E-Paper

চার রাস্তা সারাইয়ের জের, সারা রাত তীব্র যানজট হাওড়ায়

গত জুন মাসে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপরে ছয় লেনের একটি এলিভেটেড করিডর তৈরির জন্য হাওড়া শহরের প্রধান তিনটি রাস্তার দায়িত্ব সরকারিভাবে দেওয়া হয় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের হাতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৫৮
নাজেহাল: রাতভর যানজটের রেশ কাটেনি শনিবার সকালেও। হাওড়ার কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে।

নাজেহাল: রাতভর যানজটের রেশ কাটেনি শনিবার সকালেও। হাওড়ার কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

বৃষ্টি কমতেই কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে এলিভেটেড করিডরের কাজেরজন্য বিকল্প রাস্তা সারানোর কাজ শুরু করেছিল রেলওয়ে বিকাশনিগম লিমিটেড (আরভিএনএল)। যার জেরে প্রায় ১৪ ঘণ্টা ধরে তীব্র যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে রইল কলকাতায় ঢোকা এবং বেরোনোর প্রধান তিনটি রাস্তা— ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে এবং আন্দুল রোড। ফলে,শুক্রবার রাতে বাড়ি ফেরার পথে নাজেহাল হলেন অসংখ্য যাত্রী। এমনকি, অনেককে সারা রাতগাড়িতে বসেই কাটাতে হয়েছে। সেই রেশ ছিল শনিবারও।

গত জুন মাসে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপরে ছয় লেনের একটি এলিভেটেড করিডর তৈরির জন্য হাওড়া শহরের প্রধান তিনটি রাস্তার দায়িত্ব সরকারিভাবে দেওয়া হয় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের হাতে। সেই তিনটি রাস্তা হল, আন্দুল রোড, হাওড়া-আমতা রোড ও ড্রেনেজ ক্যানাল রোড। হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষএই তিনটি রাস্তা সংস্কার ও চওড়া করার জন্য আর একটি কেন্দ্রীয়সংস্থা রেলওয়ে বিকাশ নিগম লিমিটেডকে দায়িত্ব দেয়। কিন্তুদায়িত্ব নিয়েও টানা বৃষ্টির জেরে তিনটি রাস্তায় মেরামতির কাজ শুরু করতে পারেনি ওই সংস্থা। সম্প্রতি জেলাশাসক ও হাওড়া শহরের নগরপালের সঙ্গে আরভিএনএল কর্তৃপক্ষের বৈঠকের পরে ঠিক হয়, ওই তিনটি রাস্তার সঙ্গেকোনা এক্সপ্রেসওয়ের যে সবজায়গায় বর্ষায় পিচের আস্তরণউঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে, সেই সব অংশও দ্রুত মেরামত করা হবে।

হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতায় ঢোকার এবং কলকাতা থেকে আসার এইচারটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা মেরামতকরার কাজ শুরু হতেই তীব্র যানজট তৈরি হয় আন্দুল রোড, হাওড়া-আমতা রোড, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ও ড্রেনেজ ক্যানাল রোডে।অন্য দিকে, ছ’নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে যে সব যানবাহন এই চারটি রাস্তা দিয়ে কলকাতার দিকেযাওয়ার চেষ্টা করছিল, সেগুলিও যেতে না পেরে জাতীয় সড়কেআটকে পড়ে। ফলে, রাত যত বেড়েছে, জাতীয় সড়কে গাড়ির লাইনও তত দীর্ঘ হয়েছে। একইভাবে কলকাতা থেকে যে সব গাড়ি জাতীয় সড়ক ধরার জন্য কোনা এক্সপ্রেসওয়ে বা আন্দুল রোড ধরেছিল, সেগুলিও মাঝপথে থমকে গিয়েছে। সারা রাত ধরে চলা এই যানজট ছাড়াতে হিমশিম খেতে হয়েছে ট্র্যাফিক পুলিশকে।

শনি-রবিবার ছুটি থাকায় গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য ধর্মতলাথেকে বাসে চেপেছিলেন সুবুদ্ধি মাইতি। মেদিনীপুরের ডেবরার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি বললেন, ‘‘বেলেপোল মোড় থেকে সাঁতরাগাছি পৌঁছতেই দু’ঘণ্টা লেগেছে।আমি বাধ্য হয়ে নেমে অন্য গাড়িধরে কলকাতায় ফিরে এসেছি।’’একই অভিজ্ঞতা হয়েছে আন্দুল বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা নিতাই সামন্তের। তিনি বলেন, ‘‘রাত ৮টায় বাসে চেপে রাত দেড়টায় বাড়ি পৌঁছেছি।’’

কিন্তু এত যানজট হল কেন?

আরভিএনএলের এক পদস্থ কর্তা বললেন, ‘‘কলকাতায় যাওয়া-আসার মূল চারটি রাস্তাইঅর্ধেক বন্ধ করতে হয়েছিল। অন্য দিকে, জাতীয় সড়কেও প্রচুর গর্ত। তা ছাড়া, প্রচুর ট্র্যাফিক। তাই রাতে কাজ শুরু করেও সামলানোযায়নি।’’ পরিস্থিতি সামলাতে শনিবার দুপুর থেকেই পথে নামেন হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) সুজাতাকুমারী বীণাপাণি। তিনি বলেন, ‘‘কোনা এক্সপ্রেসওয়ের বিকল্প রাস্তা মেরামতির জন্যযানজট হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু পরে তা ঠিক হয়ে গিয়েছে।’’ ডিসি(ট্র্যাফিক) এ কথা বললেও একসঙ্গে চারটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা মেরামতির জন্যই যে এতটা তীব্র যানজট, তা মানছেন অন্য ট্র্যাফিক আধিকারিকেরাও।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

traffic jam Howrah Kona Expressway

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy