নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হাসপাতালের সামনের রাস্তায় দেদার বাজে হর্ন। মিটিং-মিছিল, মাইকের ব্যবহারও চলছেই। এমনকি, হাসপাতালের সামনে সজোরে বাজে সাউন্ড বক্সও। দমদম পুর হাসপাতালের সামনে এমন ছবি দিনের পর দিন দেখা যায়। অভিযোগ, সাধারণ মানুষ থেকে প্রশাসন, কারও হুঁশ ফেরে না।
দমদম বা দক্ষিণ দমদম পুর কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের সামনে অতিরিক্ত জোরে আওয়াজের সমস্যার কথা মেনে নিয়েই জানাচ্ছেন, হাসপাতালের সামনে শব্দ নিয়ন্ত্রণে ফ্লেক্স লাগিয়ে জনসাধারণকে সচেতন করার চেষ্টা করা হয়। দৈনন্দিন দৃশ্য অবশ্য পুরসভার এই দাবির সম্পূর্ণ বিপরীত কথাই বলে। এ বার সরস্বতী পুজোয় দমদম পুর হাসপাতালের সামনের রাস্তায় একটি মণ্ডপ থেকে শোনা গিয়েছে বক্স বাজানোর আওয়াজ। ওই পুজোর আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা না গেলেও খবর পেয়ে পুরসভা ও পুলিশ প্রশাসন সাউন্ড বক্স বন্ধ করে। দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান হরিন্দর সিংহ জানান, খবর পেয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা হয়।
দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্টের দাবি, হাসপাতালের সামনে অতিরিক্ত শব্দ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতার প্রচার বা ফ্লেক্সের মাধ্যমে হর্ন না বাজানোর আবেদন করা হয়। তাতে সাড়া মিললেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে তিনি মেনে নিয়েছেন।
প্রশ্ন উঠেছে, হাসপাতালের সামনে পুজো বা রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কি আদৌ নজরদারি থাকে? অভিযোগ, প্রশাসনিক স্তরে যেমন এ নিয়ে তৎপরতা নেই, তেমনই সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক দলগুলিরও হেলদোল নেই। দমদমের বাসিন্দাদের একাংশের মতে, বিভিন্ন পুজো, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হাসপাতাল এলাকায় মাইক বা সাউন্ড বক্সের ব্যবহারে যে রোগীদের সমস্যা হতে পারে, তা নিয়ে কেউ ভাবেনই না। এক বাসিন্দা শুভ রায়ের কথায়, ‘‘দক্ষিণ দমদম ও দমদম পুর হাসপাতালের সামনে রাস্তায় গাড়ির চাপ সব সময়ে থাকে। এ ছাড়াও যশোর রোডের ধারে বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোম রয়েছে। হাসপাতালের কাছে হর্ন নিয়ে বোর্ড বা ফ্লেক্সে সতর্কতামূলক বার্তা লেখা থাকে বটে, কিন্তু এর বেশি কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়ে না।’’ হাসপাতালের সামনে দিয়ে প্রতিমা বিসর্জনে যাওয়ার সময়েও দেদার সাউন্ড বক্স বাজে বলে অভিযোগ।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাস জানান, এ নিয়ে সচেতনতার প্রচার করা হলেও বিশেষ সাড়া মেলেনি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)