Advertisement
E-Paper

সিঁড়িতে পড়ে প্রৌঢ়ের নলিকাটা দেহ, রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারপাশ

তদন্তে জানা গিয়েছে, সল্টলেকে ওই বাড়ির নীচের তলায় এবং গ্যারাজে রয়েছে দু’টি বেসরকারি সংস্থার অফিস। গ্যারাজে থাকা অফিসের এক যুবক এ দিন কোনও প্রয়োজনে অভিজিৎবাবুকে ডাকতে যান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০৬
তদন্তে পুলিশ। মৃত অভিজিৎ নাগচৌধুরী। নিজস্ব চিত্র

তদন্তে পুলিশ। মৃত অভিজিৎ নাগচৌধুরী। নিজস্ব চিত্র

নিজের বাড়িতেই নৃশংস ভাবে খুন হয়ে গেলেন সল্টলেকের বাসিন্দা এক প্রৌঢ়। তাঁর নাম অভিজিৎ নাগচৌধুরী (৫৭)। বিডি ব্লকের একটি দোতলা বাড়িতে একাই থাকতেন অভিজিৎবাবু। বৃহস্পতিবার সকালে খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যায়
পুলিশ। দেখা যায়, বাড়ির দোতলায় ওঠার সিঁড়িতে পড়ে রয়েছে অভিজিৎবাবুর ক্ষতবিক্ষত দেহ। রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারপাশ। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই প্রৌঢ়ের গলার নলি কাটা ছিল। তাঁর দুই হাত ও যৌনাঙ্গ-সহ সারা শরীরেই পাওয়া গিয়েছে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন। এই ঘটনায় কে বা কারা যুক্ত, সে বিষয়ে এখনও অন্ধকারে পুলিশ। খুনের ‘মোটিভ’ সম্পর্কেও জানা যায়নি কিছু। তবে যে ভাবে অভিজিৎবাবুকে কোপানো হয়েছে, তাতে আক্রোশবশতই কেউ এই কাজ করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। পুলিশ জানিয়েছে, অভিজিৎবাবুর স্ত্রী, দুই মেয়ে ওএক ছেলে রয়েছেন। স্ত্রী থাকেন শ্যামপুকুরে। ছেলেমেয়েরা অন্যত্র থাকেন।

তদন্তে জানা গিয়েছে, সল্টলেকে ওই বাড়ির নীচের তলায় এবং গ্যারাজে রয়েছে দু’টি বেসরকারি সংস্থার অফিস। গ্যারাজে থাকা অফিসের এক যুবক এ দিন কোনও প্রয়োজনে অভিজিৎবাবুকে ডাকতে যান। অনেক বার ডেকেও সাড়াশব্দ না পেয়ে তিনি ফোন করেন ওই প্রৌঢ়ের পরিবারকে। খবর পেয়ে কিছু ক্ষণ পরেই সেখানে চলে আসেন অভিজিৎবাবুর স্ত্রী ও অন্য আত্মীয়েরা। তাঁরাই ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে ঘর খুলে দেখেন, দোতলায় ওঠার সিঁড়িতে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে আছে অভিজিৎবাবুর দেহ। তবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, যে অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে, সেটি ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি।

দেহ উদ্ধারের কিছু ক্ষণ পরেই এ দিন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেন। তার পরে এ দিন রাত পর্যন্ত মৃতের স্ত্রী ও আত্মীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অভিজিৎবাবু পেশায় এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তবে পুলিশ এ বিষয়ে রাত পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে কিছু জানাতে পারেনি।

সকালে যিনি অভিজিৎবাবুকে ডাকতে গিয়েছিলেন, সেই যুবক জানান, একতলার অফিস ধোয়া-মোছার সময়ে সিঁড়িতে রক্ত দেখতে পান তিনি। ভেবেছিলেন, অভিজিৎবাবু হয়তো মাছ কিনে ফিরেছেন। সেই মাছের রক্ত পড়ে রয়েছে।

এই খুনের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, অভিজিৎবাবু সল্টলেকের বহু পুরনো বাসিন্দা। এলাকাবাসীর একাংশের মতে, এমন নৃশংস হত্যার ঘটনা এর আগে সল্টলেকে ঘটেনি।

আরও পড়ুন: শিশুর চিকিৎসার জন্য ‘গ্রিন করিডর’

বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই প্রৌঢ়কে এতটা নৃশংস ভাবে কেন খুন করা হল, সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। আপাত ভাবে মনে হচ্ছে, খুনি লুঠপাট বা ওই জাতীয় কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে আসেনি। এসেছিল অভিজিৎবাবুকে খুন করে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতে।’’ তদন্তকারীদের মতে, খুনির আক্রোশের সূত্র ধরেই এখন তদন্তে এগোচ্ছেন তাঁরা। দেহটি আপাতত ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলেই খুনের পদ্ধতি সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বেশ কিছু বিষয়ে ইতিমধ্যেই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। অভিজিৎবাবুর ঘরে কারা কারা যেতেন, সে বিষয়ে খোঁজ চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। শেষ কে ওই দোতলার ঘরে গিয়েছিলেন, তা নিয়েও একটি সূত্র হাতে এসেছে পুলিশের। তদন্তকারীদের অনুমান, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোরের মধ্যে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। দেহ উদ্ধারের পরে বাড়িটি ‘সিল’ করেছে পুলিশ। একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

সল্টলেক SaltLake Murder Elderly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy