গৌরী সেন।
খাটের উপরে কম্বল, তোশক মোড়া, গামছা দিয়ে বাঁধা অবস্থায় পড়ে প্রৌঢ়ার দেহ। ঘর, আলমারি তছনছ। জানলার গ্রিল ভাঙা। দরজা হাট করে খোলা। ভাড়াটের ঘরের এই দৃশ্য দেখেই পুলিশে জানান নেতাজিনগরের বাসিন্দা রবি সাহা। পুলিশ এসে বাড়ির একতলার ভাড়াটিয়া গৌরী সেনের (৬৭) দেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে গৌরীদেবীকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, চার মাস ধরে একাই থাকতেন গৌরীদেবী। তাঁর স্বামী মাঝে মাঝে এসে থাকতেন তাঁর সঙ্গে। তবে গত দু’মাসে এক বারও তিনি আসেননি বলে জানান প্রতিবেশীরা। শুক্রবার বাড়িতে একাই ছিলেন গৌরীদেবী।
বাড়ির মালিক রবি সাহা জানান, সকাল সাতটা নাগাদ তিনি বেরোতে গিয়ে দেখেন, তাঁর ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। প্রতিবেশীকে ডেকে দরজা খোলান তিনি। নীচে নেমে দেখেন, গৌরীদেবীর ঘরের দরজা ও বাড়ির মূল ফটক খোলা। গৌরীদেবীর ঘরে পড়ে তাঁর দেহ।
খবর পেয়ে সকালেই পৌঁছন গৌরীদেবীর জেঠতুতো বৌদি ঝর্না সেন। তিনিও নেতাজিনগরেরই বাসিন্দা। তিনি জানান, গৌরীদেবী উত্তরবঙ্গ পরিবহণ দফতরে হিসেবরক্ষকের কাজ করতেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় এক ব্যক্তির। দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠলেও ওই ব্যক্তির স্ত্রী ও সন্তান থাকায় গৌরীদেবীকে বিয়ে করতে পারেননি। ২০১০-এ গৌরীদেবী অবসর নিয়ে নেতাজিনগরে এসে থাকতে শুরু করেন।
পারিবারিক সূত্রে খবর, এর পরে তাঁরা বিয়ে করেন। এ নিয়ে গৌরীদেবীর পরিবারের আপত্তি থাকলেও ওই ব্যক্তির পরিবারে কোনও অশান্তি ছিল না বলেই দাবি ঝর্নাদেবীর। তাঁর অভিযোগ, সকালেই গৌরীদেবীর স্বামীকে ফোন করে জানতে পারেন তিনি কলকাতাতেই আছেন। ঝর্নার দাবি, কলকাতায় থেকেও স্ত্রীয়ের সঙ্গে থাকেননি— তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও পরিবারের তরফে শনিবার রাত পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের হয়নি। ঝর্নাদেবীর ছেলে সাইমন সেন বলেন, ‘‘কারও বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ নেই। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক কে, কেন খুন করেছে।’’
গৌরীদেবীর স্বামী জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তিনি মন্তব্য করবেন না। তবে পুলিশকে সহযোগিতা করবেন। ঘর থেকে মূল্যবান কিছু খোয়া যায়নি বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে তাঁর। সকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ডিডি এবং হোমিসাইড শাখার তদন্তকারী দল। তাঁরা জানান, গৌরীদেবীর মৃত্যুর কারণ শ্বাসরোধ বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হলেও, ময়না-তদন্তের পরেই তা নিশ্চিত করা যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy