(বাঁ দিকে) দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে ভেঙেছে একটি বাড়ির দরজা। (ডান দিকে) এক আহত। সোমবার, কসবায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
মধ্যরাতে দুষ্কৃতী-তাণ্ডবে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কসবার বোসপুকুর এলাকা। একাধিক বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি বাসিন্দাদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মারধরের হাত থেকে রেহাই পাননি বাড়ির মহিলারাও। খবর পেয়ে কসবা থানার বিশাল বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকাবাসীর দাবি, প্রোমোটিং নিয়ে বিবাদের জেরেই এই হামলা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে ১৩০, বোসপুকুর রোডে। ওই রাস্তা সংলগ্ন এলাকায় একটি খেলার মাঠে বাস রাখা নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত। জানা গিয়েছে, মাঠে দাঁড় করানো ছিল হাওড়া-পিকনিক গার্ডেন রুটের একটি মিনিবাস। স্থানীয় কয়েক জন যুবক খেলার আগে কন্ডাক্টরকে বাসটি সরাতে বললে দু’পক্ষে বচসা বাধে। তা গড়ায় হাতাহাতিতে। পরে ওই কন্ডাক্টর পাশের ১৬ নম্বর বস্তির ছেলেদের ডেকে আনলে ঝামেলা আরও বড় আকার নেয়। তখনকার মতো বিষয়টি মিটে গেলেও রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ বোসপুকুর রোডে বেশ কয়েকটি বাড়িতে চড়াও হয় ৪০-৫০ জন দুষ্কৃতী।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, লাঠি, বাঁশ, বন্দুক, বোতল নিয়ে এলাকায় ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। দরজা ভেঙে একাধিক বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করা হয় টিভি, মোটরবাইক, আসবাবপত্র। মহিলারা বাধা দিতে গেলে তাঁদের উপরেও বাঁশ ও লাঠি নিয়ে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। হামলায় গুরুতর জখম হন বিশ্বজিৎ দাস ও রূপা রায় নামে দু’জন। বন্দুকের বাট দিয়ে বিশ্বজিৎকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
স্থানীয়দের বক্তব্য, এলাকার একটি জমিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রোমোটিং করার দাবি জানাচ্ছিল ১৬ নম্বর বস্তির কয়েক জন যুবক। কিন্তু তাতে কেউ রাজি না হওয়ায় মাসখানেক ধরে নানা ভাবে তাঁদের উপরে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। বেশ কয়েক বার তাঁদের হুমকিও দেওয়া হয় বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। তাঁদের আরও অভিযোগ, রবিবার রাতে খেলার মাঠের গন্ডগোলের সূত্র ধরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। কয়েক জনকে বেধড়ক মারধর করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা পূজা রায় বলেন, ‘‘ফুটবল মাঠের ঝামেলায় আমাদের পাড়ার কেউ ছিলেন না। কিন্তু রাতে বাইরে থেকে ছেলেদের এনে হামলা চালানো হয়। প্রোমোটিংয়ের জন্য জমি না দিলে আবার এসে হামলা করা হবে বলে ওরা হুমকি দিয়ে গিয়েছে।’’
রাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বাসিন্দারা। খবর পেয়ে যায় কসবা থানার পুলিশ। সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন কসবা থানার আধিকারিকেরা। অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
প্রসঙ্গত, মাস ছয়েক আগে প্রোমোটিং নিয়ে দুই গোষ্ঠীর বিবাদে ভরসন্ধ্যায় ধুন্ধুমার বেধেছিল আনন্দপুর থানা এলাকার গুলশন কলোনিতে। দুই গোষ্ঠী একে অপরকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন দু’জন। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার প্রোমোটিং নিয়ে বিবাদ সামনে এল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy