E-Paper

এখনও দেরি আছে বোধনের, দুপুরের ভিড় জনজোয়ারের চেহারা নিয়েছিল দ্বিতীয়ার সন্ধ্যা থেকেই

মহালয়ার আগে থেকে পুজোর উদ্বোধন শুরু হয়েছে শহরে। মহালয়া পেরোতেই অধিকাংশ পুজো খুলে দেওয়া হয়েছে দর্শকদের জন্য। সোমবার উত্তর থেকে দক্ষিণে ভিড়ের ছবি ছিল একই রকম।

চন্দন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৪৬
An image of Crowd

জনস্রোত: শ্রীভূমির মণ্ডপ দেখতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। সোমবার সন্ধ্যায়। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।

পাঁজি মেনে পুজোর বোধনের এখনও দেরি থাকলেও ভিড়ের বোধন কার্যত হয়ে গিয়েছে দ্বিতীয়ার আগেই। সকাল পেরিয়ে বেলার দিকে কমবয়সিদের ভিড় জনস্রোতের চেহারা নিল বিকেল গড়াতেই। সন্ধ্যায় মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড়ের চাপ যত বাড়ল, ততই বাড়ল ঘরমুখী আমজনতার ভোগান্তি। গাড়ির লম্বা লাইনে কেউ দাঁড়িয়ে থাকলেন ৪৫ মিনিট। কেউ আটকে থাকলেন ঘণ্টাখানেকেরও বেশি।

মহালয়ার আগে থেকে পুজোর উদ্বোধন শুরু হয়েছে শহরে। মহালয়া পেরোতেই অধিকাংশ পুজো খুলে দেওয়া হয়েছে দর্শকদের জন্য। সোমবার উত্তর থেকে দক্ষিণে ভিড়ের ছবি ছিল একই রকম। কেউ স্কুলব্যাগ কাঁধে নিয়ে মণ্ডপ ঘুরেছে, কেউ আবার ভিড় এড়াতে আগেভাগেই মণ্ডপে চলে এসেছেন। কাঁধে স্কুলব্যাগ ঝোলানো তিন কচিকাঁচাকে নিয়ে হাতিবাগানের মণ্ডপে ঢুকছিলেন এক যুবক। ভিতরে ঘুরতে ঘুরতেই যুবকের হাত ছাড়িয়ে প্রতিমার সামনে চলে গেল দু’জন। যুবকটি দ্রুত গিয়ে আবার তাদের হাত ধরে ধমকের সুরে বললেন, ‘‘এমন দুষ্টুমি করলে কিন্তু আজই শেষ! কাল আর স্কুল শেষে ঠাকুর দেখাতে নিয়ে যাব না। এখনও কিন্তু অনেক পুজো দেখা বাকি!’’ হাতিবাগানের পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা শাশ্বত বসু বললেন, ‘‘মণ্ডপের পুরো কাজ শেষ হয়নি যখন, তখন থেকেই অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন। দিনের বেলা তা-ও ভিড় কিছুটা সামলানো গেলেও সন্ধ্যার পরে লম্বা লাইন পড়ে যাচ্ছে।’’

এ দিন দুপুরের দিকে চেতলা অগ্রণীর মণ্ডপে গিয়ে দেখা গেল, সারি সারি কালো মাথার ভিড়। মণ্ডপে ঢোকার লম্বা লাইন চলে গিয়েছে কয়েকশো মিটার। একই ছবি উত্তরের টালা পার্ক প্রত্যয়েও। মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় যত বেড়েছে, ততই বেড়েছে নিজস্বী তোলার হিড়িক। টালা পার্কের সামনে দাঁড়ানো চন্দ্রাণী মজুমদার বললেন, ‘‘কলেজ থেকে বন্ধুরা মিলে বেরিয়েছি। উত্তরের বড় বড় ঠাকুরগুলো দু’দিনে দেখে নেব। তা না হলে শেষ হবে না।’’ সন্ধ্যা নামতেই এই মণ্ডপের সামনের ভিড় কার্যত জনস্রোতের আকার নেয়। এ দিনই উদ্বোধন হয় সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজোর। উদ্বোধনের পরে সেখানে কার্যত তিলধারণের জায়গা ছিল না। পুজো দেখতে শহরতলি থেকে এসেছেন অনেকেই। বারাসত থেকে এসে দক্ষিণের পুজো ঘোরা এক তরুণী বললেন, ‘‘ভেবেছিলাম ফাঁকায় ফাঁকায় শান্তিতে দেখব। কিন্তু দ্বিতীয়ার সন্ধ্যাতেই তো দেখছি মণ্ডপে অষ্টমীর ভিড়! পাসও নেই, কী আর করব!’’

এখনও পুজোর উদ্বোধন হয়নি দেশপ্রিয় পার্ক, সুরুচি সঙ্ঘ, আহিরীটোলা সর্বজনীনের। তবে উদ্বোধনের আগেই দর্শক আসা শুরু হয়েছে সেখানেও। দেশপ্রিয় পার্কের অন্যতম উদ্যোক্তা সুদীপ্ত কুমার বলেন, ‘‘কত জনকে আটকাব?’’ আহিরীটোলা সর্বজনীনের অন্যতম উদ্যোক্তা শমীককুমার সাহা বললেন, ‘‘আপাতত গার্ডরেল দিয়ে দর্শক প্রবেশ আটকে রেখেছি। উদ্বোধনের আগে থেকেই চাপ। এর পরে যে কী হবে!’’ চতুর্থীতে উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঠিক করা সুরুচি সঙ্ঘের পুজো সাধারণের জন্য খোলা না হলেও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের ফেরানো হচ্ছে না বলে জানালেন উদ্যোক্তারা। এক কর্তা কিংশুক মিত্র বললেন, ‘‘ওঁদের পক্ষে ফের আসা সম্ভব নয়, তাই ওঁদের প্রতিমা না দেখিয়ে ফিরিয়ে দিই কী করে?’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja 2023 Durga Puja Pandal Hopping Durga Puja Celebration overcrowded Kolkata

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy