Advertisement
E-Paper

প্রতিমার গয়না চুরি, ধৃত পরিবার

নবমীর সকালে হাওড়ার বালিতে কাছাকাছি দু’টি মণ্ডপেই এক ঘটনা। কপালে ভাঁজ পড়ে পুলিশের। পুজোর আগে দাগি চোরদের জেলবন্দি করার পরেও এমন কাণ্ড কে ঘটাল?

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০০:১৮
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ভোর হতেই চোখ কপালে উদ্যোক্তাদের। প্রতিমার গয়না উধাও!

নবমীর সকালে হাওড়ার বালিতে কাছাকাছি দু’টি মণ্ডপেই এক ঘটনা। কপালে ভাঁজ পড়ে পুলিশের। পুজোর আগে দাগি চোরদের জেলবন্দি করার পরেও এমন কাণ্ড কে ঘটাল? জল্পনার জাল বেশি ক্ষণ বুনতে হয়নি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গয়না-সহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেল চোরের দল।

যদিও পুলিশকর্তাদের কথায়, ‘‘চোরের দল না বলে চোর পরিবার বলা উচিত।’’ কারণ, ওই ঘটনায় যে চার জন ধরা পড়েছে, তাদের মধ্যে দু’জন স্বামী-স্ত্রী। বাকি দু’জন তাদেরই ছেলে ও মেয়ে। পুলিশ জানিয়েছে, বালির ডিংসাই পাড়ার বাসিন্দা, প্রাক্তন রেলকর্মী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, তার স্ত্রী সোনালি বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে ইন্দিরা, মেয়ে দেবস্মিতা ও নাবালক ছেলেকে এই ঘটনায় ধরা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার ভোরে বালির মাধব ব্যানার্জি লেন অধিবাসীবৃন্দের কয়েক জন সদস্য মণ্ডপে এসে ঝাড়পোঁছ করার সময়ে দেখেন, দুর্গার মুকুট, হার ও টায়রা উধাও। খবর ছড়িয়ে পড়তেই জানা যায়, একটু দূরে বালি যুবক দলের মণ্ডপেও একই হাল। সেখানেও উধাও দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতীর নাকের নথ, টিকলি ও ছ’টি শাড়ি। খোয়া গিয়েছে একটি শারদ সম্মানের স্মারকও।

নবমীর ভোরে এ খবর চাউর হতেই বালি জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশও প্রথমে কূলকিনারা পাচ্ছিল না। শেষে বালি থানার আইসি বিকাশ দত্তের নেতৃত্বে একটি দল তৈরি করে তদন্ত শুরু করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, মাধব ব্যানার্জি লেনের মণ্ডপের কাছেই বালি থানা। সেখানে রাস্তার মোড়ে রয়েছে সিসি ক্যামেরা। পুলিশ সেই ফুটেজে দেখতে পায়, ভোর চারটে বাজার কয়েক মিনিট আগে একটি ছেলে সাইকেলের পিছনে একটি মেয়েকে বসিয়ে মাধব ব্যানার্জি লেনের দিক থেকে বালি থানার দিকে যাচ্ছে। পরক্ষণেই দেখা যায়, ছেলেটি একা হেঁটে মণ্ডপের দিকে যাচ্ছে। হাইওয়ের টহলদার পুলিশ এসে পড়ায় একটি গলিতে লুকিয়েও পড়ে সে। আবার গাড়ি চলে যেতেই মণ্ডপে ঢুকে যায়।

এর কয়েক মিনিট পরেই দেখা যাচ্ছে, ছেলেটি মণ্ডপ থেকে বেরিয়ে হেঁটে শান্তিরাম রাস্তার দিকে এগিয়ে আসছে। দেখা যায়, গেঞ্জির ভিতর থেকে মুকুটটি বার করে হাতে নিয়ে ছুটে চলে যাচ্ছে সে। এই ছবি দেখার পরেই সেটি এলাকায় দেখাতে শুরু করেন তদন্তকারীরা। জানা যায়, বালি বাজার এলাকায় বিভিন্ন দোকান থেকে হাতসাফাই করতে গিয়ে ওই ছেলেটি বেশ কয়েক বার ধরা পড়েছে। এমনকী, তার মা ও দিদিও ধরা পড়েছে কয়েক বার। পুলিশ জানতে পারে, ওই নাবালকের বাড়ি ডিংসাইপাড়ায়।

এর পরেই মহিলা পুলিশ সঙ্গে নিয়ে বালি থানার বিশাল বাহিনী ওই বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়েই ওই সাইকেলটি দেখতে পায় পুলিশ। এর পরে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ওই বালককে ধরার পরে জানা যায়, তার সঙ্গে চুরি করতে বেরিয়েছিল দিদি দেবস্মিতাও। আর সমস্ত গয়না এনে বাড়িতে মায়ের কাছেই রেখে দিয়েছিল তারা। পুলিশ সূত্রের খবর, বাড়ি তল্লাশি করে আলমারি থেকে গয়নাগুলি উদ্ধার করা হয়। এর পরেই চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার হাওড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক ওই নাবালককে হোমে পাঠাতে এবং বাকি তিন জনকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

পুলিশ জানায়, ওই বাড়ি থেকে সাতটি সাইকেল-সহ অনেক সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে, যেগুলি চোরাই বলেই অনুমান। ধৃতদের জেরায় জানা গিয়েছে, চুরির আগে কয়েক বার মণ্ডপে ‘রেকি’ করেছিল দিদি ও ভাই।

এলাকার বাসিন্দারা জানান, প্রত্যেকেই এড়িয়ে চলতেন ওই পরিবারকে। পড়শিদের কথায়, ‘‘এরা অভাবে চুরি করত না। করত স্বভাবে।’’

Durga Puja jewelry thieves
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy