তাঁর কন্যাসন্তানের বয়স মাত্র ১১ দিন। মেয়েকে হাসপাতালে প্রথম বার দেখে তিনি বলেছিলেন, জ্বরের মধ্যে মেয়েকে ধরতে চান না। বাড়ি ফিরে খেলবেন ওর সঙ্গে। তবে সেই ইচ্ছা আর পূরণ হল না বাগুইআটির বাসিন্দা, কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল রুনু বিশ্বাসের (২৮)। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে বুধবার ভোরে বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটেও ডেঙ্গির কথাই উল্লেখ রয়েছে। পাশাপাশি লেখা রয়েছে, ‘সেপটিক শক উইথ মাল্টিঅর্গান ফেলিয়োর’।
মৃতার পরিবার জানিয়েছে, আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা রুনুকে গত ২৫ অক্টোবর ভিআইপি রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই পরদিন ২৬ অক্টোবর এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। তার আগে থেকেই জ্বরে ভুগছিলেন রুনু। অস্ত্রোপচার করে সন্তানের জন্ম দেওয়ার দু’দিনের মাথায় তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। রক্তের প্লেটলেট ৬৫ হাজারে নেমে যায়। এর পরে ২৯ অক্টোবর রুনুকে বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই বুধবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়। তবে সদ্যোজাত সুস্থ রয়েছে বলেই রুনুর পরিবার জানিয়েছে।
পেশায় কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল রুনু আমহার্স্ট স্ট্রিট মহিলা থানায় কর্মরত ছিলেন। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় দুর্গাপুজোর সময় থেকেই ছুটিতে ছিলেন তিনি। রুনুর স্বামী অনুপ সরকারও কলকাতা পুলিশের কর্মী হিসেবে লালবাজারে কর্মরত। তিনি এ দিন সকালে বলেন, ‘‘কী ভাবে, কী হয়ে গেল বুঝতে পারছি না। কয়েক দিন ধরে রুনু জ্বরে ভুগছিল ঠিকই, তবে তার জন্য এ রকম হবে ভাবিনি।’’ অনুপের দাবি, ‘‘এই মৃত্যুর পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। পরবর্তী কালে আমরা এ নিয়ে আইনি পরামর্শ নেব। ভিআইপি রোডের যে হাসপাতালে রুনুকে ভর্তি করানো হয়েছিল তাদের তরফে অনেক গাফিলতি রয়েছে।’’