Advertisement
E-Paper

কর্মী বাড়ন্ত, সঙ্কটে দমকল পরিষেবা

পদ সাত হাজার। খালি তিন হাজারেরও বেশি। এই কর্মী ঘাটতির জেরে রাজ্য জুড়ে দমকল পরিষেবায় সমস্যা হচ্ছে। এর জেরে চাহিদা অনুযায়ী ঘটনাস্থলে দমকল পৌঁছতে দেরি হচ্ছে। এই অভিযোগ দমকল দফতরের অফিসার এবং কর্মীদের একাংশেরই।

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৬ ০০:৩৭

পদ সাত হাজার। খালি তিন হাজারেরও বেশি। এই কর্মী ঘাটতির জেরে রাজ্য জুড়ে দমকল পরিষেবায় সমস্যা হচ্ছে। এর জেরে চাহিদা অনুযায়ী ঘটনাস্থলে দমকল পৌঁছতে দেরি হচ্ছে। এই অভিযোগ দমকল দফতরের অফিসার এবং কর্মীদের একাংশেরই।

দমকল দফতরে মূলত দু’ ধরনের কাজ থাকে। করণিক, ওয়ার্কশপ, স্টোর-সহ বিভিন্ন কাজ করেন জেনারেল বিভাগের কর্মীরা। আগুন নেভানো, উদ্ধার ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে অপারেশনাল উইং-এর কর্মীরা। দমকল পরিষেবার মেরুদণ্ড এই অপারেশনাল উইং। অভিযোগ, শুধু সেখানেই কর্মীর ঘাটতি ৫০ শতাংশ। জেনারেল ও অপারেশনাল বিভাগ মিলিয়ে তা আরও বেশি। অফিসারদের একাংশের মতে, এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গোটা পরিষেবা।

দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ১০টি ডিভিশনে বিভক্ত। প্রতি ডিভিশনে পাঁচ থেকে ১৫টি পর্যন্ত দমকলকেন্দ্র থাকে। রাজ্যে ১৩৫টি দমকলকেন্দ্র রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে এক বা একাধিক ফায়ার পাম্প বা আগুন নেভানোর গাড়ি থাকে। অপারেশনাল উইং-এ ফায়ার অপারেটর, ফায়ার ইঞ্জিন অপারেটর কাম ড্রাইভার এবং সাব অফিসার পদে সরাসরি নিয়োগ হয়। সেখান থেকে পদোন্নতির ভিত্তিতে লিডার, স্টেশন অফিসার, ডিভিশনাল অফিসার, ডেপুটি ডিরেক্টর, ডিরেক্টর ফায়ার সার্ভিস পদ মেলে।

অফিসার ও কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, কয়েক বছর অগ্নি-নির্বাপণ দফতরে বড় নিয়োগ হয়নি। ’৮০ সাল নাগাদ তিনটি শিফটে কাজ শুরু হয়। তখন অনেক কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। এর পর বড় নিয়োগ হয় ২০০৭-০৮ এবং ২০১১ সাল নাগাদ। মাঝেমধ্যে কর্মী নেওয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়।

সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই শতাধিক কর্মী নিয়োগ হতে চলেছে । এক অফিসারের কথায়, ‘‘সেটা মরুভূমিতে এক ঘটি জল ঢালার মতোই। ’৮০ সালে যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন কয়েক বছরের মধ্যেই তাঁরা অবসর নেবেন। এ ছাড়া প্রায় প্রতি মাসেই অবসর নিচ্ছেন কর্মীরা। এই নিয়োগে ঘাটতি মিটবে না।’’

কর্মীদের একাংশ জানান, ঘাটতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিষেবার মানও। দমকলের প্রতিটি গাড়িতে এক জন অফিসার এবং লিডার-সহ মোট সাত জন থাকার কথা। সেখানে চার থেকে পাঁচ জনকে নিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে। এই সমস্যা রয়েছে কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ-সহ প্রায় প্রতিটি ডিভিশনেই।

দমকলের জেলাস্তরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কর্মী কমে যাওয়ায় জেরবার হচ্ছে জেলার কেন্দ্রগুলি। সেখানে একটি দমকল কেন্দ্র থেকে অন্যটির দূরত্ব যথেষ্ট। যেমন, শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ির দমকলকেন্দ্র দু’টির মধ্যে দূরত্ব প্রায় ৪৪ কিলোমিটার। প্রায়ই দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পার্শ্ববর্তী কেন্দ্রের সাহায্য মেলে না।’’

প্রধান কার্যালয়ের এক অফিসার জানান, আগে দমকলকেন্দ্রগুলি আগুন নেভানোর গাড়ি, পাম্প প্রভৃতি সেন্ট্রাল ওয়ার্কশপে মেরামতির জন্য পাঠাত। ১৫ বছর ধরে মেকানিক, ফোরম্যান, কারপেন্টার, পেন্টার, হেল্পার-সহ বিভিন্ন পদের কর্মীর ঘাটতিতে ধুঁকছে সেন্ট্রাল ওয়ার্কশপও। ফলে বাইরের মিস্ত্রি দিয়ে কাজ করাতে হচ্ছে।

দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আশ্বাস, ‘‘বিষয়টি নজরে আছে। আগামী দিনে কোনও পদই ফাঁকা থাকবে না।’’

fire-brigade
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy