একসঙ্গে পাহারায়।ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
পাড়ার জলাশয় বাঁচাতে জোট বেঁধেছেন ঢাকুরিয়ার শহিদ নগরের সুইটল্যান্ড ও ব্যাঙ্কপ্লটের এই প্রবীণেরা। চার বছরেরও বেশি জলাশয় বাঁচানোর জন্য সাংসদের বাড়ি থেকে পুরসভার বিভিন্ন দফতরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এঁরা। বার কয়েক রাতের অন্ধকারে জলাশয় বোজানোর অভিযোগে কয়েক জনকে ধরে পুলিশের হাতেও তুলে দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের বাধায় জলাশয়ে আবর্জনার বস্তা ফেলার পরিকল্পনাও ভেস্তে গিয়েছে অনেক বার। তাঁরাই দল বেধে গড়েছেন ‘জনস্বাস্থ্য-স্বার্থরক্ষা, জলাশয় সংরক্ষণ-সংস্কার মঞ্চ’।
ঢাকুরিয়ার শহিদ নগরের সুইটল্যান্ড ও ব্যাঙ্কপ্লটের এই জলাশয়টি কলকাতা পুরসভার ৯২ নম্বর ওয়ার্ড এবং ১০৪ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝখানে রয়েছে। এই জলাশয়ের এক পাশ ১০ নম্বর বরো এবং অন্য পাশ ১১ নম্বর বরোর আওতায় পড়ছে। বাসিন্দারা জানান, এই জলাশয়টি সুইটল্যান্ড ও ব্যাঙ্কপ্লটের ফুসফুস হিসেবে কাজ করে। এর চারপাশের গাছগাছালিতে সারা বছর হরেক পাখির আনাগোনা চলে।
অভিযোগ, বছর চারেক ধরে এই জলাশয়টি বোজানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে নির্মাণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এলাকারই কিছু লোক। ‘জনস্বাস্থ্য-স্বার্থরক্ষা, জলাশয় সংরক্ষণ-সংস্কার মঞ্চ’-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, জলাশয়টি পুরসভা অধিগ্রহণ করার নোটিসও দিয়েছিল বছর তিনেক আগে। শিল্পী যোগেন চৌধুরী তাঁর সাংসদ তহবিল থেকে জলাশয়টির সৌন্দর্যায়নের জন্য অর্থ অনুমোদনও করেছেন বলে ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এমন কী পুরসভার তরফ থেকে ২০১৫ তে একটি ‘ই-টেন্ডার’ নোটিসও হয়েছিল বলে সংগঠনের তরফে জানান হয়েছে। এই জলাশয় বাঁচানো আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক অমল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘খাতায়-কলমে সবই হল। বাস্তবে কোনও কাজ হল না। আমরা দল বেধে রাস্তায় নেমেছি।’’
কেন থমকে গেল জলাশয় সংস্কার? এই প্রশ্নের উত্তরে ১০ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘জলাশয়টির সৌন্দর্যায়ন কেন হচ্ছে না, তা খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।’’ ১১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তারকেশ্বর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই জলাশয় সংলগ্ন একটি জমি নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে। তা মিটিয়ে অবশ্যই জলাশয়টির সংস্কার এবং সৌন্দর্যায়ন হবে।’’
তবে বরো চেয়ারম্যানের এই আশ্বাসেও আস্থা রাখতে পারছেন না সুইটল্যান্ড ও ব্যাঙ্কপ্লটের প্রবীণেরা। তাঁদের বক্তব্য, বছর পাঁচেক ধরে এই আশ্বাস শুনছি। কাজ তো হয়েইনি। উল্টে জলাশয় বোজানোর চেষ্টা হয়েছে বারবার।
রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী ও কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাংসদ যোগেন চৌধুরী বহু বার জলাশয়টির বিষয়ে বলেছেন। একটা ব্যবস্থা হবে অবশ্যই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy