Advertisement
E-Paper

তিন মাস খেয়ে জানা গেল, ওষুধ নিম্ন মানের

অভিযোগ ছিল অনেক দিন থেকেই। সম্প্রতি নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে নতুন করে এ নিয়ে অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছেন সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর্স (সিএমএস) ও স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। তাঁরা স্বীকারও করেছেন, ওষুধের নমুনা সংগ্রহ, পরীক্ষা ও রিপোর্ট দেওয়ার গোটা প্রক্রিয়া অত্যন্ত শ্লথ গতিতে চলছে বলেই এই কাণ্ড ঘটছে।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ০১:৩৮

সরকারি হাসপাতালে ওষুধ আসছে। তা রোগীরা খাচ্ছেন। বহু ক্ষেত্রে পরে রিপোর্ট আসছে— ওই ওষুধ নিম্নমানের। অর্থাৎ, তাতে রোগ সারার কথা নয়!

অভিযোগ ছিল অনেক দিন থেকেই। সম্প্রতি নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে নতুন করে এ নিয়ে অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছেন সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর্স (সিএমএস) ও স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। তাঁরা স্বীকারও করেছেন, ওষুধের নমুনা সংগ্রহ, পরীক্ষা ও রিপোর্ট দেওয়ার গোটা প্রক্রিয়া অত্যন্ত শ্লথ গতিতে চলছে বলেই এই কাণ্ড ঘটছে। সিএমএসের এক কর্তার কথায়, ‘‘রোগ না-সারলে দোষ হচ্ছে চিকিৎসকের বা হাসপাতাল পরিষেবার। কেউ জানতে পারছেন না যে সমস্যাটা আসলে ওষুধে।’’

দরপত্রের মাধ্যমে গুজরাতের একটি সংস্থা থেকে বিপুল মরফিন ট্যাবলেট (১০এমজি) কিনেছিল স্বাস্থ্য দফতর। তার মধ্যে ৪৮ হাজার ট্যাবলেট ২০১৫ সালের মার্চ-এপ্রিলে এসেছিল এনআরএসে। সেগুলি মেয়াদ-উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ ২০১৭ সালের জানুয়ারি। স্বাস্থ্য দফতর নীলরতন থেকে ওই ট্যাবলেটের নমুনা পরীক্ষায় দিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ২০১৭ সালের ৪ঠা মে। নীলরতন কর্তৃপক্ষের দাবি, তত দিনে সব ট্যাবলেট খাওয়াও হয়ে গিয়েছে! মরফিন সাধারণত ক্যানসার রোগীদের যন্ত্রণা কমাতে ব্যবহৃত হয়। স্বাস্থ্য দফতরের কাছে এনআরএস জানতে চেয়েছে— ওই ট্যাবলেট নিম্নমানের বলে প্রমাণিত হয়েছে। এবং তা খেয়ে বহু রোগীর যন্ত্রণা কমেনি, এই দায় কে নেবে?

এনআরএসে গত এপ্রিলে চেন্নাইয়ের এক সংস্থার থেকে কেনা ৭০২০টি হেপাটাইটিস-সি পরীক্ষার কিট সরবরাহ করা হয়। ২ হাজার কিট ব্যবহারের পরে চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন, কিটগুলির মান ঠিক নেই। তাঁরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে বাকি ৫ হাজার কিট ফেরত নিয়ে নতুন কিট দিতে বলেন। সপ্তাহ দু’য়েক আগে ২ হাজার কিট পৌঁছলেও চিকিৎসকেরা দেখেন, তাতেও একই সমস্যা হচ্ছে। এখন কিটের অভাবে এনআরএসে হেপাটাইটিস-সি পরীক্ষা বন্ধ হওয়ার মুখে। কারণ, ওই একটি সংস্থাই স্বাস্থ্য দফতরকে এই কিট দেয়।

সল্টলেকের একটি সংস্থা থেকে কেনা ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট কয়েক হাজার পাঠানো হয়েছিল হাওড়া ডিস্ট্রিক্ট রিসার্ভ স্টোরে। রোগীদের তা দেওয়া শুরু হয় ২০১৬ সালের জুলাইয়ে। আর ওই ওষুধ যে নিম্নমানের সেই রিপোর্ট পৌঁছয় ২০১৭ সালে।

এইরকম অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। সিএমএস-এর দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য দফতরের এডিএইচএস পরমার্থ চট্টাপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিতে অনেক সময় লাগছে। কারণ, কিছু ক্ষেত্রে লোকাভাব, কিছু ক্ষেত্রে নিয়ম না-জানা। রিপোর্ট না-এলেও ওষুধের ব্যবহার বন্ধ রাখা যাচ্ছে না। ফলে এই অনিচ্ছাকৃত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তবে সমাধানের উপায় খুঁজতে লাগাতার বৈঠক হচ্ছে।’’

Fair Price Medical Shop Substandard Medicine Medicine Government Hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy