এ যেন ‘ঠগের উপরে বাটপাড়ি’!
মৃত চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে ত্বক বিশেষজ্ঞের চেম্বার সাজিয়ে বসেছিলেন এক ইউনানি চিকিৎসক। সেই অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। এ বার তাঁর বা়ড়িতেই হানা দিয়েছে দুই প্রতারক। তা-ও আবার সিআইডি অফিসার সেজে। ধৃতের পরিবারের লোকজনকে আশ্বস্তও করে ফেলেছিল প্রতারকেরা। কিন্তু ছক বানচাল হয়ে গেল ভুল সময়ের ফোনে।
সিআইডি সূত্রে খবর, ধৃতের পরিবারকে ফোন করে টাকা চেয়ে চাপ দিচ্ছিল এক ভুয়ো সিআইডি অফিসার। ঘটনাচক্রে সে সময়ে ধৃতের বাড়ির লোকেরা বসেছিলেন ভবানী ভবনে। খাস সিআইডি-র সদর দফতরেই।
পুলিশ জানিয়েছে, নরেন পাণ্ডে নামে ধৃত ওই চিকিৎসকের পরিবার এ নিয়ে সিআইডি-র কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।
মে মাসের শেষে সিআইডি-র হাতে গ্রেফতার হন ইউনানি কাউন্সিলের সহ-সভাপতি নরেন পাণ্ডে। তিনি দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ত্বকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে রোগী দেখতেন। সিআইডি-র দাবি, এক মৃত চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে রোগী দেখছিলেন তিনি। জাল চিকিৎসক তৈরির ব্যবসাও ফেঁদেছিলেন নরেন।
সিআইডি সূত্রে খবর, দুই যুবক নরেনের এন্টালির বাড়িতে হাজির হয়ে নিজেদের সিআইডি অফিসার বলে দাবি করে। টাকার বিনিময়ে মামলা প্রত্যাহার করার আশ্বাসও দেয়। সম্প্রতি ভবানী ভবনে সিআইডি-র তদন্তকারীদের কাছে যান নরেনের পরিজনেরা। তখনই ফোন করে এক যুবক জানায়, তার নাম অভিষেক দাস। সে সিআইডি অফিসার। ফোনে টাকা দাবি করে সে। কথায় কথায় ওই ভুয়ো অফিসার বুঝতে পারে, নরেনের পরিবার ভবানী ভবনে রয়েছে। তখনই ফোন কেটে দেয় সে।
নরেনের পরিবারের কাছে ফোন এসেছিল দু’টি নম্বর থেকে। ভবানী ভবনের ঘটনার পর থেকে দু’টিই বন্ধ। নম্বরগুলির সূত্র ধরে জানা গিয়েছে, কলকাতায় বসেই ফোন করা হয়েছে। ওই ভুয়ো সিআই়ডি অফিসারের গলা শুনে তাকে অবাঙালি বলে মনে হয়েছে নরেনের পরিবারের। নরেনের এন্টালির বা়ড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরাতেও ভুয়ো সিআইডি অফিসারদের ছবি ধরা পড়েছে।
সিআইডি জানিয়েছে, এন্টালি থানায় ভুল চিকিৎসার অভিযোগ দায়ের করেছে এক রোগীর পরিবার। সেই মামলায় নরেনকে হেফাজতে নিয়েছে এন্টালি থানা। ভুয়ো চিকিৎসক নিয়ে এ দিন জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন গোয়েন্দারা। সেখান থেকে দু’জন ভুয়ো ডাক্তার ধরা পড়েছিলেন। সরকারি দফতরে কী ভাবে তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল, তা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ প্রশ্ন করা হলেও দুই স্বাস্থ্যকর্তার জবাবে সন্তষ্ট নন গোয়েন্দারা। সিআইডি সূত্রে খবর, আজ, বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।