ক্যানসার আক্রান্তের আয়ু মাত্র ২৫ বছর পর্যন্ত, বলেই দিয়েছিলেন ডাক্তার। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরোনোর দশ বছর পরেও তিনি যে শুধু বেঁচে আছেন তা-ই নয়, ইটালি-সার্ডিনিয়ার দূষণমুক্ত এলাকায় রেকর্ড ভাঙা শৈলারোহণ করে ফেলেছেন ক্যানসার রোগী ক্লাস উইলেমস। তাঁর জীবনে ফেরার কাহিনি নিয়ে তৈরি ২৭ মিনিটের ছবি ‘স্টিল অ্যালাইভ’। মা-বাবার সঙ্গে নরওয়েতে ছুটি কাটাতে গিয়ে ন’বছরের ফ্রেয়া ও পাঁচ বছরের জ্যাকসনের দু’হাজার ফুট উঁচু খাড়াই দেওয়াল বেয়ে পাহাড়ে চড়ার গল্প বলছে সাড়া ফেলে দেওয়া সিনেমা ‘টু পয়েন্ট ফোর’। ‘ইটার্নাল ফ্লেম’ ছবিতে আবার রয়েছে পাকিস্তানের কারাকোরামে গিয়ে ছ’হাজার ফুট উপর থেকে দুই বন্ধুর একসঙ্গে হিমবাহের উপরে ঝাঁপ দেওয়ার রোমহর্ষক মুহূর্ত।
এমনই অ্যাডভেঞ্চার সিনেমার ঝুলি নিয়ে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি শহরের বুকে হতে চলেছে ব্যানফ চলচ্চিত্র উৎসব। মহাজাতি সদনে এক দিনের এই চলচ্চিত্র উৎসবে থাকছে বাছাই করা এমন ১০টি বিদেশি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি, যা দেখতে অনলাইনে টিকিট কেটে ভিড় জমাতেই পারেন আট থেকে আশি। বিপজ্জনক শৈলারোহণ থেকে আগ্নেয়গিরির জ্বলন্ত লাভার সামনে সাইকেল চালানো, দুঃসাহসী প্যারাগ্লাইডিং থেকে কাইটসার্ফিং— কী নেই সেখানে!
১৯৭৬ সাল থেকে কানাডার ব্যানফ শহরে প্রতি বছর পর্বতারোহণ ও অ্যাডভেঞ্চার নিয়ে চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজিত হয়ে থাকে। প্রায় ৩০০টি ছবির মধ্যে থেকে মাত্র কয়েকটিকে বেছে নিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। পরে বছরভর বিশ্বের একাধিক শহরে প্রদর্শিত হয় সেগুলি। এ বছর বেঙ্গালুরু ও মুম্বইয়ের পরে কলকাতায় প্রদর্শিত হতে চলেছে এমনই বাছাই করা ১০টি ছবি। আয়োজনে পর্বতারোহণ সংক্রান্ত সংস্থা ‘দ্য হিমালয়ান ক্লাব’ এবং ‘ড্রিম ওয়ান্ডারলাস্ট’।
শুধুই অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় মানুষদের জন্য নয়, এই চলচ্চিত্র উৎসবে ছোটদেরও আনতে উৎসাহ দিচ্ছেন আয়োজকেরা। আয়োজকদের তরফে নীলাঞ্জন পাত্র বলেন, ‘‘জীবনের অর্থ খুঁজে পেতে, অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার অনুপ্রেরণা পেতে এই ছবিগুলি ছোট-বড় সকলেরই দেখা উচিত। কারণ, প্রতিটি ছবিই প্রতিকূলতাকে জয় করে অসাধারণত্বের গল্প বলে। যে কেউই ছবিগুলি দেখলে উদ্বুদ্ধ হবেন।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)