Advertisement
০৮ মে ২০২৪

ফায়ার অডিট করবে দমকল, রয়েছে প্রশ্নও

মঙ্গলবার ভোরে আগুনে পুড়ে যায় ভবানীপুরের যদুবাবুর বাজারের একটি দোকান। দমকলের তৎপরতায় বড় ধরনের ক্ষতি এ়়ড়ানো গিয়েছে।

দাউদাউ: মঙ্গলবার আগুন লাগে যদুবাবুর বাজারের একটি গুদামে। নিজস্ব চিত্র

দাউদাউ: মঙ্গলবার আগুন লাগে যদুবাবুর বাজারের একটি গুদামে। নিজস্ব চিত্র

শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:০২
Share: Save:

যদুবাবুর বাজারে আগুন লাগার ঘটনার পরে এ বার দমকল বিভাগ পরিকল্পনা করছে শহরের সরকারি ও বেসরকারি বাজারের অবস্থা খতিয়ে দেখতে ‘ফায়ার অডিট’ করা হবে। মঙ্গলবার ভোরে আগুনে পুড়ে যায় ভবানীপুরের যদুবাবুর বাজারের একটি দোকান। দমকলের তৎপরতায় বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানো গিয়েছে। দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর কথায়, ‘‘মানুষের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই ফায়ার অডিটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ এর আগে ‘ফায়ার অডিট’ কখনও করা হয়নি বলেই দাবি দমকল আধিকারিকদের। ওই অডিট পুলিশ, পুরসভা, দমকল, বাজারের ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে করা হবে বলেই জানিয়েছেন দমকলকর্তারা।

দমকল বিভাগের এমন সিদ্ধান্ত ইতিবাচক বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে উঠছে কিছু প্রশ্নও।

২০০৮ সালে নন্দরাম মার্কেটে আগুন লাগে। বাজারের অব্যবস্থা কিংবা জিনিসপত্রে বাজারের প্রবেশ পথগুলি আটকে থাকায় নন্দরাম মার্কেটের আগুন নিভতে সময় লেগেছিল পাঁচ দিন। তার পরে একাধিক বার উত্তর কলকাতার হাতিবাগানে ছোট-বড় আগুন লেগেছে। বাজারের অব্যবস্থা নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষ এবং দমকল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি বাগড়ি মার্কেটেও আগুন লাগার পরে দেখা গিয়েছে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা সেখান মজুত থাকলেও প্রয়োজনীয় সময় তা কাজ করেনি। প্রায় চার দিন সময় লাগে আগুন নিভতে। আমড়াতলা স্ট্রিটের বহুতল বাজারে আগুনের ঘটনাতেও একই অভিযোগ উঠেছিল।

প্রশ্ন উঠেছে, প্রতি বারই বড় আগুনের ঘটনার পরে সরকারি স্তরে বাজার কিংবা বহুতলের অগ্নিবিধি উন্নত করার বিষয়ে একাধিক কমিটি তৈরি করা হয়। কোন জায়গায় অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা কেমন তা খতিয়ে দেখার জন্য একাধিক কমিটি তৈরি করা হয়। তা সত্ত্বেও বাজারগুলির পরিস্থিতি পাল্টায় না কেন?

এমন প্রশ্নের উত্তর নেই কোনও মহলেই। দমকলমন্ত্রী সুজিতবাবু বলেন, ‘‘বাজারগুলির হাল খতিয়ে দেখতে বিভাগীয় আধিকারিকদের সঙ্গে প্রয়োজনে আমিও বাজার পরিদর্শনে যাব।’’

দমকল বিভাগ জানিয়েছে, শহরে সরকারি বাজার রয়েছে ৫৬টি। ছোট বড় বেসরকারি বাজারের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিনশো। কলকাতা পুরসভা জানিয়েছে, বেসরকারি বাজারগুলির অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকলে মালিকদের নোটিস পাঠিয়ে ডাকা হয়।

অভিযোগ, অগ্নি নির্বাপণের বিন্দুমাত্র ব্যবস্থা না থাকা সত্ত্বেও দিব্যি রমরমিয়ে চলছে অসংখ্য সরকারি ও বেসরকারি ছোট-বড় বাজার। শহরের বিভিন্ন বাজারে গেলেই দেখা মিলবে যত্রতত্র ঝুলছে বিদ্যুতের তার। প্লাস্টিক, পলিথিনের মতো সহজদাহ্য জিনিসপত্র।

দমকলের এক কর্তা বলেন,‘‘আগুন নেভাতে গিয়ে প্রতিটি বাজারেই বাধা পেতে হয় দমকলকে। বাজারের ঢোকা বেরোনোর রাস্তা প্রায় বন্ধ থাকে। আগুন নেভাতে সমস্যায় পড়তে হয় দমকলকেই।’’

ফলে দমকলের এই ‘ফায়ার অডিট’ এর পরিকল্পনা আগামী দিনে বাজারগুলিকে কতটা সুশৃঙ্খল অবস্থায় তুলে নিয়ে যাবে সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Audit
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE