Advertisement
E-Paper

সংরক্ষণ ৯০%, অন্য প্রশ্নে ধর্না শুরু যাদবপুরে

পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা ছাত্রছাত্রীদের জন্য ৯০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের প্রস্তাব সোমবার অনুমোদন করল কর্মসমিতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৯ ০২:৪১
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

প্রশ্ন উঠেছিল অনেক। বিতর্কও হয়েছে বিস্তর। তার মধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে ‘ডোমিসাইল কোটা’ বা পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা ছাত্রছাত্রীদের জন্য ৯০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের প্রস্তাব সোমবার অনুমোদন করল কর্মসমিতি।

সংরক্ষণ-জট কাটানোর গুরুত্বপূর্ণ দিনেও অশান্তির অভিযোগ এড়াতে পারল না যাদবপুর। সেন্টার ফর ডিসঅ্যাবিলিটি স্টাডিজে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে এক দল পড়ুয়া এ দিন প্রথমে কর্মসমিতির বৈঠকস্থলে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। রাতে তাঁরাই বাইরে শুরু করেন অবস্থান। ভিতরে আটকে পড়েন উপাচার্য, রেজিস্ট্রার-সহ কর্মসমিতির সদস্যেরা। অবিলম্বে ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা বসানোর দাবিতে বিক্ষোভ দেখান অন্য এক দল পড়ুয়াও।

সংরক্ষণ নিয়েও সাময়িক একটা জট তৈরি হয়েছিল এ দিন। পড়ুয়াদের একাংশ কর্মসমিতিতে গিয়ে জানান, তাঁদের অন্ধকারে রেখে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিষয়টি পড়ুয়াদের বোঝাতে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ৯০% সংরক্ষণের প্রস্তাব নেওয়া হয়েছিল ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের বৈঠকে। কর্মসমিতি সেই প্রস্তাবকে মান্যতা দেওয়ায় বিষয়টি এ বার রাজ্য সরকারের কাছে যাবে। সরকারের সম্মতি পেলে সংরক্ষণ চালু হবে আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকেই।

শিক্ষা শিবিরের অনেকের বক্তব্য, সংরক্ষণের বিষয়টি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও ভাবমূর্তির সঙ্গে খাপ খায় না। কেন্দ্র যাদবপুরকে ‘ইনস্টিটিউট অব এমিনেন্স’ খেতাবের জন্য তালিকাভুক্ত করেছে। সে-ক্ষেত্রে রাজ্যের পড়ুয়াদের জন্য সংরক্ষণ চালু করা কতটা যুক্তিযুক্ত, আগে সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। তা সত্ত্বেও কী ভাবে সংরক্ষণ চূড়ান্ত হল? বারবার ফোন এবং মেসেজ করেও উপাচার্যের বক্তব্য জানা যায়নি।

ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ১৬টি বিভাগের মধ্যে ১৩টিই সংরক্ষণের পক্ষে সওয়াল করেছিল। প্রথমে সংরক্ষণ চায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। তার পরে একে একে সকলেই মত দেয়। ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন এবং পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষকেরা আলাদা ভাবে এ রাজ্যের পড়ুয়াদের জন্য সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই বলেই মত দিয়েছিলেন। কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষকেরা দ্বিধাবিভক্ত ছিলেন। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষকদের একাংশ এ দিন সংরক্ষণের দাবিতে কর্মসমিতিতে স্মারকলিপি দেন।

অনেক আগে যাদবপুরে সংরক্ষণ ছিল। আশির দশকে তা উঠে যায়। ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ অনেক রাজ্যেই সরকার নিয়ন্ত্রিত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সংরক্ষণ আছে। কোথাও কোথাও ১০০% আসনই সংরক্ষিত। কল্যাণী, জলপাইগুড়ির রাজ্য সরকার নিয়ন্ত্রিত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেও সংরক্ষণ রয়েছে। রাজ্যের পড়ুয়াদের জন্য সংরক্ষণ আছে আইআইইএসটি শিবপুর, এনআইটি দুর্গাপুরেও। যাদবপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার খরচ অনেক কম। বছরে ২০০০ টাকা টিউশন ফি। তাই শিক্ষকদের মধ্য থেকে দাবি উঠছিল, রাজ্য সরকারের আর্থিক সহায়তায় চলা এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে এই রাজ্যের পড়ুয়াদের গুরুত্ব দেওয়া হোক।

তবে এর বাইরেও কিছু কারণ রয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের খবর। ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টিতে এখন ভিন্‌ রাজ্যের অনেক পড়ুয়া আছেন। এমনকি কোনও কোনও বিভাগে রাজ্যের পড়ুয়ার তুলনায় তাঁদের সংখ্যা বেশি। প্রায় ৫০ শতাংশ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াই ভিন্‌ রাজ্যের। কোনও কোনও বিভাগে ভিন্‌ রাজ্যের পড়ুয়া বেশি। অভিযোগ, তাঁদের অনেকে ভাল করে ক্লাসে পড়া বুঝতে পারেন না। কিছু ক্ষেত্রে হিন্দিতে পড়ানোরও দাবি তুলেছেন তাঁরা। অনেকের পরীক্ষার ফলও আশানুরূপ নয়। ক্যাম্পাসে নীতিপুলিশগিরির সঙ্গেও তাঁদের কেউ কেউ যুক্ত বলে অভিযোগ।

Domicile Quota Jadavpur University
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy