Advertisement
E-Paper

রাতে ফোন করলেই ডাক্তার, প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক

এ বার একই রকম পরিকল্পনা করেছে দক্ষিণ দমদম পুরসভা। তবে শুধু প্রবীণ নাগরিক নয়, সকলের জন্য। কিন্তু প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়ে খোদ পুরকর্তারাই।

সৌরভ দত্ত ও কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৫:৫৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

রোগী চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করবেন না। তাঁর কাছেই পৌঁছে দেওয়া হবে পরিষেবা। রাতে হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে একটি বার শুধু ফোন করতে হবে। তা হলেই দরজায় পৌঁছে যাবেন চিকিৎসক। প্রবীণ নাগরিকদের জন্য এই পরিকল্পনা করেছিল বিধাননগর পুরসভা। তা অবশ্য বাস্তবায়িত হয়নি আজও।

এ বার একই রকম পরিকল্পনা করেছে দক্ষিণ দমদম পুরসভা। তবে শুধু প্রবীণ নাগরিক নয়, সকলের জন্য। কিন্তু প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়ে খোদ পুরকর্তারাই। পুরসভা সূত্রে খবর, পুর অধিবেশনে এ নিয়ে খোদ চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান পারিষদের (স্বাস্থ্য) সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়িয়ে পড়েন এক কাউন্সিলর।

পুরসভা সূত্রে খবর, ঠিক হয়েছে, নাগেরবাজার পুর হাসপাতালে রাত দশটা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত এক জন চিকিৎসক, এক জন নার্স ও কয়েক জন স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন। ফোন করলেই চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়িতে হাজির হবেন। কারও মৃত্যু হলে ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ লিখে দেওয়ার জন্যও ফোন করা যাবে বলে জানান চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) গোপা পাণ্ডে। প্রকল্পের নাম ‘অন কল ডক্টর অ্যাট নাইট’।

পুরসভার আশা, চলতি মাসের মধ্যেই এই পরিষেবা চালু করা যাবে। রাতের এই ডিউটির জন্য চিকিৎসককে ঘণ্টা-পিছু ৫০০ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থাৎ, ন’ঘণ্টার পরিষেবা দিতে শুধু চিকিৎসকের পিছনেই দৈনিক সাড়ে চার হাজার টাকা খরচ! চিকিৎসক নিয়োগের নাম করে ‘পাইয়ে দেওয়ার’ চেষ্টা চলবে কি না, সে নিয়ে অভিযোগ তোলেন কেউ কেউ।

পুর বোর্ডের বৈঠকে প্রকল্পের বিরোধিতা করেন নয় নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুরজিৎ রায়চৌধুরী। গত সপ্তাহে রোগীদের ফুল-মিষ্টি দিতে হাসপাতালে যান সুরজিৎ। তাঁর দাবি, তখন সেখানে কোনও চিকিৎসক ছিলেন না। এর পরেই নাগরিকদের করের টাকা খরচ করে ‘ব্যয়বহুল’ ওই নৈশ প্রকল্প চালুর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

পুরসভা সূত্রের খবর, সুরজিৎবাবুর প্রশ্নের জবাবে গোপাদেবী দাবি করেন, তাঁদের পুর হাসপাতালে চিকিৎসকেরা যে পরিষেবা দেন, তা অন্যদের কাছে দৃষ্টান্ত হতে পারে। এ কথায় উত্তেজিত হয়ে পড়েন সুরজিৎবাবু। চেয়ারম্যান বুঝিয়ে-সুঝিয়ে দু’পক্ষকে থামান।

সুরজিৎবাবু বলেন, ‘‘উত্তেজিত হইনি। বলতে চেয়েছি, মাসে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা খরচ করে প্রকল্প হচ্ছে। মানুষের করের টাকা জলে যাবে না তো! দিনেই হাসপাতালে চিকিৎসক থাকেন না। রাতে তা হলে কী হবে?’’

ওই বৈঠক প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি গোপাদেবী। তবে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য আইন মেনেই চিকিৎসকদের নিয়োগ করা হবে। তার জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে রাতে চিকিৎসকেরা যে হারে পারিশ্রমিক পান, পুরসভাও তা দেবে।

পুরসভার বৈঠক প্রসঙ্গে পুর চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘সুরজিৎ এমনিতেই জোরে কথা বলেন। এমন কিছু ঘটেছে বলে মনে পড়ছে না।’’

এ দিকে, বিধাননগরের প্রাক্তন পুর চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানান, মূলত প্রবীণ নাগরিকদের কথা ভেবেই তাঁরা ওই প্রকল্প করতে চেয়েছিলেন। অ্যাম্বুল্যান্স থেকে চিকিৎসক, নার্স— সব ব্যবস্থাই করা হয়েছিল। প্রবীণদের তালিকাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শেষমেশ প্রকল্পটি চালু হয়নি।

Municipal Project Doctor Nagerbazar Municipal Hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy