E-Paper

পরিবহণ ব্যবসার আড়ালে জাল পাসপোর্টের চক্র

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলাচলকারী একাধিক বেসরকারি বাসের টিকিট করে দেওয়া হত সেই পরিবহণ সংস্থার অফিস থেকে। তবে, তার আড়ালে চলত হুন্ডির ব্যবসা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৯
An image of Passport

—প্রতীকী চিত্র।

পরিবহণ সংস্থার অফিসের সামনে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের লোকজনের ভিড় লেগেই থাকত। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলাচলকারী একাধিক বেসরকারি বাসের টিকিট করে দেওয়া হত সেই পরিবহণ সংস্থার অফিস থেকে। তবে, তার আড়ালে চলত হুন্ডির ব্যবসা। এমনকি, তৈরি করে দেওয়া হত জাল পাসপোর্ট-সহ ভারতীয় নাগরিকত্বের যাবতীয় কাগজপত্র। এমনই অভিযোগ উঠেছে ওই পরিবহণ সংস্থার মালিক সঞ্জীব দেবের বিরুদ্ধে।

বারাসতের রমেশপল্লির একটি আবাসনের বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে বুধবার গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। মানব পাচারের তদন্তে সারা দেশের অনেক রাজ্যের মতো এ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনাতেও তল্লাশি চালায় তারা। গ্রেফতার করা হয় সঞ্জীব-সহ তিন জনকে। ধৃতদের মধ্যে সঞ্জীবের পরিবহণ সংস্থার অফিস ছিল বারাসতের চাঁপাডালিতে, প্রায় রাস্তার উপরেই।

স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, সঞ্জীবের নিজেরই এ দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাঁদের অনেকেরই দাবি, বারাসতের বহু জায়গায় প্রশাসনেরই একাংশের মদতে জাল কাগজপত্র তৈরি করে বাংলাদেশি নাগরিকেরা শুধু বসবাসই নয়, ব্যবসা-বাণিজ্যও করছেন। কোথাও ওষুধ তৈরির কারবার, কোথাও আবার সোনার গয়না তৈরির ব্যবসায় তাঁরা জড়িয়ে রয়েছেন বারাসতের বিভিন্ন এলাকায়। যা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে বাংলাদেশ থেকে এক সময়ে উদ্বাস্তু হয়ে এ দেশে আসা পরিবারগুলির উত্তর পুরুষদেরও।

বৃহস্পতিবার রমেশপল্লির ওই আবাসনে গিয়ে সঞ্জীবের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাঁরা কেউ কথা বলতে চাননি। প্রতিবেশীরা জানালেন, তাঁরা শুনেছেন, সঞ্জীবেরা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। এমনকি, তাঁর পরিজনেরাও বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগের কথা বুধবার সংবাদমাধ্যমকে জানান। সঞ্জীবের পরিবহণ সংস্থার অফিসটি যে আবাসনের নীচে, এ দিন দুপুরে সেখানেই চলছিল জটলা। দু’-তিন বছর আগে অফিস তৈরির জন্য সঞ্জীব ওই জায়গাটি নেন।

মানব পাচার-চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে সঞ্জীবের গ্রেফতার হওয়া দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, সঞ্জীব আগে অন্য পাড়ায় ব্যবসা করতেন। কিন্তু তিনি বারাসতের আদি বাসিন্দা নন বলেই অনেকের মত। তাঁরা জানান, অফিসটির কাচের দরজা সব সময়ে বন্ধ থাকত। অনেক সময়ে সেখানে বাংলাদেশি মহিলাদের জটলাও তাঁরা দেখেছেন। তাঁদের দাবি, তাঁরা শুনেছেন, জাল পাসপোর্টের সাহায্যে বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থাও করা হত সেখান থেকে।

বিষয়টি কী ভাবে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে গেল? কী করে ওই ব্যক্তি ট্রেড লাইসেন্স পেলেন, উঠছে সেই প্রশ্নও। এ দিন বারাসত পুলিশ জেলার সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের কাছে এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনিও উত্তর এড়িয়ে যান।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

India-Bangladesh Bus Transport

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy