Advertisement
E-Paper

শিশুর মৃত্যুর খবর এল ১০ দিন পরে, অভিযুক্ত আর জি কর

এসএনসিইউ বিভাগের প্রধান গোবিন্দচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘শিশুটির শ্বাসকষ্ট ছিল। রক্তে শর্করার পরিমাণ ছিল ৩২। আসা মাত্র ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়।’’

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২০ ০৩:৩৬
মৃত্যুর ১০ দিন পরে জানানো হয়েছে পরিবারকে, অভিযোগ আরজি কর হাসপাতালের বিরুদ্ধে।

মৃত্যুর ১০ দিন পরে জানানো হয়েছে পরিবারকে, অভিযোগ আরজি কর হাসপাতালের বিরুদ্ধে।

দশ দিন ধরে হাসপাতাল চত্বরেই রয়েছেন সদ্যোজাতের অভিভাবক। সময়ে সময়ে আর জি করের এসএনসিইউ বিভাগে গিয়ে সঙ্কটাপন্ন পুত্রসন্তানের খোঁজও নিয়েছেন। কখনও বলা হয়েছে, সদ্যোজাত ভাল আছে। কখনও আবার মাইকে ডাক না-পেলে আসতে বারণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার সন্তানের জন্য মা ব্যাকুল হয়ে ওঠায় জানা গেল, দিন দশেক আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই শিশুটির। যে ঘটনার জেরে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চরম গাফিলতির অভিযোগ তুলে ডিএনএ পরীক্ষার দাবি করেছেন শিশুটির বাবা বাবুন মণ্ডল।

চন্দননগরের বাসিন্দা বাবুন গত ১২ জুন সন্তানসম্ভবা স্ত্রী দেবযানীকে চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান। রাত ৯টা ২৫ নাগাদ পুত্রসন্তানের জন্ম দেন দেবযানী। ২ কেজি ২০০ গ্রামের শিশুটিকে জন্মের পরেই নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন বাবুন। ভাল চিকিৎসার জন্য ১৩ জুন তাকে আর জি করে পাঠান চন্দননগর মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দেবযানী চন্দননগরেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। অ্যাম্বুল্যান্সে সদ্যোজাতকে নিয়ে আসেন বাবা।

শুক্রবার বাবুন জানান, ১৩ জুন থেকে টানা হাসপাতালেই রয়েছেন তিনি। শৌচাগার এবং খাওয়ার সময়টুকু বাদ দিলে এসএনসিইউ বিল্ডিংয়ের সামনে থেকে নড়েননি। বাবুনের কথায়, ‘‘যত বারই উপরে গিয়ে ছেলেকে দেখতে চেয়েছি, বলা হয়েছে, তোমাকে ডাকা হয়নি যখন, কেন এসেছ?’’

গত শনিবার বোনপো সঞ্জু গরুই গেলে তাঁকে জানানো হয়, সদ্যোজাত সুস্থ আছে। বাবুন জানান, মা এলে যদি ছেলেকে দেখতে দেয়, সে কথা ভেবে মঙ্গলবার দেবযানীকে চন্দননগরের হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে আনানোর ব্যবস্থা করেন তিনি। বৃহস্পতিবার দু’দফায় অপেক্ষা করার পরেও ছেলেকে দেখতে না-পেয়ে সন্ধ্যায় জোর করেই ওয়ার্ডে ঢুকে পড়েন মা। তা নিয়ে হইচই শুরু হলে জানানো হয়, ১৫ জুনই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।

বাবুন বলেন, ‘‘দশ দিন ধরে কেউ খোঁজ করছে না দেখে হাসপাতাল কেন বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি?’’ দেবযানী বলেন, ‘‘আমার ছেলে মৃত, বিশ্বাস করি না। ওরা কিছু গন্ডগোল করে এখন এ সব বলছে।’’

আজ, শনিবার মর্গে সদ্যোজাতকে দেখানো হবে বলে বাবাকে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বাবুন বলেন, ‘‘যার দেহ দেখাবে, ডিএনএ পরীক্ষা করে প্রমাণ করতে হবে, সে আমারই ছেলে।’’

অধ্যক্ষ শুদ্ধোদন বটব্যালকে ফোনে পাওয়া যায়নি। উপাধ্যক্ষ মানস বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন ধরেননি। এসএনসিইউ বিভাগের প্রধান গোবিন্দচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘শিশুটির শ্বাসকষ্ট ছিল। রক্তে শর্করার পরিমাণ ছিল ৩২। আসা মাত্র ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়।’’ এসএনসিইউ-তে সদ্যোজাতের পরিচয় ছিল ‘আউটবর্ন ১৮’। বিভাগীয় প্রধান জানান, ১৪ জুন দু’দফায় মাইকে ঘোষণা করেও বাবার দেখা মেলেনি। রাত আড়াইটে নাগাদ এক পিজিটি সদ্যোজাতের শারীরিক অবস্থা যে সঙ্কটজনক, তা জানাতে ফোন করেন। কিন্তু ফোন বেজে যায়। পরদিন শিশুটি মারা যেতে ফের মাইকে ডাকা হলেও কেউ আসেননি। তখন দেহ মর্গে পাঠিয়ে পুলিশকে জানানো হয়। এর দিন তিনেক পরে ওই শয্যায় অন্য শিশু ভর্তি হয়। দেবযানী যখন আসেন, তখন সেই শিশুর মা ভেবে তাঁর থেকে বাচ্চার জন্য দুধ নেওয়া হয়। বাবুনের বোনপোকে সেই সদ্যোজাতেরই সুস্থ থাকার খবর দেওয়া হয়েছিল।

R G Kar Hospital Baby Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy