E-Paper

পাঠ্যবইয়ের মাধ্যমে পড়ুয়াদের নতুন পেশার হদিস দিতে উদ্যোগী শিক্ষা দফতর

সিলেবাস কমিটির বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে পেশার জগতে একাধিক নতুন দিগন্ত খুলে গিয়েছে। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষকের মতো প্রথাগত পেশার পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের অনেকেই নতুন পেশায় সফল হচ্ছেন এবং সেটিকে ভিত্তি করেই উপার্জন করছেন।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:২১

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

মিউচুয়াল ফান্ড কী? এসআইপি বা সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান কাকে বলে? ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করতে হলে কী ভাবে ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে শুরু করা যেতে পারে?

এ বার এমন বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে স্কুলের পাঠ্যবই থেকেই। শিক্ষা দফতরের সিলেবাস কমিটির এক কর্তা জানাচ্ছেন, এত দিন পাঠ্যসূচিতে শারীরশিক্ষার সঙ্গে যে আর্ট অ্যান্ড ওয়ার্ক এডুকেশন বিষয়টি ছিল, তাতে শারীরশিক্ষার উপরে বই থাকলেও আর্ট অ্যান্ড ওয়ার্ক এডুকেশনের আলাদা বই ছিল না। এ বার প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা আর্ট অ্যান্ড ওয়ার্ক এডুকেশনের উপরেও আলাদা বই পাবে। সেখানে সপ্তম এবং অষ্টম শ্রেণির জন্য আর্থিক সাক্ষরতা (ফিনান্সিয়াল লিটারেসি) বিষয়ক পৃথক পরিচ্ছেদ থাকবে। ওই কর্তা বলেন, “জাতীয় শিক্ষানীতিতে স্কুলপড়ুয়াদেরও ফিনান্সিয়াল লিটারেসি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যে সব আর্থিক বিষয় প্রাত্যহিক কাজে লাগে, আর্ট অ্যান্ড ওয়ার্ক এডুকেশনের নতুন বইয়ে সেই বিষয়গুলি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেওয়া থাকবে।’’

আগামী ২ জানুয়ারি স্কুলগুলিতে পালিত হবে ‘বই দিবস’ বা ‘বুক ডে’। সে দিনই আর্ট অ্যান্ড ওয়ার্ক এডুকেশনের বই দেওয়া হবে পড়ুয়াদের। শিক্ষা দফতরের ওই কর্তা জানান, অনেক সময়েই দেখা যায়, কোনও পড়ুয়া হয়তো দশম বা দ্বাদশ শ্রেণির পরে ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করতে চায়। সে কী ভাবে ব্যাঙ্ক ঋণের আবেদন করবে, সেই ঋণ কী ভাবে শোধ করতে হবে, এই বিষয়গুলি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকলে তার ব্যবসা শুরু করতে যেমন সুবিধা হবে, তেমনই প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনাও কমবে।

সিলেবাস কমিটির বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে পেশার জগতে একাধিক নতুন দিগন্ত খুলে গিয়েছে। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষকের মতো প্রথাগত পেশার পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের অনেকেই নতুন পেশায় সফল হচ্ছেন এবং সেটিকে ভিত্তি করেই উপার্জন করছেন। সেই সব নতুন পেশারও সন্ধান মিলবে আর্ট অ্যান্ড ওয়ার্ক এডুকেশনের বইয়ে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক সময়ে দেখা যায়, কোনও পড়ুয়া হয়তো বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে তেমন উৎসাহী নয়, অথচ পরিবারের চাপে তাকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে হয়। এ ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে সেই পড়ুয়ার পেশাজীবন অগোছালো হয়ে যায়। কিন্তু স্কুলের পাঠ্যবইয়ের মাধ্যমে যদি তাকে নতুন পেশার সন্ধান দেওয়া যায়, তা হলে সে আগে থেকেই পছন্দের বিষয় বেছে নিতে পারবে।

কেউ যদি আবৃত্তি বা নাটককে পেশা হিসাবে নিতে চায়, তা হলে ওই পেশায় সফল মানুষদের সাফল্যের চাবিকাঠি কী, তার দৃষ্টান্তও তুলে ধরা হবে নতুন বইয়ে। যেমন ধরা যাক, নাটক সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে উৎপল দত্তের জীবনী সংক্ষেপে বলা হয়েছে। এক জন সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ওই জীবনী পড়ে উদ্বুদ্ধ হতে পারবে। আবার সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন, জনসংযোগ, ফ্যাশন ডিজ়াইনের মতো পেশায় সফল হতে গেলে কী ভাবে এগোতে হবে, তারও ধারণা থাকবে। সিলেবাস কমিটির ওই কর্তা বলেন, ‘‘প্রতি বছর না হলেও কয়েক বছর অন্তর নতুন বইয়ের বিষয় পরিবর্তন করা হবে। কারণ, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পেশার পরিবর্তন হচ্ছে। হাতেকলমে শেখার মতো নতুন পেশাও তৈরি হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Education Department Education system

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy