Advertisement
E-Paper

মৌমাছি-দলের হাতে ঘেরাও বিমান

কলকাতা বিমানবন্দরে মৌমাছির আক্রমণ এই প্রথম নয়। এর আগেও দাঁড়িয়ে থাকা বিমানের চার পাশে দল বেঁধে ভনভন করে আক্রমণ হেনেছে তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪৮
আটকে: মৌমাছির আক্রমণে উড়তে বিলম্ব হল এই বিমানেরই। রবিবার, কলকাতা বিমানবন্দরে। নিজস্ব চিত্র

আটকে: মৌমাছির আক্রমণে উড়তে বিলম্ব হল এই বিমানেরই। রবিবার, কলকাতা বিমানবন্দরে। নিজস্ব চিত্র

মৌমাছির জ্বালায় বিমান ছাড়তে দেরি হয়ে গেল এক ঘণ্টারও বেশি। ককপিটের সামনের কাচে জাঁকিয়ে বসেছিল মৌমাছির দল। ওই অবস্থায় উড়তে গেলে বিপদ হতে পারত। প্রচণ্ড গতিতে থাকা বিমানের ইঞ্জিনে কোনও ভাবে মৌমাছি ঢুকে গেলে বন্ধ হয়ে যেতে পারত ইঞ্জিন।

কলকাতা বিমানবন্দরে মৌমাছির আক্রমণ এই প্রথম নয়। এর আগেও দাঁড়িয়ে থাকা বিমানের চার পাশে দল বেঁধে ভনভন করে আক্রমণ হেনেছে তারা। রবিবার সকালে এয়ার ইন্ডিয়ার এয়ারবাস ৩১৯-এর সামনে থেকে মৌমাছিদের তাড়াতে শেষ পর্যন্ত দমকলের শরণাপন্ন হতে হয় বিমান সংস্থাকে। প্রচণ্ড গতিতে জল ছিটিয়ে সেই মৌমাছি তাড়িয়ে তবে বিমান ছাড়ে।

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ১৩৬ জন যাত্রী নিয়ে এ দিন সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটির আগরতলা যাওয়ার কথা ছিল। ওই বিমানে দলবল নিয়ে আগরতলা যাচ্ছিলেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। প্রথমে ছাড়ার পরে বিমানটি একটু এগিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। জানা যায়, সেটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে। ওখানে দাঁড়িয়েই ইঞ্জিনিয়ারদের ডেকে তা সারানোর কাজ শুরু হয়।

বাংলাদেশের মন্ত্রীর সঙ্গী-দলের সদস্য মোফাখখারুল ইকবালের অভিযোগ, একটু পরে বিমানটি আবার গড়াতে শুরু করে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা ভাবলাম, এ বার উড়বে। কিন্তু, একটু দূরে গিয়ে বিমান আবার দাঁড়িয়ে যায়। আবার বলা হয়, যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে।’’ এ বারও ফের সারানোর কাজ শুরু হয়। সেই সময়ে উড়ান সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে চান মন্ত্রী। মন্ত্রীর বার্তা পেয়ে এক আধিকারিক বিমানে এসে পৌঁছন। মোফাখখারুল জানিয়েছেন, বিকল্প বিমানের ব্যবস্থা করতে বলায় ওই আধিকারিক বলেন, তাঁদের হাতে অতিরিক্ত বিমান নেই। তিনি নেমে গেলে আবার বিমানের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। মোফাখখারুলের অভিযোগ, ‘‘এতক্ষণ যে বিমানে বসেছিলাম, আমাদের এক কাপ চা পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।’’

আরও কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করার পরে মন্ত্রী ও তাঁর সঙ্গীরা অন্য বিমানে আগরতলা যেতে চান। সে সময়ে বিমানের দরজা বন্ধ ছিল। তখন দরজা খুলতে গিয়ে দেখা যায়, বাইরে মৌমাছির চাক উড়ে বেড়াচ্ছে। দরজা খুললে মৌমাছি বিমানের ভিতরে ঢুকে পড়লে বিপদ হতে পারত বলে জানানো হয় উড়ান সংস্থার তরফে। সংস্থার এক কর্মীর কথায়, যাত্রী ভর্তি বিমানে মৌমাছি ঢুকে কাউকে কামড়ে দিতে পারত। তা ছাড়া, বিমানের ভিতরে ঢুকে পড়া মৌমাছিদের মারতেও সমস্যা হত। সে ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী কীটনাশক ছড়িয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হত এবং যাত্রীদের নামিয়ে দিতে হত। ফলে, এ দিন আগরতলার ওই উড়ানের বিমানসেবিকারা বাংলাদেশের মন্ত্রীকে জানান, ওই অবস্থায় বিমানের দরজা খোলা সম্ভব নয়। খানিকটা নিরুপায় হয়ে মন্ত্রী ও তাঁর সঙ্গীরা বিমানেই অপেক্ষা করতে থাকেন। শেষমেশ এয়ার ইন্ডিয়ার কাছ থেকে খবর পেয়ে বিমানবন্দরের দমকলবাহিনী এসে জল ছুড়তে শুরু করে। ১২টা ৪৫ পর্যন্ত চলে মৌমাছি তাড়ানোর কাজ। ১২ টা ৫০ মিনিটে বিমানটি অবশেষে যাত্রীদের নিয়ে উড়ে যায়।

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, প্রধানত বিমানের সিঁড়ির নীচে, এরোব্রিজের তলায় মৌমাছির দল চাক বেঁধে থাকে। যখন বিষয়টি নজরে আসে, তখন বিমানবন্দরের ‘পেস্ট কন্ট্রোল’ ইউনিটকে ডেকে আনা হয়। তাঁদের কর্মীরা ওষুধ দিয়ে মৌমাছি তাড়িয়ে দেন। কিন্তু, এ দিন মৌমাছির দল অত উঁচুতে বিমানের ককপিটের বাইরে চড়ে বসায় বাধ্য হয়ে ডাকতে হয় দমকলকে।

Kolkata Airport Bee Airbus319 Air India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy