Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
রবীন্দ্র সরোবর

শ্যাওলা জমে অক্সিজেনের অভাব, তাতেই মৃত্যু মাছের

থাকার কথা ছিল টলটলে জল। তার পরিবর্তে কোথাও কালো, কোথাও বা জলের রং সবুজ। পাড়ে, জলের তলাতেও ডাঁই হয়ে রয়েছে গাছের পাতা, ডাল। রয়েছে প্রচুর শ্যাওলা।

কৌশিক ঘোষ
শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ০৭:২৫
Share: Save:

থাকার কথা ছিল টলটলে জল। তার পরিবর্তে কোথাও কালো, কোথাও বা জলের রং সবুজ। পাড়ে, জলের তলাতেও ডাঁই হয়ে রয়েছে গাছের পাতা, ডাল। রয়েছে প্রচুর শ্যাওলা। আর এই শ্যাওলা জমে যাওয়ার জন্যই জলে অক্সিজেন কমে গিয়ে প্রচুর সংখ্যক মাছ মারা গিয়েছে রবীন্দ্র সরোবরে। সরোবরের জলের নমুনা পরীক্ষা করার পরে এমনটাই রিপোর্ট দিল মৎস্য দফতর।

মৎস্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, জলে শ্যাওলার পরিমাণ বেশি থাকলে অক্সিজেনের অভাব ঘটে। ফলে যে পরিমাণ অক্সিজেন মাছেদের পাওয়ার কথা তা তারা পাচ্ছে না। প্রাথমিক ভাবে এই কারণেই মাছ মারা গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে আর কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা নিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছে মৎস্য দফতর।

গত বৃহস্পতিবার সকালে রবীন্দ্র সরোবরের পূর্ব দিকে ঢাকুরিয়ার কাছে জলে প্রচুর পরিমাণে মৃত মাছ ভেসে উঠতে দেখা যায়। এর পরে কলকাতা উন্নয়ন পর্ষদ (কেআইটি) বিষয়টি রাজ্য মৎস্য দফতরকে জানায়। মৎস্য দফতরের আধিকারিকেরা সরোবরের আটটি জায়গা থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করেন। বুধবার তাঁরা কেআইটি কর্তৃপক্ষকে তাঁদের রিপোর্ট জমা দেন।

জলে বেশি শ্যাওলা থাকলে কী ভাবে মাছের ক্ষতি হয়? উদ্ভিদ বিদ্যার শিক্ষক শমিত রায় বলেন, ‘‘জলে শ্যাওলার মাত্রা বেশি হয়ে গেলে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। কারণ শ্যাওলাও অক্সিজেন নেয়। সে ক্ষেত্রে মাছেদের অক্সিজেনে টান পড়ে। আর রাতে স্বাভাবিক ভাবেই কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যায়। সেই থেকে মাছ মারা যেতে পারে। এ ছাড়া, শ্যাওলা মাছেদের খাবার। অনেক সময়ে বিষাক্ত শ্যাওলা খেয়েও মাছ মারা যায়।’’ তবে, রবীন্দ্র সরোবরে কী ধরনের শ্যাওলা রয়েছে তা পরিদর্শন না করে বলা সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।

অন্য দিকে, মৎস্য বিশেষজ্ঞ সুমিত হোমচৌধুরী বলেন, ‘‘রবীন্দ্র সরোবরের জলে অক্সিজেনের অভাবেই মাছ মারা গিয়েছে। প্রচুর শ্যাওলা থাকলে এ ধরনের ঘটনা হতে পারে। তবে মাছ মারা যাওয়ার সময়ে সে দিন ঠিক কী হয়েছিল, তা পরীক্ষা করা দরকার।’’

সুমিতবাবুর মতে, জল পরিষ্কার করে শ্যাওলা সরানো যেতে পারে। তবে তা খরচ সাপেক্ষ। তাই শ্যাওলার বাড়বাড়ন্ত আটকাতে প্রচুর সংখ্যক রুই মাছ ছাড়া দরকার। কারণ রুই মাছ শ্যাওলা খায়। ইতিমধ্যে মৎস্য দফতর থেকে কেআইটি-কে রবীন্দ্র সরোবর থেকে মৃত মাছ সরানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরোবরের জলের দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রোবায়োটিক ট্রিটমেন্টের ব্যাপারেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কেআইটি কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, মৎস্য দফতরের নিয়ম মেনেই জলে চুন ও পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, প্রোবায়োটিক প্রয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েই কাজ করা হবে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fish pond oxygen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE