Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in Kolkata

Coronavirus in Kolkata: করোনা সংক্রমণ বাড়ার ইঙ্গিতে চিন্তায় ডাক্তারেরা

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও যে ভাবে সাধারণ মানুষ মাস্ক পরা কার্যত ছেড়ে দিয়েছেন, তাতে চিন্তিত পুর চিকিৎসকেরা।

ছবি পিটিআই।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২২ ০৬:০২
Share: Save:

করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের পরে গত ১১ এপ্রিল কলকাতা পুরসভা এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল শূন্য। গত এক মাসে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১০ থেকে ২০-র মধ্যেই ঘোরাফেরা করেছে। তবে গত এক সপ্তাহে এই সংখ্যা আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে বলেই পুরসভা সূত্রের খবর। এর মধ্যে পুরসভার ১৬ নম্বর বরো এলাকায় জোকার ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট’ (আইআইএম)-এ হঠাৎ করে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। যদিও পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, যেটুকু সংক্রমণ বেড়েছে, তাতে এখনও ভয়ের কারণ নেই। তবে, নিয়মিত মাস্ক পরার পাশাপাশি সকলকে করোনার প্রতিষেধক নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন পুরসভার চিকিৎসকেরা।

পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সাত, আট, দশ এবং বারো নম্বর বরোয় গত দু’মাসের অধিকাংশ দিনেই যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা শূন্য ছিল, গত এক সপ্তাহে সেখানে বেশির ভাগ দিনেই কেউ না কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত ১৩ মে শহরে সেই সংখ্যা ছিল ২৩। আবার ১৪ মে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৪। যদিও ১৫ ও ১৬ মে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় যথাক্রমে আট ও পাঁচে। পুর স্বাস্থ্য বিভাগের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘আক্রান্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকলে তখনই বিপদ। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, গত কয়েক দিনে সেই সংখ্যা বেড়ে আবার কমেছেও। এতে এখনই ভয়ের কারণ নেই।’’

আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকলেও বিষয়টি হালকা ভাবে নিতে নারাজ পুর চিকিৎসকেরা। মেয়র ফিরহাদ হাকিমেরও আর্জি, ‘‘দয়া করে সবাই মাস্ক পরুন। মাস্ক কেবল করোনা নয়, অন্য অনেক রোগও প্রতিরোধ করে।’’ এর সঙ্গেই সমস্ত নাগরিকের কাছে প্রতিষেধক নেওয়ার আবেদন জানান মেয়র। পুর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শহরে ১৫-১৭ বছর বয়সি বাসিন্দাদের ৫০ শতাংশের এখনও প্রতিষেধক নেওয়া বাকি রয়েছে। আর ১৭-১৮ বছর বয়সিদের মাত্র ২৫ শতাংশ প্রতিষেধক নিয়েছে।

এ দিকে, জোকার আইআইএমে সোমবার নতুন করে আর কেউ করোনায় আক্রান্ত হননি বলেই পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে। আক্রান্ত পড়ুয়ারা সকলেই উপসর্গহীন এবং সুস্থ রয়েছেন। পুরসভার তরফে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পুর চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, আক্রান্তেরা অন্য রাজ্য থেকে করোনাভাইরাস বহন করে এনেছেন। তাঁদের বেশির ভাগই মহারাষ্ট্র, বিহার ও দিল্লির বাসিন্দা। তাঁদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা আইসোলেশনে রয়েছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও যে ভাবে সাধারণ মানুষ মাস্ক পরা কার্যত ছেড়ে দিয়েছেন, তাতে চিন্তিত পুর চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, জুলাই-অগস্ট নাগাদ ফের চতুর্থ ঢেউ আসার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সচেতন থাকা উচিত। দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের বক্ষরোগ চিকিৎসক অনির্বাণ নিয়োগী বলেন, ‘‘এখন করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ উঠে গিয়েছে। দেশ-বিদেশ থেকে মানুষ অবাধে শহরে আসছেন। তবে সংক্রমণ খুব ধীর গতিতে হলেও বাড়ছে। এটিকে হালকা ভাবে নেওয়া একদম ঠিক নয়। এখন মাস্ক পরাতে প্রশাসনকে কঠোর ভূমিকা নিতে হবে। মানুষকেও সচেতন হতে হবে।’’

জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেন, ‘‘আক্রান্তের সংখ্যা মারাত্মক বেড়ে গিয়েছে, তেমনটা নয়। কিন্তু সংক্রমণ ক্রমাগত বাড়তে থাকলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। একই সঙ্গে জিনোম সিকোয়েন্সে জোর দিয়ে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখতে হবে।’’

তিনি আরও জানাচ্ছেন, যে অঞ্চলগুলিতে একসঙ্গে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন, সেখানে তার কারণ খুঁজতে আরও কড়া নজরদারি করতে হবে। কারণ ডেল্টার মতো কোনও স্ট্রেন ফের চলে এলে বিপদ বাড়বে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Kolkata COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE