Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta News

‘উদ্দেশ্যহীন ভাবে বাঁচতে চাইনি’ পুলিশকে বললেন গরফার অনিন্দিতা

বৃহস্পতিবার এম আর বাঙুর হাসপাতালে অনিন্দিতার বয়ান রেকর্ড করতে যান গরফা থানার আধিকারিকরা। তাঁদের দেখেই অনিন্দিতা প্রশ্ন করেন, “আমাদের বাঁচালেন কেন?”

গড়ফার এই ফ্ল্যাটেই অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তিন জনকে। —ফাইল চিত্র।

গড়ফার এই ফ্ল্যাটেই অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তিন জনকে। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৯ ২১:৩০
Share: Save:

ছেলের সুস্থ হওয়ার কোনও আশা নেই। মা মারা গেলে আয়ের কোনও সংস্থান নেই। আর সেই কারণেই সপরিবারে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন গরফার অনিন্দিতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবার এম আর বাঙুর হাসপাতালে অনিন্দিতার বয়ান রেকর্ড করতে যান গরফা থানার আধিকারিকরা। তাঁদের দেখেই অনিন্দিতা প্রশ্ন করেন, “আমাদের বাঁচালেন কেন?” তদন্তকারী অফিসারার এবং চিকিৎসকরা তাঁকে শান্ত করতে গেলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে বাঁচতে চাই না। তাই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।”

অনিন্দিতার লেখা সুইসাইড নোট এবং তাঁর বয়ান থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, ২০১২ সাল থেকেই স্বামী রাজীবের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে তাঁর। এর মধ্যেই মায়ের পেনশনের উপর ভরসা করে শুরু হয় ছেলে ঋষভের চিকিৎসা। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে প্রায় ন’বার ছেলেকে নিয়ে চেন্নাই গিয়েছিলেন অনিন্দিতা চিকিৎসার জন্য। কিন্তু চিকিৎসায় সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। এ দিকে প্রচুর খরচ হয়ে যাচ্ছিল চিকিৎসার পেছনে। কোনও আশার আলো দেখতে পাচ্ছিলেন না অনিন্দিতা এবং তাঁর মা বাসন্তী। অর্থ কষ্ট বাড়তে থাকে। বাড়ির সমস্ত গয়না বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। সেই অবস্থায় রীতিমতো পরিকল্পনা করেই ১৫ বছরের ছেলে এবং ৬৫ বছরের মাকে নিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন অনিন্দিতা।

অনিন্দিতার সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, ছেলেকে চিকিৎসকের দেওয়া ঘুমের ওষুধই বেশি মাত্রায় খেয়েছিলেন তাঁরা। ২৯ ডিসেম্বর তাঁরা সুইসাইড নোট লিখলেও ঘুমের বড়ি থান ৩১ তারিখ।

তদন্তকারীরা বলেন,“আমরা যখন দরজা ভাঙি তখন বিছানার উপর বসা অবস্থায় পাই বাসন্তীকে। পা মাটিতে। মাথাটা ঝুলে বুকের উপর। বাকিরা বিছানায় শুয়ে।” তদন্তকারীদের ধারণা সম্ভবত ওষুধ খাওয়ার পরও কোনও অস্বস্তি থেকে উঠে বসেছিলেন বাসন্তী। আর সেই অবস্থাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। মুখের ওই অংশে বাতাস না লাগায় সেখান থেকেই পচন শুরু হয়। তদন্তকারীরা এ দিন অনিন্দিতার স্বামী রাজীবকেও ডেকে পাঠিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলার জন্য। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অনিন্দিতা এবং ঋষভের অবস্থা স্থিতিশীল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE