খাতায়-কলমে কালীপুজো শেষ হয়ে গিয়েছে তিন দিন আগে। কিন্তু, বাজির দাপটের বিরাম নেই, এমন অভিযোগ উঠছে বার বার। এ বার সেই বাজির ফুলকি থেকে আগুন লেগে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে সেন্ট্রালমেট্রো স্টেশনের কাছে একটি জুতোর কারখানা এবং সেটির লাগোয়া ঘর ভস্মীভূত হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার মাঝরাতে।
চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে রাস্তার উপরেই একটি দোতলা বাড়ির উপরতলায় সপরিবার থাকেন ওই জুতো কারখানার মালিক রাজেন্দ্র দাস। বাড়ির ছাদে টিনের ছাউনি দেওয়া তাঁর ছোট কারখানা। রাজেন্দ্র বলেন, ‘‘বুধবার তখন রাত আড়াইটে মতো হবে। হঠাৎ দেখি, ছাদের টিনের চাল দাউ দাউ করে জ্বলছে। নীচ থেকে অনেকে চিৎকার করছেন, ‘ঘরে আগুন লেগেছে, তাড়াতাড়ি নেমে এসো’ বলে। আমি স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে সরু সিঁড়ি দিয়ে কোনও মতে নেমে আসি।’’
রাজেন্দ্রর স্ত্রী মঞ্জু বলেন, ‘‘ফুটপাতে বেশ কয়েক জন সেই সময়ে শুয়ে ছিলেন। তাঁরা জানান, ওই রাস্তা দিয়ে কালীপুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রা যাচ্ছিল।সঙ্গে ফাটছিল বাজি। আচমকাই সেই বাজির ফুলকি আমাদের বাড়ির চালে এসে পড়ে। কিছু ক্ষণ পরেই দেখি, চার দিক ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে। কিছু মানুষের আনন্দের কারণে আমরা তো সব হারালাম।’’
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, পরিবারের লোকজনকে নিয়ে ফুটপাতে বসে আছেন রাজেন্দ্র। তাঁর সঙ্গে থাকা একটি খাঁচায় রয়েছে দু’টি খরগোশ। দোতলায় কারখানার যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে জুতো,রাজেন্দ্রর ঘরের জিনিস— সর্বস্ব পুড়ে ছাই। রাজেন্দ্র বলেন, ‘‘কিছুই প্রায় বাঁচাতে পারিনি। নীচে নামার সময়ে শুধু পোষা খরগোশ দুটোকে আনতে পেরেছি।’’
দমকলকর্মীরা জানান, সাতটি ইঞ্জিন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আগুন যে ভাবে জ্বলছিল, তাতে তা আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে বড় বিপদ হতে পারত।
অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার সকাল আটটা নাগাদ আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার উল্টো দিকে পর পর কয়েকটি দোকানে আগুন লেগে চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে একটি ফাঁকা দোকানঘরে আগুন লাগে। তা ছড়িয়ে পড়ে পাশের কয়েকটি দোকানে। আগুনে পুড়ে গিয়েছে একটি মুদির দোকান। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি ছাপাখানাও। তবে হতাহতের খবর নেই। দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)