Advertisement
২০ জানুয়ারি ২০২৫

ভিন্‌ রাজ্যের জাল মার্কশিট এ শহরে

দুই শহরের দূরত্ব প্রায় ৭০০ কিলোমিটার। উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরের একটি স্কুলের নথিভুক্ত শংসাপত্র এবং উত্তরপ্রদেশে বিভিন্ন বোর্ডের দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার জাল মার্কশিট উদ্ধার হয়েছিল কলকাতার বড়বাজারের গুদাম থেকে।

শিবাজী দে সরকার
শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৬ ০০:৫৩
Share: Save:

দুই শহরের দূরত্ব প্রায় ৭০০ কিলোমিটার। উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরের একটি স্কুলের নথিভুক্ত শংসাপত্র এবং উত্তরপ্রদেশে বিভিন্ন বোর্ডের দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার জাল মার্কশিট উদ্ধার হয়েছিল কলকাতার বড়বাজারের গুদাম থেকে। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনায় দুই শহরের যোগসূত্রের বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে তদন্তভার গোয়েন্দা বিভাগকে দিল কলকাতা পুলিশ।

তদন্তে নেমে গোয়েন্দা বিভাগের জালিয়াতি দমন শাখা যোগাযোগ করেছে উত্তরপ্রদেশের শিক্ষা দফতরের সঙ্গে। গোয়েন্দাদের অনুমান, এই চক্রের সঙ্গে এ রাজ্যের পাশাপাশি ভিন্‌ রাজ্যের কয়েক জন জড়িত।

পুলিশ জানায়, শনিবার ক্যানিং স্ট্রিটে রামপুরিয়া মার্কেটের তিনতলায় একটি দোকানে হানা দিয়ে মেলে উত্তরপ্রদেশের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির দুটি বোর্ডের পরীক্ষার অসংখ্য মার্কশিট। উদ্ধার হয় প্রচুর নাম না-লেখা শংসাপত্রও, যেগুলিতে গাজিপুরের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর রয়েছে। এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে বদলির জন্য ওই স্কুলের দেওয়া বিভিন্ন শংসাপত্রও পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের দাবি, বাজেয়াপ্ত হওয়া মার্কশিট এবং শংসাপত্র সবগুলিই জাল। ঘটনায় অবধেশকুমার মিশ্র, রাজেশ দুবে এবং হরিশঙ্কর প্রসাদ নামের তিন ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছে। অবধেশকুমার এবং রাজেশ বড়বাজারের দু’টি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক। হরিশঙ্কর আর এক বেসরকারি স্কুলের কর্মী। রবিবার তিন জনকে আদালত ১২ দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।

প্রাথমিক জেরায় পুলিশ জেনেছে, ধৃতেরা কলকাতার বিভিন্ন হিন্দি মাধ্যম স্কুলের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির অকৃতকার্য পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযাগ করত। পরে তাদের উত্তরপ্রদেশের দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির দু’টি বোর্ডের পরীক্ষার মার্কশিট এবং অন্য শংসাপত্র জোগাড় করে দিত। উত্তরপ্রদেশের একটি চক্রও এতে জড়িত বলে অনুমান তদন্তকারীদের।

প্রাথমিক তদন্তে গোয়েন্দাদের দাবি, ধৃতেরা স্কুলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুবাদে বড়বাজারের বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ছিল। ওই সব স্কুল থেকে দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে অকৃতকার্য হওয়া ছাত্রছাত্রীদের খোঁজও মিলত। বছর নষ্ট না করে উত্তরপ্রদেশ থেকে তাদের পাশ করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কয়েক হাজার টাকা নিত প্রতারকেরা। পরে নকল পরীক্ষারও আয়োজন করত। এর পরেই ছাত্রছাত্রীদের হাতে জাল মার্কশিট তুলে দেওয়া হতো।

গোয়েন্দারা জানান, উদ্ধার হওয়া জাল নথি থেকে স্পষ্ট, প্রথমে অকৃতকার্যদের এ রাজ্য থেকে উত্তরপ্রদেশ বোর্ডের অধীনে ভর্তি করানোর জন্য জাল ট্রান্সফার সার্টিফিকেট তৈরি করা হতো। তা দিয়ে জাল শংসাপত্র এবং মার্কশিট তৈরি করত তারা। এক অফিসার দাবি করেছেন, উদ্ধার হওয়া জাল মার্কশিট এবং শংসাপত্র অন্যত্র ছাপা হতো। পরে তা আনা হতো কলকাতায়। রামপুরিয়া মার্কেটের ওই দোকানের অফিসটি এ শহরে ওই প্রতারণা চক্রের অফিস বলে দাবি তদন্তকারীদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Burrabazar warehouse Mark-sheet Examination
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy