈরি হচ্ছে। খুব শীঘ্রই বাড়ি ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy