প্রতীকী ছবি।
সৎমেয়েকে লাগাতার ধর্ষণ ও যৌন নিগ্রহের অপরাধে এক ব্যক্তিকে ৪০ বছর কারাবাসের সাজা দিল শিয়ালদহ আদালত। শুক্রবার অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারক (১) চিন্ময় চট্টোপাধ্যায় এই রায় দিয়েছেন। এই মামলার সরকারি কৌঁসুলি উত্তম ঘোষ জানান, দোষী ব্যক্তিকে কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। নিগৃহীতা কিশোরীকে তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পকসো মামলায় আগে যাবজ্জীবন ও ২০ বছরের জেল হয়েছে। কিন্তু ৪০ বছর কারাবাসের সাজা এ রাজ্য তো বটেই, গোটা দেশেও বিরল বলে দাবি করেছেন আইনজীবীদের অনেকে। উত্তমবাবু জানান, শিশুদের ধর্ষণের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন সাজা ২০ বছর কারাবাস। তা ছাড়া, আমৃত্যু কারাবাস ও মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে। এ দিন আদালতের পর্যবেক্ষণ, যে বাবার কাছে শিশুর স্নেহ-ভালবাসা পাওয়ার কথা, সেই বাবার তরফে এমন নিষ্ঠুর নির্যাতন ঘৃণ্যতম অপরাধ।
এই মামলায় বিচার প্রক্রিয়াও অত্যন্ত দ্রুত শেষ হয়েছে। সূত্রের খবর, ২৩ জুলাই এফআইআর রুজু করা হয়েছিল। কলকাতা পুলিশের এসআই অণিমা বিশ্বাস অগস্টে চার্জশিট জমা দেন। মোট ১৩ জন সাক্ষীর বয়ান নেওয়া হয়। আসামিকে হেফাজতে রেখেই গোটা বিচার প্রক্রিয়া হয়েছে বলে সরকারি কৌঁসুলি জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, নিগৃহীতা কিশোরী পার্ক সার্কাস এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা মারা যাওয়ার পরে মা দ্বিতীয় বার বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু ২০১৮ সাল নাগাদ তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে যান। তখন থেকেই তার সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক শুরু করে তার সৎবাবা। পুলিশকে কিশোরী জানিয়েছে, সে আপত্তি করলে মারধর করে আটকে রাখা হত। চলতি বছরের জুলাইয়ে কিশোরী ঘটনাটি সবাইকে জানানোর কথা বললে তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দেয় ওই ব্যক্তি। তার পরেই কিশোরী স্থানীয় এক ব্যক্তিকে ঘটনার কথা জানায়। তিনি কিশোরীকে থানায় নিয়ে যান।
পুলিশ সূত্রের দাবি, অভিযোগ নথিভুক্ত করার পরে কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছিল। তাতে নিয়মিত ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। কিশোরী এবং আসামির জামাকাপড় ও দেহরসের নমুনা সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছিল। কেন্দ্রীয় ল্যাবরেটরির দুই বিজ্ঞানী আদালতে সাক্ষ্যও দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy