Advertisement
E-Paper

সফটওয়্যার চেয়ে ই-মেল ফেরারি কর্তাদের

ফরেন্সিক তদন্তকারীদের কথায়, ওই মডেলের গাড়ির স্টিয়ারিংয়ের তলায় একটি ‘মডিউল’ থাকে। ওই মডিউলে দুর্ঘটনার আগের পাঁচ মিনিট পর্যন্ত গাড়ির নানা কার্যকলাপ ধরা পড়ে।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৮ ০২:১৬

দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে ফেরারি গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থার দ্বারস্থ হলেন ফরেন্সিক তদন্তকারীরা।

রবিবার সকালে ডোমজুড়ের পাকুড়িয়া সেতুর কাছে ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে ক্যালিফোর্নিয়া-টি মডেলের ফেরারির মালিক তথা চালক শিবাজী রায়ের মৃত্যু হয়। পাশের আসনে বসা বন্ধু-কন্যা আসনা সুরানা গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ফরেন্সিক তদন্তকারীদের কথায়, ওই মডেলের গাড়ির স্টিয়ারিংয়ের তলায় একটি ‘মডিউল’ থাকে। ওই মডিউলে দুর্ঘটনার আগের পাঁচ মিনিট পর্যন্ত গাড়ির নানা কার্যকলাপ ধরা পড়ে। মডিউলটি খুলতে ‘সিডিআর’ (ক্রাস ডেটা রিভাইবার) প্রস্তুতকারক সংস্থার একটি সফটওয়্যার রয়েছে। ওই সফটওয়্যারটি ফেরারি সংস্থার কাছ থেকে চেয়ে ই-মেল করা হয়েছে। ওই গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা তা দিতে রাজিও হয়েছে। মডিউলটি খোলার পরেই দুর্ঘটনার কারণগুলি স্পষ্ট হবে। ফেরারি সংস্থা ওই সফটওয়্যারটি কয়েক দিনের মধ্যেই পাঠিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

মডিউল খোলার পরে কী কী বিষয় স্পষ্ট হতে পারে? ওই গাড়িটি ঠিক কত গতিবেগে চলছিল। দুর্ঘটনার আগে গাড়িটি কোনও বাঁক নিয়েছিল কি না। গাড়ির ভর ও গতিবেগের ভারসাম্য ঠিক ছিল কি না— এ বিষয়ে তথ্য পেতে পারেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা।

সোমবার ডোমজুড় থানায় ওই গাড়িটির থেকে নানা নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেন্সিক তদন্তকারীরা। তাঁরা ঘটনাস্থলও পরিদর্শন করেন। তদন্তকারীদের কথায়, রক্ত পরীক্ষা এবং ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী শিবাজী কোনও ভাবেই অপ্রকৃতিস্থ ছিলেন না, তা প্রমাণ হয়েছে। এর পরেই দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। এক তদন্তকারী জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে দু’টি বিষয়ের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এক, দুর্ঘটনার কারণ। দুই, পাশাপাশি বসে থাকা সত্ত্বেও আসনার শরীরের উপরের অংশের জখম তেমন গুরুতর নয়, অথচ শিবাজীর শরীরে আঘাত ছিল মারাত্মক রকমের বেশি।

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই মডেলের গাড়ির গতিবেগের তিনটি পর্যায় রয়েছে। এক, কমফোর্ট জোন, দুই, স্পোর্টস জোন ও তিন, ওনার্স চয়েস। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার দিন শিবাজী কমফোর্ট জোনেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ওই জোনে সর্বাধিক গতিবেগ ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার। তবে প্রাথমিক ভাবে ১৩০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার গতিবেগে গাড়িটি চলছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থলের প্রায় ২৫০ ফুট আগে এক বার ব্রেক মারা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। আরও ১৭০ ফুট জায়গা থাকলে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হত বলে মনে করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে রাস্তায় কোনও বাধা এসেছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তদন্তকারীদের কথায়, ওই গাড়িটির সামনের অংশে চারটি এয়ারব্যাগ ছিল। চালকের ডান দিকের, স্টিয়ারিংয়ের এবং ড্যাশ বোর্ডের এয়ারব্যাগ তিনটি খুলে যায়। কিন্তু আসনার বাঁ দিকের এয়ারব্যাগটি খোলেনি। তা সত্ত্বেও শিবাজীর দেহ প্রায় থেঁতলে গেলেও তুলনায় আসনার চোট ততটা গুরুতর নয়। ফরেন্সিক তদন্তকারীদের ব্যাখা, শিবাজীর দিকের এয়ারব্যাগ সরে আসনার দিকে চলে এসেছিল। সেই কারণে ঘণ্টায় প্রায় ১৩০ কিমি গতিবেগে ধাক্কা মারার পরেও শিবাজীর এয়ারব্যাগটিই আসনাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। ফরেন্সিক দলের এক কর্তা জানাচ্ছেন, ফেরারির সফটওয়্যার পাওয়ার পরেই সব স্পষ্ট হবে। ওই সফটওয়্যার হাতে এলে পাঁচ থেকে সাত দিন ধরে নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করার পরে দুর্ঘটনার কারণ সামনে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Ferrari company CDR software Police Forensic investigators
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy